USA: আমেরিকায় ৫ ধনকুবের ভারতীয় ভাইয়ের দ্বন্দ্ব! মিটল ২১,০০০ কোটি টাকায়

USA: দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার ১৭,০০০ ভবন-সহ তাদের যে বিশাল রিয়েল এস্টেট সাম্রাজ্য রয়েছে, তারও ভাগ ভাইদের দিতে হবে হরিশ জোগানিকে। এই রিয়েল এস্টেট সম্পত্তির মূল্যও আরও একশো কোটি মার্কিন ডলার হবে। আদালত বলেছে, ব্যবসায় তাঁর ভাইদের যে অংশীদারিত্ব ছিল, তা লঙ্ঘন করেছেন হরিশ।

USA: আমেরিকায় ৫ ধনকুবের ভারতীয় ভাইয়ের দ্বন্দ্ব! মিটল ২১,০০০ কোটি টাকায়
প্রতীকী ছবিImage Credit source: TV9 Bangla
Follow Us:
| Updated on: Mar 02, 2024 | 3:19 PM

লস অ্যাঞ্জেলেস: কয়েকশো কোটি ডলারের সম্পত্তি নিয়ে পাঁচ ভারতীয় ভাইয়ের বিবাদ! সাড়া পড়ে গিয়েছে মার্কিন মুলুকে। হিরের ব্যবসা এবং লস অ্যাঞ্জেলেস শহরে রিয়েল এস্টেট ব্য়বসার ভাগ নিয়ে ২১ বছর ধরে চলেছে আইনি লড়াই। শেষে, চলতি সপ্তাহে বড় ভাই হরিশ জোগানিকে মার্কিন আদালত, তাঁর চার ভাই – শশীকান্ত, রাজেশ, চেতন এবং শৈলেশ জোগানিকে ২৫০ কোটি মার্কিন ডলার বা ২০,০০০ কোটি টাকারও বেশি ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। একইসঙ্গে, দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার ১৭,০০০ ভবন-সহ তাদের যে বিশাল রিয়েল এস্টেট সাম্রাজ্য রয়েছে, তারও ভাগ ভাইদের দিতে হবে হরিশ জোগানিকে। এই রিয়েল এস্টেট সম্পত্তির মূল্যও আরও একশো কোটি মার্কিন ডলার হবে। আদালত বলেছে, ব্যবসায় তাঁর ভাইদের যে অংশীদারিত্ব ছিল, তা লঙ্ঘন করেছেন হরিশ।

জোগানিরা আদতে ভারতের গুজরাটের বাসিন্দা। তবে, ইউরোপ, আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আমেরিকা জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে তাঁদের হিরে সাম্রাজ্য। ১৯৬৯ সালে, মাত্র ২২ বছর বয়সে আমেরিকায় ক্যালিফোর্নিয়ায় পাড়ি দিয়েছিলেন শশীকান্ত জোগানি। সেখানে একা হাতে রত্ন ব্যবসা শুরু করেছিলেন তিনি। কিন্তু গত শতাব্দীর নয়ের দশকের প্রথম দিকে, সেই ব্যবসায় মন্দা দেখা দিয়েছিল। শশী তাঁর ভাইদের শরণাপন্ন হয়েছিলেন। তাঁদের অংশীদার হিসেবে তাঁর ব্যবসায় যোগ করেন। এরপর, পাঁচ ভাই মিলে রিয়েল এস্টেট ব্যবসায় মন দেয়। ধীরে ধীরে, ক্যালিফোর্নিয়ায় প্রায় ১৭,০০০ অ্যাপার্টমেন্ট তাঁদের সংস্থার হাতে আসে। জোগানিদের হিরে এবং রিয়েল এস্টেটের ব্যবসা দুর্দান্তভাবে দৌড়চ্ছিল। কিন্তু আচমকা, হরিশ জোগানি তাঁর ভাইদের জোর করে তাদের ব্যবসায়িক ফার্মের পরিচালন বোর্ড থেকে সরিয়ে দেন বলে অভিযোগ। কাউকে একটা পয়সাও দিতে রাজি হননি তিনি।

২০০৩ সালে হরিশ জোগানি বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন তাঁর বাকি ভাইরা। মার্কিন আদালতে হরিশ দাবি করেছিলেন, তাদের মধ্যে কোনও লিখিত চুক্তি ছিল না। তাই, তাঁর ভাইদের কাছে সংস্থায় অংশীদারিত্বের কোনও প্রমাণ নেই। কিন্তু জুরিরা পর্যবেক্ষণ করেন, হরিশ মৌখিক চুক্তি ভঙ্গ করেছেন। সাক্ষ্য গ্রহণের সময় জানা যায়, হিরে ব্যবসা এবং গুজরাটি সম্প্রদায়ের মধ্যে এই মৌখিক চুক্তি প্রচলিত আছে। আইন অনুযায়ী, তাদের কাছে মৌখিক চুক্তির মূল্য লিখিত চুক্তির সমান। শুনানির শেষ পর্বে, বিচারককেই অযোগ্য প্রমাণ করার চেষ্টা করেছিলেন হরিশ। অভিযোগ করেছিলেন, বিচারক তাঁর আইনজীবীর প্রতি সাম্প্রদায়িক বৈষম্যমূলক আচরণ করেছেন। কিন্তু, গত সপ্তাহেই তাঁর এই অভিযোগ ভুল বলে প্রমাণ হয়।

এরপরই বিচারক জানান, হিরে ব্যবসার অংশীদারিত্ব লঙ্ঘনের জন্য হরিশকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। তাঁর ভাই চেতন এবং রাজেশকে ১৬ কোটি ৫০ লক্ষ মার্কিন ডলার দিতে হবে। শশীকে দিতে হবে ১৮০ কোটি মার্কিন ডলার। বিলিয়ন। আর রিয়েল এস্টেট ব্যবসার অংশীদারিত্ব লঙ্ঘনের জন্য চেতনকে ২৩ কোটি ৪০ লক্ষ মার্কিন ডলার আর রাজেশকে ৩৬ কোটি মার্কিন জলার ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। আদালত আরও বলেছে, রিয়েল এস্টেট ব্যবসার ৫০ শতাংশের মালিক শশী। এই ব্যবসার ২৪ শতাংশের মালিক হবে হরিশ, ১০ শতাংশের রাজেশ, ৯.৫ শতাংশের শৈলেশ এবং ৬.৫ শতাংশের মালিক হবে চেতন।