
টেকনোসিটি: তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েত। আর সেই পঞ্চায়েত অফিসেই মহিলা প্রধানকে মারধরের অভিযোগ। চুলের মুঠি ধরে টেনে নিয়ে যাওয়া হয়। ঘটনাকে কেন্দ্র করে শোরগোল পড়ে রাজারহাট নিউটাউনের পাথরঘাটায়। প্রধানকে মারধরের ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করেছে টেকনোসিটি থানার পুলিশ। অন্যদিকে, প্রধানের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে অভিযুক্ত পরিবার। তাদের দাবি, প্রধান বাড়ি করতে বাধা দিচ্ছেন। প্রধানই প্রথম মারধর করেন বলে অভিযোগ।
জানা গিয়েছে, একটি জমিকে কেন্দ্র করে বিবাদের সূত্রপাত। পাথরঘাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের চকপাচুরিয়া মণ্ডল পাড়ার বাসিন্দা কৃষ্ণা মণ্ডল ওই জমির সরকারি পাট্টা পেয়েছিলেন। তারপর সেই জমিতে বাড়ি করছিলেন। তাঁর অভিযোগ, পঞ্চায়েত সদস্য দীপু মণ্ডল, পঞ্চায়েত প্রধান পিঙ্কি মণ্ডল এবং প্রধানের স্বামী শশাঙ্ক মণ্ডল নির্মাণ কাজে বাধা দিচ্ছেন। জমির বৈধ কাগজ থাকা সত্ত্বেও যতবার নির্মাণ কাজ করার চেষ্টা করেন, ততবারই পুলিশ দিয়ে হুমকি দেওয়া হয়। এরপর আদালতের দ্বারস্থ হন কৃষ্ণা মণ্ডল। আদালতের নির্দেশ মেনে ফের নির্মাণকাজ শুরু করতেই পঞ্চায়েত অফিসে ডেকে পাঠানো হয়।
গতকাল পঞ্চায়েত অফিসে প্রধান পিঙ্কি মণ্ডলের সঙ্গে কৃষ্ণা মণ্ডলের পরিবারের বচসা বাধে। অভিযোগ, সেইসময় কৃষ্ণার ছেলে মোবাইলে ভিডিয়ো করতে গেলে প্রথমে চড়াও হন পিঙ্কি মণ্ডল। তখন পঞ্চায়েত প্রধানকে চুলের মুঠি ধরে টেনে নিয়ে গিয়ে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।
ঘটনার জেরে এলাকায় শোরগোল পড়ে। ঘটনাস্থলে আসেন রাজারহাট নিউটাউনের বিধায়ক তাপস চট্টোপাধ্যায়। পঞ্চায়েত প্রধানকে নিয়ে টেকনোসিটি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তাপস চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এটা অত্যন্ত নিন্দাজনক ও দুঃখজনক ঘটনা। রাজারহাটে এরকম ঘটনা কোনওদিনই হয়নি। আমাদের প্রধান খুবই ভাল। সবার সঙ্গে হাসি মুখে কথা বলেন। পুলিশ ব্যবস্থা না নিলে আমরা ছাড়ব না। এখানে বসে পড়ব। মনে হচ্ছে, এই হামলায় চক্রান্ত রয়েছে। পরিকল্পনা করে হামলা হয়েছে।” তৃণমূলের দাবি, যারা হামলা চালিয়েছিল, তারা অন্য দলের। অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছে তৃণমূল। প্রধান পিঙ্কি মণ্ডল বলেন, “আমি ওদের চিনিও না। কোনও বচসা হয়নি। আমি শুধু বলেছিলাম, ভিডিয়ো করো না। তাতেই চুলের মুঠি ধরে টেনে নিয়ে গিয়ে মারধর করা হয়। আমি হতবাক হয়ে গিয়েছি।”
ঘটনার তদন্তে নেমে একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতের নাম সুভাষ মণ্ডল। তবে কৃষ্ণা মণ্ডল দাবি করেন, ভিডিয়ো করায় প্রধানই প্রথম মারধর শুরু করেন। তারপর আত্মরক্ষার জন্য প্রধানকে মারা হয়। এদিকে, স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই প্রধানের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। এদিন তাঁরা থানায় ডেপুটেশন দেবেন বলে জানা গিয়েছে।