পুরভোটে সন্ত্রাসের অভিযোগ। আজ, সোমবার ১২ ঘণ্টা বাংলা বনধ বিজেপির। সকাল ৬ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ পর্যন্ত চলবে বনধ। বনধ মোকাবিলায় প্রস্তুত প্রশাসনও। বিজেপির বনধ ঠেকাতে কঠোর পদক্ষেপ করেছে নবান্ন। জোর করে বনধ করলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। জেলাশাসক ও মুখ্যসচিবদের কড়া নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যসচিব। বনধ সফল করতে রাজ্যের সর্বত্র বিজেপি কর্মীরা পথে নেমেছেন। রাজ্য জুড়ে বনধে বিক্ষিপ্ত অশান্তি। হুগলিতে ট্রেন অবরোধের চেষ্টা করেন বিজেপি কর্মী সমর্থকরা। যাদবপুর, এসপি মুখার্জি রোডে পুলিশের সঙ্গে হয় ধস্তাধস্তি। বালুরঘাটে পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়ান বিজেপির রাজ্য সভাপতি।
উল্টোডাঙা স্টেশনের কাছে দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন বিরোধীরা। বিজেপির নেতা-নেত্রীরা স্টেশনে আগুন জ্বালিয়ে ট্রেন যেতে বাধা দেয়। ট্রেনের উপর উঠে ট্রেন চলতে বাধা দেয় বিজেপির কর্মী সমর্থকরা। রেল অবরোধ করেন বিজেপির কর্মীরা। বিক্ষোভ প্রদর্শনে যোগ দেন কল্যাণ চৌবে। রাস্তায় বিক্ষোভ মিছিলে যোগ দেন অগ্নিমিত্রা পাল, কল্যাণ চৌবে এবং অশোক দিন্দা। উল্টোডাঙায় বিজেপির মিছিল সেখানে পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়ান বিজেপির নেতা-নেত্রীরা।
বিস্তারিত পড়ুন: Agnimitra Paul Arrested : বিজেপির মিছিল ঘিরে ধুন্ধুমার কাণ্ড, গ্রেফতার হয়ে পুনরায় নির্বাচনের দাবি অগ্নিমিত্রার
রবিবার বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার সাংবাদিক সন্মেলন সেই কথা ঘোষণাও করেন। আজ সকাল হতেই কলকাতা সহ গোটা রাজ্যে বনধের মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। ইতিমধ্যে জেলাগুলি থেকে বিক্ষিপ্ত অশান্তির খবরও উঠে আসছে। এরই মধ্যে হঠাৎ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী মাঝ পথেই বনধ প্রত্যাহারের ডাক দিলেন।
নন্দীগ্রামের এক সভায় শুভেন্দু জানান, হঠাৎ ডাকা বনধে অসুবিধায় পড়েছেন অনেকেই। তাই ধর্মঘট প্রত্যাহার করার আবেদন জানাচ্ছি। এদিন শুভেন্দু বলেন, ‘গতকাল পাঁচটা-সাড়ে পাঁচটা থেকে ডাকা বনধে অনেকের অসুবিধা হচ্ছে। তাই অনুরোধ করব বনধ প্রত্যাহার করে নেওয়া হোক।’
বিজেপির ডাকা ১২ ঘণ্টার বাংলা বনধ সফল হল না এমনটাই বলা যায় । উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় দেখা যায় যান চলাচল স্বাভাবিক । সকাল থেকে বারাসাত মধ্যমগ্রাম,হাবরা বনগাঁ বিভিন্ন এলাকাতে মানুষ রাস্তায় বেরিয়ে নিজের কর্মস্থলে গিয়েছেন।
আরামবাগে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ বিজেপি কর্মীদের। পথ অবরোধের জেরে আরামবাগ-কলকাতা, আরামবাগ-মেদিনীপুর ,আরামবাগ- বাঁকুড়া, আরামবাগ-বর্ধমান রাস্তা অবরুদ্ধ হয়ে যায়। পরে পুলিশ এসে পথ অবরোধ তোলার জন্য অনুরোধ করলে ঘণ্টাখানেক পর পথ অবরোধ উঠে যায়।
জেলায়-জেলায় বনধের প্রভাব অব্যাহত। বিজেপির ডাকা বাংলা বন্ধের বিরোধিতায় বর্ধমানে মিছিল করল শাসকদল। সোমবার দুপুরে টাউনহল থেকে একটি মিছিল বেরিয়ে বর্ধমান শহরের জি টি রোড, বি সি রোড পরিক্রমা করে বাজবাটিতে পৌঁছায়। সেখানে মিছিল শেষ হয়। মিছিলে ছিলেন দলের শহর সম্পাদক অরূপ দাস, বিধায়ক খোকন দাস সহ অন্যান্যরা।
