নয়া দিল্লি: করোনার ধাক্কা কাটিয়ে দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করলেও, নতুন করে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট (Omicron Variant)। সেই কারণেই ফের একবার রেপো রেট (Repo Rate) অপরিবর্তিত রাখল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া (Reserve Bank of India)। এই নিয়ে নবমবার রেপো রেট ও রিভার্স রেপো রেট অপরিবর্তিত রাখা হল।
গত বছরের মার্চ মাস মাসে দেশজুড়ে করোনা সংক্রমণ আছড়ে পড়ার পরই রেপো রেট ১১৫ বেসিস পয়েন্ট কমিয়ে দেওয়া হয়। দেশের মুদ্রাস্ফীতি ও নগদ অর্থের জোগানে ভারসাম্য বজায় রাখতে রেপো রেট ও রিভার্স রেট যথাক্রমে ৪ শতাংশ এবং ৩.৩৫ শতাংশে কমানো হয়েছিল।লকডাউনের জেরে দেশের অর্থনীতি যে বিপুল ধাক্কার মুখে পড়েছিল, তা সামাল দিতেই রেপো রেট ও রিভার্স রেপো রেট অপরিবর্তিত রাখা হচ্ছিল।
গত অক্টোবরে মনিটরি পলিসি কমিটি(Monitory Policy Committee)-র বৈঠকেও দেশের অর্থনীতিকে ঘুরে দাঁড়াতে আরও কিছুটা সময় দেওয়ার জন্যই রেপো রেট ও রিভার্স রেপো রেট অপরিবর্তিত রাখা হয়েছিল। বিগত কয়েক মাসে দেশের করোনা পরিস্থিতি অনেকটাই শুধরানোয়, এবারের রেপো রেটে পরিবর্তন করা হবে বলেই মনে করা হয়েছিল। কিন্তু নতুন করে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট উদ্বেগ বাড়ানোয়, রেপো রেট অপরিবর্তিত রাখার সিদ্ধান্তই নেওয়া হল।
উল্লেখ্য, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক যে সুদের হারে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলিকে ঋণ দেয়, তাঁকে রেপো রেট বলে। অন্যদিকে, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক যে সুদের হারে অন্যান্য ব্যাঙ্কের কাছ থেকে ঋণ নেয়, তাকে রিভার্স রেপো রেট বলে।
মনিটরি পলিসি কমিটির তিনদিনের বৈঠকের পর বুধবার রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাশ (Shaktikanta Das) বলেন, “কমিটির সকল সদস্যরা সর্বসম্মতভাবে রেপো রেট ৪ শতাংশেই অপরিবর্তিত রাখার সিদ্ধান্তে সহমত জানিয়েছেন। এমএসএফ রেট ও ব্যাঙ্ক রেটও ৪.২৫ শতাংশে অপরিবর্তিত রইল। রিভার্স রেপোও ৩.৩৫ শতাংশেই অপরিবর্তিত রাখা হচ্ছে।”
জিডিপির বৃদ্ধি নিয়ে তিনি বলেন, “২০২১-২২ সালে জিডিপির প্রকৃত বৃদ্ধি ৯.৫ শতাংশই ধরে রাখা হচ্ছে। অর্থবর্ষের তৃতীয় ভাগে জিডিপি ৬.৬ শতাংশ এবং চতুর্থ ভাগে ৬ শতাংশ রয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের প্রথম ভাগে ডিজিপির প্রকৃত বৃদ্ধি ১৭.২ শতাংশ এবং দ্বিতীয় ভাগে ৭.৮ শতাংশ হতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে।”
মূল্যবৃদ্ধি প্রসঙ্গে আরবিআইয়ের গভর্নর বলেন, “সম্প্রতি আবগারি শুল্ক হ্রাস ও পেট্রল-ডিজেলের উপর রাজ্য ভ্য়াট কমানোয় ক্রয় ক্ষমতার বৃদ্ধি এবং তার প্রেক্ষিতে গ্রাহকের চাহিদার পূরণ হওয়া উচিত। গত অগস্ট মাস থেকে সরকারের ব্যবহারও বৃদ্ধি পেয়েছে, যা সামগ্রিক চাহিদা পূরণে বিশেষ সহায়তা করছে।”
২০২০ সালের জুন মাস থেকে খাদ্য ও জ্বালানি ছাড়া বাকি পণ্যের মুদ্রাস্ফীতির কারণে উদ্বেগ তৈরি হলেও, চাহিদা বৃদ্ধি হওয়ায় তা খুচরা মুদ্রাস্ফীতিতে দ্রুত পরিবর্তিত বা সঞ্চারিত হতে পারে। ২০২১-২২ সালে সিপিআই মুদ্রাস্ফীতি ৫.৩ শতাংশ হতে পারে বলেই জানান আরবিআইয়ের গভর্নর। একইসঙ্গে তিনি জানান, শীতকাল এসে যাওয়ায় সবজির দামে সংশোধন হতে পারে। তবে সামগ্রিকভাবে মূল্যবৃদ্ধির চাপ থেকেই যাবে।
আরও পড়ুন: Cryptocurrency Bill: কোনও পেমেন্ট হবে না ক্রিপ্টোকারেন্সিতে,আইন অমান্য করলে হবে জামিন অযোগ্য জেল