
নদিয়া: সবে মাস ছয়েক কেটেছে। নদিয়ার কালীগঞ্জের নাম বললেই উঠে আসে নাবালিকা তামান্না খাতুনের নাম। গত ২৩ জুন কালীগঞ্জ বিধানসভার উপনির্বাচনে ফল ঘোষণার পর বোমাবাজিতে প্রাণ হারায় তামান্না। সেই কালীগঞ্জেই এবার সমবায় সমিতির নির্বাচনে শূন্য হল তৃণমূল। খাতাই খুলতে পারল না। সব আসনে জিতল বামেরা। আর সমবায় সমিতির ফল ঘোষণার পর রাজ্যের শাসকদলকে বিঁধল সিপিএম। জবাবে তৃণমূলের বক্তব্য, বাংলায় গণতন্ত্র রয়েছে বলেই বিরোধীরা জিতেছে।
কালীগঞ্জের বৈরামপুর-পলাশী সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির নির্বাচন হয় রবিবার। দীর্ঘদিন ধরে এই সমবায়ে নির্বাচন হয়নি। এদিন হাইকোর্টের নির্দেশে সিসিটিভি ক্যামেরা ও উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিকের উপস্থিতিতে ভোটগ্রহণ হয়। এই সমবায় সমিতির নির্বাচনে ন’টি আসনেই জয়ী হন বাম সমর্থিত প্রার্থীরা। খাতা খুলতে পারেনি তৃণমূল। সমবায় সূত্রে জানা গিয়েছে, চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় ৫৪৬ জনের নাম ছিল। তার মধ্যে ৪৬৪ জন ভোট দেন। সিপিএম নেতা দেবাশিস আচার্য বলেন, স্বচ্ছ নির্বাচনে মানুষ প্রগতিশীল শক্তিকেই বেছে নিয়েছেন।
৬ মাস আগে বিধানসভা উপনির্বাচনে কালীগঞ্জে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন তৃণমূল প্রার্থী আলফা আহমেদ। এরপরই তৃণমূলের বিজয়োৎসবের সময় বোমাবাজিতে মৃত্যু হয় তামান্নার। সেই ঘটনার উল্লেখ করে এদিন সিপিএম নেতা কলতান দাশগুপ্ত বলেন, “মানুষ সুযোগ পেলেই নৈরাজ্যের ঘটনার জবাব দিয়েছেন। এখানে জিতে যাই, ওখানে জিতে যাই বলে সব অপরাধ মাফ, তৃণমূলের এই রাজনীতিরই জবাব দিয়েছেন মানুষ। সুযোগ পেলেই বোমার জবাব ব্যালটে দিচ্ছেন ভোটাররা। ভবিষ্যতেও তাই দেবেন।”
কী বলছে তৃণমূল?
বিরোধীদের আক্রমণের জবাব দিয়ে তৃণমূল মুখপাত্র তন্ময় ঘোষ বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্র রয়েছে। ফলে বিরোধীরা থাকবে। ভারতবর্ষের সংসদীয় গণতন্ত্রের শক্তি হচ্ছে বিরোধী স্বর। আমরা সবসময় বলি, গণতন্ত্রে বিরোধী স্বরকে দমন করে দেওয়াই গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধ করে দেওয়া। এখানে একটা সমবায়ে বিরোধীরা জিতেছে, এটা স্বাভাবিক। আমরা মানুষের কাছে যাব। তৃণমূলের উন্নয়ন তুলে ধরব। বিরোধীদের শুভেচ্ছা। একশো শতাংশ জিতে গেলে সেটা তো স্বৈরতন্ত্র হয়। আমরা গণতন্ত্রকে বাঁচিয়ে রাখতে চাই।”