কলকাতা: বিধাননগরের বিধায়ক সুজিত বসুর সঙ্গে সব্যসাচী দত্তর সম্পর্কের ‘রসায়ন’ কম বেশি সকলেই জানেন। নিন্দুকেরা বলেন, সুজিত-সব্যসাচীর ‘দ্বৈরথ’ বিধাননগরের পুরনো রাজনীতির অঙ্গ। ওয়াকিবহাল মহল বলে, দু’জনই নিজেদের মতো করে দাপুটে। দু’জনই পরীক্ষায় বসলে ভাল নম্বর নিয়েই পাস করেন। ফলে দল কাউকে দূরে সরিয়ে রাখতে পারে না। বিজেপি ঘুরে সব্যসাচী যখন তৃণমূলে ফিরলেন, যে ক’টি নাম এই ‘ঘর ওয়াপসি’তে আপত্তি তুলেছিল, শোনা যায় তাদের অন্যতম সুজিত বসু। সব্যসাচী তৃণমূলে ফিরলেও বিধাননগরের বিধায়কের কোনও কর্মসূচিতে দেখা যায়নি তাঁকে। প্রচার থেকে নির্বাচনী বৈঠক, যেখানেই ‘নেতা’ সুজিত, অদ্ভূতভাবে সেখানে অনুপস্থিত সব্যসাচী। সেই সব্যসাচী পুরভোটে ৩১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জয় পেয়েছেন। জিতেই ছুটে গিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে। দেখা করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও। জোর জল্পনা, মেয়র পদে আবারও বসতে পারেন তিনি। সে সব তো সময় বলবে। কিন্তু সব্যসাচীর জয় নিয়ে কী বলছেন সুজিত? সুজিত বসুর মতে, তৃণমূলের প্রতীকটাই শেষ কথা। বিধানসভা নিবার্চন তৃণমূলের প্রতীক ছাড়া দাঁড়িয়ে কী ফল হয়েছিল, সবাই দেখেছে। এবার তৃণমূলের প্রতীকে দাঁড়িয়ে জয়ী হয়েছে।
জয়ী সব্যসাচীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন সুজিত? সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সুজিত বসু বলেন, “আমার সঙ্গে কারও কোনও কথা হয়নি।” পর মুহূর্তেই তিনি বলেন, “সকলে সার্টিফিকেট নিচ্ছেন। সকলকে ডেকেছি। সবাইকে আমি শুভেচ্ছা জানিয়েছি।” কে মেয়র হবে তা নিয়েও সুজিত বসু বলেন, “দল যখন জিজ্ঞাসা করবে, তখন এ নিয়ে বলব। প্রার্থী ঠিক করার আগেও দল আমাদের নিয়ে বসেছিল। দলের উপর আমাদের আস্থা, ভরসা সবসময় আছে। দল যা সিদ্ধান্ত নেবে, সেটাই আমরা মানব।”
অন্যদিকে বিধাননগরের আগামী মেয়র প্রসঙ্গে সব্যসাচী দত্ত এদিন বলেন, “বিধাননগরের মেয়র ঠিক হয়ে গিয়েছে। তাঁর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উনিই আমাদের মুখ।” এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সাক্ষাতের পর সব্যসাচী দত্ত বলেন, “দিদি যেমন বলেন, জায়গাটা ভাল করে দেখে রাখ। মানুষের যেন কোনও অসুবিধা না হয়। আরও সুন্দর করে কাজ করতে হবে। যে যে কাজ বাকি আছে দিয়ে দিবি, দেখে নেব।”
বিজেপি প্রসঙ্গে সুজিত বসুর প্রতিক্রিয়া, “বিজেপি কোনও দল নয়, ফ্যাক্টরও নয়। মানুষের কোনও উন্নয়নে ওরা লাগে না। বিগত দিনেও বিধাননগরের মানুষকে আমরা পরিষেবা যেভাবে দিয়েছি, আগামীতেও আমাদের প্রতিনিধিরা মানুষের পাশে থাকবেন। তা ছাড়া দেখাই যাচ্ছে বিজেপির প্রতি যে মোহ তৈরি হয়েছিল, তা কেটে গিয়েছে। বিজেপি ছেড়ে লোক বেরিয়ে আসছেন।” চার পুরনিগমের ফলাফল নিয়ে বিজেপির আদালতে যাওয়ার প্রসঙ্গে সুজিত বসু বলেন, “ওদের মামলা করা ছাড়া আর কোনও উপায় নেই।”