
গোঘাট: শনিবার থেকে শুরু হয়েছে এসআইআর-এর শুনানি পর্ব। আর সেই শুনানিতে তিনিও নোটিস পেয়েছেন। কিন্তু, প্রয়োজনীয় তথ্য জোগাড় করতে পারেননি। সেই আতঙ্কেই এক গৃহবধূ বিষ খেয়েছেন বলে অভিযোগ উঠল। বর্তমানে হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন তিনি। ঘটনাটি হুগলির গোঘাটের। ওই গৃহবধূর নাম জয়া ঘণ্টেশ্বরী। ঘটনাটি নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর বেড়েছে। তৃণমূলের দাবি, বিজেপি নেতাদের উস্কানিমূলক মন্তব্যেই আতঙ্কে বিষপান করেছেন ওই গৃহবধূ। বিজেপির দাবি, পারিবারিক অশান্তিতে বিষ খেয়েছেন।
জয়া ঘণ্টেশ্বরীর শ্বশুরবাড়ি গোঘাটের বদনগঞ্জ-ফুলুই-২ পঞ্চায়েতের কোকন্দ এলাকায়। ছোটবেলায় তাঁর বাবা-মা মারা যান। বাঁকুড়ার জয়পুরে তাঁরা থাকতেন। পরে গোঘাটের কামারপুকুরে ভাড়াবাড়িতে থাকতেন। জয়ার বাবা বাঁকুড়ায় পুলিশ কনস্টেবলের চাকরি করতেন। কর্মরত অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। ২০০২ সালের আগেই জয়ার বাবা-মার মৃত্যু হয়েছে। ফলে নির্বাচন কমিশনের ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম নেই তাঁদের। জয়ার সেইসময় ভোটার কার্ডই হয়নি। সেইসময় তাঁর বয়স ছিল ১৬ বছর। বিয়ের পর বদনগঞ্জ এলাকাতেই তাঁর ভোটার কার্ড হয়েছে। তিনি ভোটও দিয়েছেন বিভিন্ন নির্বাচনে।
এবার এসআইআর প্রক্রিয়ায় হিয়ারিংয়ের নোটিস পান জয়া। আগামী ৫ জানুয়ারি তাঁকে হিয়ারিং-এ ডাকা হয়েছে। তারপর থেকেই কাগজপত্র জোগাড় করার জন্য বিভিন্ন অফিসে ছোটাছুটি করেছেন। স্থায়ী বাসিন্দার সার্টিফিকেটের জন্য তাঁর বাপেরবড়ি কামারপুকুর পঞ্চায়েতেও যান। কিন্তু সেখানে কোনও কাজ হয়নি। পরিবারের বক্তব্য, এই নিয়ে আতঙ্কে শুক্রবার বিকেলে বিষ খান জয়া। বর্তমানে আরামবাগ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর ছেলে ও আত্মীয়দের দাবি, এসআইআর আতঙ্কেই তিনি বিষ খেয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, আগামিদিনে আর কেউ যাতে এই কাজ না করেন, তার জন্য সরকারের উচিত এই প্রক্রিয়া আরও সহজ করা।
ঘটনাটি নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। গোঘাট ২-এর তৃণমূল ব্লক সভাপতি সৌমেন দিগার বলেন, “জয়া ঘণ্টেশ্বরী ম্যাপিংয়ের জন্য মামার নাম দিয়েছিলেন। কিন্তু, তাঁকে হিয়ারিংয়ে ডাকা হয়। তিনি চিন্তায় ছিলেন। আমরা তাঁকে আশ্বস্ত করেছিলাম। কিন্তু, বিজেপি নেতারা যেভাবে আতঙ্ক ছড়াচ্ছেন, তাতে উনিও আতঙ্কে ছিলেন। তারপরই বিষ খান। তাঁর শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ।”
পাল্টা তৃণমূলকে নিশানা করে বিজেপির আরামবাগ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুশান্ত বেরা বলেন, “নির্বাচন কমিশন স্বতন্ত্র দফতর। এখানে বিজেপির কোনও ভূমিকা নেই। আর ওই মহিলা পারিবারিক গন্ডগোলের জেরে বিষ খেয়েছেন। তৃণমূল এখন যা ঘটছে, তাকেই এসআইআর আতঙ্ক বলে চালাচ্ছে।”