
মেদিনীপুর: ‘কাগজ। কাগজ আমরা দেখাব। দেখাবই দেখাব। কারণ কাগজ আমাদের আছে।’ সম্প্রতি এমন গান গেয়ে রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যান অভিনেতা তথা গায়ক অনির্বাণ ভট্টাচার্য। তবে গানের লাইনগুলোই যেন এবার বাস্তব অনির্বাণ ভট্টাচার্যের জীবনে। ওই গানেই তিনি বলেছিলেন, ‘ভাই এসআইআর কী বলছে?’ সহশিল্পী বলেছিলেন, ‘ঝাড়াই বাছাই চলছে।’ আর সেই ঝাড়াই বাছাই পর্বেই ডাক পাচ্ছেন মেদিনীপুরের ছেলে অনির্বাণ। এসআইআর-র শুনানিতে ডাকা হচ্ছে তাঁকে। কারণ, এনুমারেশন ফর্ম ফিলাপের ক্ষেত্রে ২০০২-র কোনও লিঙ্ক উল্লেখ করতে পারেননি অনির্বাণ। ফলে তাঁকেও ডাকা হচ্ছে শুনানিতে। যদিও এখনও নোটিস পাঠানো হয়নি অভিনেতা-গায়ককে।
১৯৮৬ সালের ৭ অক্টোবর মেদিনীপুরের শরৎপল্লির বাড়িতে জন্ম অনির্বাণের। এখন মা-বোনকে নিয়ে থাকেন কলকাতার গড়িয়ায়। কিন্তু এখনও তাঁর নাম থেকে গিয়েছে মেদিনীপুর শহরের ভোটার তালিকায়। মেদিনীপুর পৌরসভার ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের ২৯৯ নম্বর বুথের ভোটার তিনি। এনুমারেশন ফর্ম ফিলাপ করেছেন। কিন্তু, ২০০২ সালের লিঙ্ক না থাকায় তাঁকে শুনানিতে ডাকা হচ্ছে।
অভিনেতাকে শুনানিতে ডাকা নিয়ে মেদিনীপুর সদরের মহকুমাশাসক তথা ইআরও মধুমিতা মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, যাঁদের ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় কোনও লিঙ্ক পাওয়া যায়নি, তাঁদের প্রত্যেককেই ডাকা হচ্ছে শুনানিতে।
কী বললেন অভিনেতা?
এই নিয়ে TV9 বাংলাকে অনির্বাণ জানালেন, ‘’২০০২-এর তালিকায় আমার বা আমার পরিবারের সদস্যদের নাম নেই (বাবা, মা এবং বোন)। নির্বাচন কমিশনের সাম্প্রতিক সময়ে যে আপডেটেড তালিকা, তাতে আমার মা, বোন এবং আমার নাম রয়েছে। বাবা প্রয়াত হয়েছেন, সে কথার উল্লেখ আছে। আমার যদি শুনানিতে ডাক পড়ে, তা হলে সে খবর সরকারি আধিকারিকের তরফেই জানব। কোনও খবরের কাগজ ডাকবে না। BLO-র তরফে কোনও ডাক এখনও পাইনি। যদি সেই ডাক আসে, তা হলে অবশ্যই যাব।’’
অনির্বাণ ভট্টাচার্য
অভিনেতাকে শুনানিতে ডাকা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। তৃণমূল নেতা বুদ্ধদেব মণ্ডল বলেন, “উনি একজন গায়ক, অভিনেতা বলে আপনারা জানতে পেরেছেন। এরকম অনেক বৈধ ভোটারের নাম বাদ দেওয়ার চক্রান্ত করছে বিজেপি। রাজ্যে এরকম অনেক অনির্বাণ ভট্টাচার্য রয়েছেন, যাঁদের শুনানিতে ডাকা হবে। কিন্তু, চূড়ান্ত তালিকায় নাম থাকবে না। আমরা এসআইআর-র বিরুদ্ধে নই। কিন্তু, বৈধ ভোটারের নাম বাদ দেওয়া যাবে না।”
যদিও তৃণমূলের এমন কথায় গুরুত্ব দিতে নারাজ বিজেপি। অনির্বাণকে হিয়ারিংয়ে ডাকা নিয়ে বিজেপি নেতা শঙ্কর গুছাইত বলেন, “এসআইআর একটি পদ্ধতি। এখানে যেকোনও মানুষকে হিয়ারিংয়ের জন্য ডাকা হতে পারে। তিনি গায়ক কিংবা যেকোনও পেশার মানুষ হতে পারেন। ঠিকমতো লিঙ্ক না থাকলে ডাকা হতে পারে। আমাকেও ডাকতে পারে। এখানে ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই। প্রয়োজনীয় কাগজ দেখালেই হবে। আমাদের কাজ কমিশনকে সহায়তা করা।”