LAKME: টাটা না থাকলে ঘরেই পৌঁছত না, জানেন কেন নাম রাখা হয়েছিল LAKME?
LAKME Brand: ভারতের সেরা প্রসাধনী ব্র্যান্ডগুলির মধ্যে অন্যতম ব্রান্ড ল্যাকমে। আজ সবাই ল্যাকমেকে চেনে, জানেন কি এই প্রসাধনী ব্রান্ডের পথ চলা কীভাবে শুরু হয়েছিল? এর সঙ্গে রয়েছে জওহরলাল নেহরু ও জেআরডি টাটার বিশেষ যোগ।

নয়া দিল্লি: বিয়ে হোক বা পার্টি কিংবা রোজকার সাজ, প্রতিটা দিনকেই বিশেষ করে তোলে ল্যাকমে। বছরের পর বছর ধরে ভারতীয় মহিলাদের মনে রাজত্ব করে চলেছে ল্যাকমে। ভারতের সেরা প্রসাধনী ব্র্যান্ডগুলির মধ্যে অন্যতম ব্রান্ড ল্যাকমে। আজ সবাই ল্যাকমেকে চেনে, জানেন কি এই প্রসাধনী ব্রান্ডের পথ চলা কীভাবে শুরু হয়েছিল? এর সঙ্গে রয়েছে জওহরলাল নেহরু ও জেআরডি টাটার বিশেষ যোগ।
১৯৫০-র দশক। স্বাধীনতার পরে দেশের অর্থনীতির অবস্থা খুব একটা ভাল ছিল না। তবে ব্রিটিশ মহিলাদের সাজসজ্জা দেখে প্রসাধনী সামগ্রী নিয়ে ভারতীয় মহিলাদের মধ্যেও একটা ধারণা তৈরি হয়েছিল। উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্ত মহিলারা পশ্চিমী দেশ থেকে মেকআপ সামগ্রী আমদানি করছিল। দেশের অর্থনীতির অবস্থা যখন খারাপ, তখন এভাবে দেশের বাইরে টাকা চলে যাওয়ায় চিন্তিত হয়ে পড়েন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু। তিনি তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু জেআরডি টাটাকে এই সমস্যার সমাধান খুঁজতে বলেন।
জেআরডি টাটা-কে অনুরোধ করেন যে এমন একটি ব্রান্ড তৈরি করতে, যা কম দামে ভাল প্রসাধনী সামগ্রী দেবে। তখন টাটা গ্রুপ ল্যাকমে ব্রান্ড গড়ার সিদ্ধান্ত নেয়। ল্যাকমেতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন সিমোন টাটা।
১৯৫২ সালে টাটা অয়েল মিলসের একটি সহায়ক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ল্যাকমে-র পথ চলা শুরু হয়েছিল। ১৯৬১ সালে নেভাল টাটার স্ত্রী সিমোন টাটা এই সংস্থার শীর্ষ পদে বসেন। ১৯৮২ সালে তিনি ল্যাকমে-র চেয়ারপার্সন হন।
সিমোন ইউরোপিয়ান হলেও তিনি জানতেন ভারতীয় ত্বক এবং স্টাইলের জন্য কী করতে হবে। তাঁর এই জ্ঞান এবং স্টাইলই ল্যাকমেকে প্রতিটি ঘরে পরিচিত নাম করে তুলেছিল। তিনি কর্পোরেট জগতের “রানি” হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন এবং বিশ্বে ছাপ ফেলেন।
১৯৯৬ সালে, টাটা ২০০ কোটি টাকায় ল্যাকমেকে হিন্দুস্তান ইউনিলিভারের কাছে বিক্রি করে। ইউনিলিভারের বিশ্বব্যাপী অভিজ্ঞতা ল্যাকমের জন্য গেম-চেঞ্জারে পরিণত হয়েছিল। ২০১৪ সালে ল্যাকমে ব্র্যান্ড ট্রাস্ট রিপোর্টে ৩৬ তম স্থানে ছিল।
ল্যাকমে নামের গল্প-
ল্যাকমে ব্র্যান্ডটি বিশেষ হওয়ার পাশাপাশি, তার নামের পিছনেও বিশেষ কাহিনি রয়েছে। জেআরডি টাটা চেয়েছিলেন প্রসাধনী ব্রান্ডটির নাম ভারতীয় হোক। এমন কিছু নাম হোক, যা ভারতীয় মহিলাদের মনে গেঁথে থাকবে। সম্পদের দেবী লক্ষ্মীর নামানুসারে এর নামকরণ করতে চেয়েছিলেন। তবে ফরাসি অংশীদাররাও নামকরণ করতে চেয়েছিল। এই পরিস্থিতিতে, ব্র্যান্ডের নামটি প্যারিসের একটি বিখ্যাত অপেরা দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে ল্যাকমে রাখা হয়।
স্ট্যাটিস্টা ওয়েবসাইট অনুসারে, ২০২৩ সালে ল্যাকমের আয় ছিল ৩ বিলিয়ন টাকারও বেশি, যা গত বছরের তুলনায় ১৯ শতাংশ বেশি। সারা দেশে ল্যাকমের ৪০০ টিরও বেশি স্টোর রয়েছে। ১২৫টি শহরে ল্যাকমের সেলুন অবস্থিত।

