Ratan Tata: ‘মন্ত্রীকে ১৫০ কোটি দিয়ে দাও…’, ঘুষের পরামর্শে কী জবাব ছিল রতন টাটার?
Ratan Tata: ব্যবসা করলে কখনও কখনও বাঁকা পথেও চলতে হয় বলেই মনে করা হয়। কিন্তু, রতন টাটার সততা নিয়ে কখনও প্রশ্ন ওঠেনি। তাঁকে ঘুষ দিয়ে এক ব্যবসায়িক চুক্তি আদায় করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন অপর এক শিল্পপতি। তাকে কী জবাব দিয়েছিলেন রতন টাটা জানেন?
মুম্বই: গত ৯ অক্টোবর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন শিল্পপতি রতন টাটা। প্রয়াণের পরও তাঁকে নিয়ে চর্চা থামছে না, এমনই এক বিরাট ব্যক্তিত্ব ছিলেন টাটা সন্সের প্রাক্তন চেয়ারম্যান। বিপুল সম্পত্তির মালিক হয়েও, বাহুল্য বর্জিত এক জীবন ছিল তাঁর। বিলাসবহুল পণ্যের পিছনে খরচ না করে, তিনি তাঁর সম্পত্তি অকাতরে দান করেছেন স্বাস্থ্য পরিষেবা, শিক্ষা, গ্রামণোন্নয়ন, সামাজিক কল্যাণমূলক উদ্যোগে। জনহিতকর কাজে তাঁর দানের পরিমাণ ৯,০০০ কোটি টাকারও বেশি। এর পাশাপাশি রতন টাটা পরিচিত তাঁর স্বচ্ছ ভাবমূর্তির জন্যও। ব্যবসা করলে কখনও কখনও বাঁকা পথেও চলতে হয় বলেই মনে করা হয়। কিন্তু, রতন টাটার সততা নিয়ে কখনও প্রশ্ন ওঠেনি। তাঁকে ঘুষ দিয়ে এক ব্যবসায়িক চুক্তি আদায় করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন অপর এক শিল্পপতি। তাকে কী জবাব দিয়েছিলেন রতন টাটা জানেন?
২০১০ সালে এনডিটিভি-কে একটি সাক্ষাত্কার দিয়েছিলেন রতন টাটা। সেখানেই তিনি এই ঘুষ কাহিনি ফাঁস করেছিলেন। রতন টাটা জানিয়েছিলেন, একটি ব্যবসায়িক চুক্তি নিশ্চিত করতে, এক মন্ত্রীকে ১৫০ কোটি টাকা ঘুষ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন আরেক শিল্পপতি। ওই শিল্পপতি বলেছিলেন, “আপনি মন্ত্রীকে কেন টাকা দিচ্ছেন না বলুন তো? কেউ আমাদের কাছে কোনও টাকা-পয়সা চায়নি, তবে, আপনি তো জানেন তিনি ১৫০ কোটি টাকা চান। আপনারা এই এয়ারলাইনটা চান তো, নাকি? আপনি এয়ারলাইন চান, ১৫০ কোটি টাকা দিয়ে দিন। আপনার কী আসে যায় তাতে?”
যিনি ৯০০০ কোটি টাকা দান করেছেন, তাঁর কাছে হয়ত ১৫০ কোটি টাকাটা কিছুই নয়। কিন্তু, রতন টাটার ঘুষ দেওয়া নিয়ে সত্যিই কিছু আসত যেত। রতন টাটা জানিয়েছিলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে স্ব-নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন। মন্ত্রীকে ঘুষ দিয়ে চুক্তি আদায়ের প্রস্তাব দেওয়া শিল্পপতিকে তিনি বলেছিলেন, “আপনাকে স্ব-নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে। আমি হয়ত আপনাকে কখনই এটা বোঝাতে পারব না, কিন্তু, আমরা এটা (ঘুষ দেওয়া) করি না। আমি রাতে ঘুমোতে যাওয়ার সময় এটা ভেবে নিশ্চিন্ত হই যে, আমি লড়াইটা ছাড়িনি।”
ওই একই ভাইরাল সাক্ষাত্কারে রতন টাটা জোরের সঙ্গে জানিয়েছিলেন, দুর্নীতিবাজদের সঙ্গ তিনি সবসময় এড়িয়ে চলেছেন। অনৈতিক আচরণের কাছে আত্মসমর্পণ করেননি, এটা জেনেই প্রতি রাতে তিনি ঘুমোতে যেতে চান। তিনি বলেছিলেন, তিনি কখনও দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেননি। এমনকি কোনও খনির লাইসেন্স পেতেও কখনও ঘুষ দেননি।