কলকাতা: “নারী কেন উনি তো বাঘিনী। বাঘিনী আবার নারী হয় নাকি? উত্তরপ্রদেশে গিয়ে আবার জেন্ডারও চেঞ্জ হয়ে গেল….” বেনারসে মুখ্যমন্ত্রীকে কালো পতাকা দেখানো প্রসঙ্গে বললেন বিজেপির সর্ব ভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বৃহস্পতিবার নিউটাউন ইকোপার্কে প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়েছিলেন তিনি। সেখানে সাংবাদিকদের একাধিক প্রশ্নের সম্মুখীন হন। মোদীর কেন্দ্রে মমতার কালো পতাকা দর্শন প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, “ওঁ তো প্রধান মন্ত্রী, রাজ্যপালকে কালো পতাকা দেখিয়েছেন, এবার দেখুন নিজে কালো পতাকা, এবার বুঝুন, কালো পতাকা দেখলে কেমন লাগে।”
মমতাকে কালো পতাকা প্রদর্শন
প্রসঙ্গত, পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী বুধবার সন্ধ্যায় বারাণসীতে পৌঁছন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে বিজেপির বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। কালো পতাকা দেখিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বিজেপি কর্মী সমর্থকরা। বিমানবন্দর থেকে তাঁর গাড়ি এগোচ্ছিল দশাশ্বমেধ ঘাটের দিকে। ঘাট থেকে কিছুটা দূরেই দাঁড়িয়েছিলেন বিজেপি কর্মী সমর্থকরা। তাঁরা মমতার কনভয়ের সামনে দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। গো ব্যাক স্লোগান দিতে থাকেন। সেই ঘটনার প্রতিবাদে আজ রাজ্যে প্রতিবাদ কর্মসূচি রয়েছে তৃণমূলের। সেই প্রেক্ষিতেই দিলীপ ঘোষ কথাগুলি বলেন।
উত্তরবঙ্গের সমীকরণ
তৃণমূলের উত্তরবঙ্গে আসন পাওয়া নিয়েও তাঁকে প্রশ্ন করা হয়। দিলীপের সোজা সাপটা জবাব, “বিজেপি কোথাও ছিল না। গত লোকসভা বিধানসভায় এসেছে। তারা কেন আসতে পারেনি। উত্তরবাংলার লোক হিংসার রাজনীতি কখনও পছন্দ করে না। দক্ষিণবাংলার রাজনীতি উত্তরবাংলার লোকেরা চায় না। পুলিশ দিয়ে জোর করে পুরসভা জিতেছে। ভোট করতে দিচ্ছে না। এই রাজনীতি নিয়ে হয়তো বাংলা দখল করা যাবে. বাংলার উন্নয়ন কখনও করা যাবে না।”
দ্বিতীয় স্থানে বাম
পুরনির্বাচনে বাংলায় দ্বিতীয় স্থানে বামেদের উত্থান আসলে তৃণমূলেরই কারসাজি করে উল্লেথ করেন তিনি। দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, এর পিছনেও রয়েছে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। তিনি বলেন, ” আগে বামেদের দখলে কটা পৌরসভা ছিল, এখন কটা আছে। বামেরা দ্বিতীয় কেন প্রথম ছিল! এবারের যে ভোট করা হয়েছে সেখানে বামেদের দ্বিতীয় করা হয়েছে। এখন সিপিআইএম এর যা পরিস্থিতি, তাদেরকে ওষুধ খাইয়েও কিছু করা যাচ্ছে না। যেটা তৃণমূল চাইছে বাম দ্বিতীয় স্থানে থাকুক। কিন্তু মানুষ বামফ্রন্টকে আর স্বীকার করছেন না। নৈতিকভাবে জয় বিজেপিরই হয়েছে।”
শাসকের নির্দল কাঁটা
তৃণমূলের নির্দল কাঁটা প্রসঙ্গেও এদিন মুখ খোলেন দিলীপ ঘোষ। বিক্ষুব্ধ তৃণমূলের কাছে তৃণমূলের পরাজয় প্রসঙ্গে দিলীপ বলেন, “ভোট যেটা হয়েছে সেটা তো ভোট হয়নি। যারা তৃণমূলের পুরানো লোক, বেশিরভাগ যারা সিন্ডিকেট চালায়, যারা প্রমোটার, যারা টাকা কামিয়েছে, তাদেরকে টিকিট দিয়েছে। যারা পাইনি তারা জোর করে দাঁড়িয়েছে এবং জিতেছে। যাদের সব লোকবল আছে তারাই ভোট করায়। যাদেরকে তৃণমূল টিকিট দেয়নি বুঝতে পেরেছে লোকবল টাকা তাদের কাছেই আছে। তারাই ভোটটা করিয়েছে এবং জয়ী হয়েছে।” প্রসঙ্গত, পুরনির্বাচনে নির্দল কাঁটায় জর্জরিত হয়েছে শাসকশিবির। তবে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব থেকে নির্দল কাঁটা-সব উড়িয়ে দাপট তৃণমূল কংগ্রেসের।
আবারও সক্রিয় হবে বিজেপি
একুশের নির্বাচনে মুখ থুবড়ে পড়েছিল। আর এবার সবুজ সাইক্লোনে কার্যত ধূলিসাৎ গেরুয়া শিবির। গড় হাতছাড়া অর্জুন-দিলীপ- অধিকারীদের। তবে কি বিজেপি এখন হিমঘরে? এ প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, “দেখতে পাবেন যখন নির্বাচন আসবে। যেভাবে নির্বাচনের পরে ৬০জনকে হত্যা করা হয়েছে, ভুয়ো মামলায় ফাঁসানো হয়েছে, কর্মীরা সব ভয় পেয়ে গিয়েছেন। ৫০ শতাংশ কর্মী নির্বাচনে বের হননি। স্বাভাবিক ভাবে আবার বের হলে মার খাবেন, মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হবে। সেজন্য বের হননি।” দিলীপের আশ্বাসবাণী, ‘পরবর্তী সময়ে পার্টি আবার সক্রিয় হবে।’
আরও পড়ুন: বাইরে ‘খেলা হবে’ গান, ব্যান্ড পার্টি! ঘরের ভিতরে তরুণী তৃণমূল কর্মীর চরম অবস্থা দেখল পরিবার
আরও পড়ুন: তাহেরপুর বামেদের দখলে যেতেই রাতারাতি বদল থানার ওসি!