বিজেপির মিছিলে ঘাটালে উত্তেজনা। পুলিশের সঙ্গে বিজেপি কর্মীদের ধস্তাধস্তি। ঘাটালে বনধের সমর্থনে বিজেপি কর্মীদের মিছিল, বন্ধ করা হল দোকানপাট, ব্যাঙ্ক, ভাঙচুর করা হয়েছে যাত্রীবাহী বাসের কাচও। ঘাটাল মহকুমা আদালতের সামনে দলীয় পতাকা হাতে বিজেপি কর্মীদের বিক্ষোভ।
শিলিগুড়িতে জোর করে বনধ করার অভিযোগে গ্রেফতার বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ, আনন্দ বর্মন। পুলিশের সঙ্গে তাঁদের কথা কাটাকাটিও হয়। এদিকে, গাড়ি আটকানো নিয়ে তীব্র উত্তেজনা কোচবিহারে। বিজেপির জেলা সভাপতি বিধায়ক সুকুমার রায় ও বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে’র নেতৃত্বে মিছিল বের হয় । সরকারি বাস রাস্তায় আটকানো হয়। খবর পেয়ে আসে পুলিশ। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়িতে পড়েন বিজেপি বিধায়ক, কর্মী সমর্থকরা।
বিজেপির মিছিল ঘিরে খিদিরপুর মোড়ে পথ অবরোধ। খিদিরপুর মোড় অবরোধ করার চেষ্টা করেন বিজেপি কর্মী সমর্থকরা। সকাল থেকে মোতায়েন ছিল পুলিশ। বেশ কয়েকজন কর্মীদের আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ।
বেহালায় বিজেপির পথ অবরোধ ঘিরে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি বিজেপি কর্মী সমর্থকদের। ইতিমধ্যে পুলিশ বেশ কয়েকজনকে আটক করেছে এবং বিজেপি কর্মী সমর্থকদের ছত্রভঙ্গ করেছে।
বিজেপির বন্ধ ঘিরে উত্তপ্ত ঘাটাল। দলীয় পতাকা হাতে আদালতের ভিতর বন্ধ সমর্থনকারীরা। জোর করে ব্যাঙ্কের গেট বন্ধ করল বন্ধ সমর্থনকারীরা।
পুরভোটে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে রাজ্য জুড়ে ১২ ঘণ্টার বনধ ডেকেছে বিজেপি। কিন্তু শহর কলকাতায় তার বিশেষ প্রভাব পড়েনি। বাস চলাচল প্রায় স্বাভাবিক। বনধ জেনেও অফিস, কাছারিতে বেরিয়েছেন মানুষ।
কোচবিহারে বিজেপি বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে দাঁড়িয়ে থেকে আটকালেন উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহনের বাস । তড়িঘড়ি সেখানে গিয়ে হাজির হয় পুলিশ। বিধায়কের সঙ্গে কথা বলেন পুলিশ কর্মীরা। পরে বাসটিকে ছাড়া হয়। বিধায়ক বলেন, ‘xপুরভোটে পুরোটাই ভোট লুঠ হয়েছে। এর জবাব মানুষ দেবে।’
হুগলি স্টেশনে রেল অবরোধ করছেন বিজেপি কর্মী সমর্থকরা। ডাউন বর্ধমান লোকাল আটকে হুগলি স্টেশনে। ভোগান্তিতে নিত্যযাত্রীরা। রেল পুলিশ ও পুলিশ অবরোধকারীদের সঙ্গে কথা বলছে।
বিজেপির ডাকা বনধে এখন পর্যন্ত আলিপুরদুয়ারে কোনও প্রভাব নেই।উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহনের বাস চলছে। রাস্তায় যানবাহনও চলছে। রাস্তায় দেখা মেলেনি কোন বিজেপি বনধ সমর্থনকারীকে।
বনধে কোন প্রভাব পড়েনি পূর্ব বর্ধমানে। সকাল থেকে সবই স্বাভাবিক ভাবেই চলছে। পথে নেমেছে সরকারি বাসের পাশাপাশি বেসরকারি বাস। যান চলাচল একেবারে স্বাভাবিক। মানুষজনও রাস্তায় নেমেছে। তবে বেলা বাড়লে পরিস্থিতি বদলাতে পারে।
শিলিগুড়িতেও একই ছবি। বিজেপি কর্মী সমর্থকদের জন্য পুলিশের ধস্তাধস্তি। রাস্তায় বসে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
বিজেপির ডাকা ১২ ঘন্টা বনধ সফল করতে রাস্তায় বিজেপি। সোমবার সকাল সকাল বালুরঘাট সরকারি বাস স্ট্যান্ডের সামনে বিজেপি কর্মী সমর্থকদের পিকেটিং বনধ সফলের জন্য। রাস্তায় বসে বাস আটকানোর চেষ্টা করেন বিজেপি কর্মী সমর্থকরা। পুলিশ তুলতে গেলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পুলিশের সঙ্গে বিজেপি কর্মী সমর্থকদের ধস্তাধস্তি হয়। বিজেপি কর্মীদের চ্যাঙদোলা করে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে পুলিশ।