চণ্ডীগঢ়: আর দু-এক মাস বাদেই বিধানসভা নির্বাচন (Punjab Assembly Election 2022)। করোনা (COVID-19) আবহেই জোরকদমে চলছে নির্বাচনী প্রচার (Election Campaign)। এরইমাঝে পঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং(Amarinder Singh)-কে ফের একবার আক্রমণ করলেন পঞ্জাব কংগ্রেসের প্রধান নভজ্যোত সিং সিধু (Navjot Singh Sidhu)। মঙ্গলবার ভোটপ্রচারে বেরিয়ে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে ‘বিশ্বাসঘাতকে’র তকমা দিলেন তিনি।
সিধু-অমরিন্দরের বিরোধ কারোরই অজানা নয়। বিজেপি ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার পর থেকেই তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিংয়ের সঙ্গে ক্ষমতা নিয়ে টানাপোড়েন শুরু করেন নভজ্যোত সিং সিধু। শেষ অবধি বিরোধ এতটাই চরমে ওঠে যে, গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেন অমরিন্দর সিং। এরপর থেকেই তিনি দল, বিশেষত নভজ্যোত সিং সিধুর বিরুদ্ধে একের পর এক বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছেন। এ দিন ভোট প্রচারে বেরিয়ে সরাসরি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করে সিধু বলেন, “যখন আপনাদের ক্য়াপ্টেন (অমরিন্দর সিং) বিরোধীদের হাতের পুতুলে পরিণত হয়, তখন সে গদ্দারই (বিশ্বাসঘাতক)। আমরা দল থেকে বিশ্বাসঘাতককে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছি। উনি জ্বলে যাওয়া কার্তুজ।”
অমরিন্দর সিং নিজের নীতিকে বিক্রি করে দিয়েছেন, এই অভিযোগ এনে সিধু বলেন, “ক্যাপ্টেনকে বিক্রি হয়ে যাওয়া একজন মানুষ বলেই মনে হয়।”
আসন্ন নির্বাচনের মুখেই কংগ্রেসের অন্দরেই টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। প্রাক্তন ক্রিকেটার সিধু খোলামেলাই দল ও সরকারের সমালোচনাও করেছেন। সম্প্রতিই তিনি বলেছিলেন রাজ্য চরম আর্থিক সঙ্কটের মুখে পড়তে চলেছে। এ দিন এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “সিধু সমস্যা নিয়েই কথা বলে। আমরা চরম আর্থিক ঘাটতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। রাজ্যের বাজেট ১৪০ কোটি। তারমধ্যে ৭৫ কোটিই ঋণ। ২৫ হাজার কোটি টাকার সুদ রয়েছে তার উপর। এছাড়াও ১৮ হাজার কোটি চাকার মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে আগামী বছর।”
দলের সমালোচনা করার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “কতদিন আমরা দরজার আড়ালে থাকব? আগে ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংকেও এই বিষয়ে বলার চেষ্টা করেছি কিন্তু কোনও লাভই হয়নি।”
দলের বিরুদ্ধে মুখ খোলার পরই একাধিক নেতা মন্ত্রীর সঙ্গেও বিরোধে জড়িয়েছেন পঞ্জাব কংগ্রেস প্রধান। এদের মধ্যে অন্যতম হলেন পঞ্জাবের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুখজিন্দর সিং রানধাওয়া। এদিন সেই প্রসঙ্গ উঠলে সিধু বলেন, “আমি কি ওনার নাম নিয়েছি? আমার ধৈর্য্য দেখুন, আমি কারোর বিরুদ্ধে কথা বলিনি। কার বিরুদ্ধে কী বলেছি আমি বলুন? হাওয়ায় এইসব কথা বলে কোনও লাভ নেই।”
আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে দলের জয় নিয়ে নিশ্চিত নভজ্যোত সিং সিধু। এ দিন তিনি বলেন, “বিজেপি তো কোনওভাবেই জিতবে না। পঞ্জাবের আর্থ-সামাজিক দিকটি পঞ্জাবীয়তের সঙ্গেই জড়িত। বিজেপি বাদলদের বেছে নিয়েছে, আর সিধু পঞ্জাবকে বেছে নিয়েছে। সিধু ৬টা নির্বাচন জিতেছে, এ কথা মনে রাখা উচিত।”
বিজেপির পাশাপাশি আম আদমি পার্টিকেও আক্রমণ করতে ছাড়েননি নভজ্যোত সিং সিধু। তিনি বলেন, “অরবিন্দ কেজরীবাল ১৮ বছরের মেয়েদের হাজার টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে, ১৭ বছর বয়সীদের নয় কেন? এগুলো সবই রাজনৈতিক স্টান্ট।” অন্যদিকে, সম্প্রতি আপের তরফে সিধুর যে প্রশংসা করা হয়, সে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমার বিরুদ্ধে কিছুই বলার নেই ওনাদের। যদি কিছু থাকত, তবে আমার পিছনে ইডি লাগিয়ে দেওয়া হত।”