
২০২৫ সালের একেবারে শেষ লগ্নে এসে বড় ধামাকা। ভারতীয় সেনার আধুনিকীকরণে প্রায় ৭৯,০০০ কোটি টাকার অস্ত্র কেনায় সবুজ সংকেত দিল কেন্দ্র। এর সিংহভাগই খরচ হবে সেনার ‘ফায়ারপাওয়ার’ বা আগ্রাসী ক্ষমতা বাড়াতে। চিন বা পাকিস্তান সীমান্ত, দুটি ফ্রন্টেই এই দারুণ প্রভাব ফেলবে নতুন রণসজ্জা।
দেশীয় প্রযুক্তির এই জয়োল্লাসে সবচেয়ে বড় বিষয় হল, এই বিপুল অঙ্কের কেনাকাটায় জোর দেওয়া হয়েছে দেশীয় প্রযুক্তির ওপর। দেশীয় প্রযুক্তির অস্ত্র কেনার ক্ষেত্রে টাটা, ভারত ফোর্জ এবং এল অ্যান্ড টি-র মতো সংস্থার ওপর ভরসা রাখছে কেন্দ্রীয় সরকার। আর এখানেই প্রশ্ন উঠছে, বিদেশ থেকে আমদানির দিন কি তবে শেষ?
অপারেশন সিঁদুরের পর ভারতীয় সেনাবাহিনী নজর দিয়েছিল তাদের শক্তি বৃদ্ধিতে। আর সেখানেই বাজি মারতে তৈরি ডিআরডিও-র ‘অ্যাটাকস’ (ATAGS) গান সিস্টেম। ১৫৫ এমএম/৫২ ক্যালিবারের এই কামান ৪৮ কিলোমিটার পর্যন্ত নিখুঁত লক্ষ্যে আঘাত হানতে পারে। এতদিন সীমান্তে যে দূরপাল্লার কামানের অভাব বোধ করা হচ্ছিল, তা এবার মিটবে। পাশাপাশি মেকানাইজড ইনফ্যান্ট্রির জন্য আসছে আরও ‘কে-৯ বজ্র’, যা যে কোনও ধরনের ভূমির উপর দিয়ে দ্রুত নিয়ে যাওয়া যায়।
শত্রুর বাঙ্কার ও সাঁজোয়া গাড়ি ধ্বংস করতে আসছে পিনাকা রকেট সিস্টেমের আপগ্রেডেড ভার্সন। পিনাকার নতুন রেঞ্জ হতে পারে প্রায় ১২০ কিমি। এর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে ‘ইনভার’ (INVAR) অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক মিসাইল, যা ৫ কিমি দূর থেকে ট্যাঙ্কের বর্ম ভেদ করতে পারে।
ড্রোন বিপ্লব বিশ্বযুদ্ধের নতুন ট্রেন্ড মেনে ড্রোন টেকনোলজিতেও বিরাট বিনিয়োগ করা হচ্ছে। সার্ভিলেন্স ড্রোনের পাশাপাশি আসছে ‘লোয়টারিং মিউনিশন’ বা কামিকাজে ড্রোন। যে ধরনের ড্রোন নিজেই গিয়ে শত্রুর ওপর আছড়ে পড়বে।
রণকৌশল বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ৭৯ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ কেবল সংখ্যার খেলা নয়। এটি কৌশলগত দিক দিয়ে বিরাট বড় এক বার্তা। সীমান্তে শান্তি বজায় রাখতে হলে যে নিজের পেশি শক্ত করা প্রয়োজন, ভারত সেটাই বুঝিয়ে দিল। আগামী দিনে এই দেশীয় অস্ত্রই হতে চলেছে ভারতীয় সেনার মেরুদণ্ড।