পঞ্জাব : মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে কাকে দেখতে চান পঞ্জাবের মানুষ, তা ভোটারদেরই বেছে নেওয়ার সুযোগ দিয়েছিলেন আপ সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরীবাল। সেই জনতার জবাবের ওপর ভিত্তি করে পঞ্জাব বিধানসভা নির্বাচনের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে ভগবন্ত মানকে বেছে নিলেন কেজরীবাল। মঙ্গলবারই সেই নাম ঘোষণা করেছেন তিনি।
এবার পঞ্জাব বিধানসভা নির্বাচনে রাজনৈতিক গুরুত্ব বেড়েছে আম আদমি পার্টির। কংগ্রেসের প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবে আপকেই এগিয়ে রাখা হচ্ছে। তাই কেজরীবাল কাকে মুখ হিসেবে সামনে রেখে লড়াই করবেন, সে দিকে নজর ছিল সব পক্ষেরই। অবশেষে পঞ্জাবে মোহালির জনসভা থেকে ভগবন্ত মানের নাম ঘোষণা করলেন তিনি।
মানুষের রায়ের ওপর ভিত্তি করেই মুখ্যমন্ত্রী মুখ বাছাইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন কেজরী। ৭০৭৪৮৭০৭৪৮ নম্বরে ফোন করে পছন্দের মুখ্যমন্ত্রীর নাম জানানোর কথা বলেছিল আপ। কেজরীবাল বলেছিলেন, ‘এই প্রথমবার কোনও দল জনতাকেই মুখ্যমন্ত্রী মুখ বাছাইয়ের দায়িত্ব দিয়েছে।’ সেই উদ্যোগের নাম দেওয়া হয় ‘জনতা চুনেগি আপনা সিএম’। ব্যাপক প্রচার চালানো হয় পঞ্জাব জুড়ে। ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত সেই ফোন লাইন খোলা রাখা হয়েছিল। প্রায় ২১ লক্ষ মানুষ জবাব দিয়েছেন সেখানে। ঠিক তার পরের দিনই নাম ঘোষণা করা হল।
মঙ্গলবার কেজরীবাল জানিয়েছেন, ফোনে ও হোয়াটসঅ্যাপে মানুষ যে রায় দিয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে ৯৭ শতাংশেরই পছন্দ ভগবন্ত মানকে। মাত্র ৩ শতাংশ বেছে নিয়েছেন কংগ্রেসের নভজ্যোত সিং সিধুকে। কেউ কেউ পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চান কেরজীবালকেও। মোহালির সভা থেকে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যে ভাবে মানুষ মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থীকে বেছে নিলেন, তাতে আপ যে পঞ্জাবের নির্বাচনে জয়ী হবে, তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।’
এবার নির্বাচনে আপই প্রথম মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থীর নাম ঘোষণা করল। গত বিধানসভা নির্বাচনে কোনও বিশেষ নাম ঘোষণা করা হয়নি। সূত্রের খবর, কৃষক নেতা বলবীর রাজেওয়ালের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছিল আপ। মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে ভাবা হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু কোনও অজ্ঞাত কারণে তাঁকে তালিকা থেকে বাদ রাখতে হয়।
পরপর দু বারের সাংসদ ভগবন্ত মান। আপের টিকিটে ২০১৪ ও ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে সাংগরুর কেন্দ্র থেকে জয়ী হন মান। বর্তমানে রাজনীতিতে তাঁর পরিচিতি বাড়লেও আদতে তিনি একজন জনপ্রিয় অভিনেতা।
কমেডি দিয়েই কেরিয়ার শুরু করেন তিনি। কলেজে পড়ার সময় কমেডি ফেস্টিভ্য়ালে অংশ নিয়ে দুটি সোনার মেডেল জেতেন তিনি। তারপর সেই অভিনয়কেই বেছে নেন মান। টেলিভিশনে ‘জুগনু কেন্দা হ্যায়’ নামে একটি কমেডি শো করতেন তিনি। পরে পঞ্জাবের একটি চ্য়ানেলে ‘জুগনু মস্ত মস্ত’ নামেও একটি শো করেছেন। অংশ নিয়েছিলেন ‘গ্রেট ইন্ডিয়ান লাফটার চ্যালেঞ্জে’। শুধু দেশে নয়, কানাডা ও ব্রিটেনের মাটিতেও কমেডি শো করে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন। একটি জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত ছবিতে অভিনয়ও করেন তিনি। আর এবার রাজনীতির ময়দানে তাঁর জনপ্রিয়তা পরখ করার লড়াই।