নয়া দিল্লি: ধর্মীয় উৎসবের মাঝেই পড়েছে নির্বাচনের দিন। ভোটবাক্সে এর প্রভাব পড়তে পারে, এই উদ্বেগ প্রকাশ করেই পঞ্জাবের বিধানসভা নির্বাচন এক সপ্তাহ পিছিয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিং চন্নি (Charanjit Singh Channi) থেকে শুরু করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। অবশেষে তাদের আর্জি শুনল জাতীয় নির্বাচন কমিশন (Election Commission of India)। পঞ্জাবের বিধানসভা নির্বাচন (Punjab Assembly Election 2022) পিছোনো সম্ভব কিনা, তা নিয়ে বৈঠকে বসছে নির্বাচন কমিশন, আজ দুপুরের মধ্য়েই এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে দেওয়া হবে।
আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি পঞ্জাবে বিধানসভা নির্বাচন (Punjab Assembly Election 2022)। ১১৭টি কেন্দ্রে এক দফাতেই ভোট গ্রহণ হবে। এদিকে, নির্বাচনের দুদিন পর অর্থাৎ ১৬ ফেব্রুয়ারি রয়েছে গুরু রবিদাস জয়ন্তী। এই সময় বহু মানুষ, বিশেষত জনজাতির মানুষেরা উত্তর প্রদেশের বারাণসীতে যান। পঞ্জাবের জনসংখ্যার প্রায় ৩২ শতাংশই জনজাতি সম্প্রদায়ভুক্ত হওয়ায়, তারাই যদি নির্বাচনের সময় উপস্থিত না থাকেন, তবে ভোটের হারও তুলনামূলকভাবে কম হবে। সেই কারণেই নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে কংগ্রেস থেকে বিজেপি, সমস্ত রাজনৈতিক দলই।
ভোট পিছোনোর আবেদন জানিয়ে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুশীল চন্দ্রকে গত শনিবারই চিঠি লিখেছেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিং চন্নি । সেই চিঠিতে তিনি গুরু রবিদাস জয়ন্তী উপলক্ষে জনজাতি সম্প্রদায়ের মানুষদের উত্তর প্রদেশের বারাণসীতে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন। রাজ্যের ৩২ শতাংশ জনগণই যে জনজাতি সম্প্রদায়ের, সে কথাও চিঠিতে উল্লেখ করেছেন চন্নি।
চিঠিতে তিনি লিখেছেন, “আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি গুরু রবিদাস জয়ন্তী। এই উপলক্ষে রাজ্যের বিশাল সংখ্যক জনগণ (প্রায় ২০ লাখ) প্রতিবছর ১০ থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি উত্তর প্রদেশের বারাণসীতে যান। এই পরিস্থিতিতে বহু মানুষই বিধানসভা নির্বাচনে তাদের ভোট দিতে পারবেন না, যা তাদের সাংবিধানিক অধিকার। ”
মুখ্যমন্ত্রী আরও লেখেন, “জনজাতি সম্প্রদায়ের মানুষেরাই অনুরোধ জানিয়েছেন যে নির্বাচনের দিনক্ষণ যাতে পিছিয়ে দেওয়া হয়। তাহলে তারা ১০ থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি বারাণসীতেও যেতে পারবেন এবং পরে ভোটও দিতে পারবেন। রাজ্যের ২০ লক্ষ মানুষ যাতে নিজেদের ভোটদানের অধিকার প্রয়োগ করতে পারে, তার জন্য কমপক্ষে ৬ দিন নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়াই শ্রেয়।”
এর আগে বহুজন সমাজ পার্টির তরফেও জসবীর সিং গারহি নির্বাচন কমিশনের কাছে একই কারণ দেখিয়ে ভোট ১৪ ফেব্রুয়ারির বদলে ২০ ফেব্রুয়ারি করার অনুরোধ জানিয়েছিলেন। অন্যদিকে, বিজেপি ও তাদের জোট সঙ্গীরাও নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার জন্য জাতীয় নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন জানিয়েছে। একই মত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিংয়েরও।
রবিবারই পঞ্জাব বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সুভাষ শর্মা মুখ্য নির্বাচন কমিশনারকে চিঠি দিয়ে বলেন, “রাজ্যে একটি বড় সংখ্যক জনগণই গুরু রবিদাসজীর অনুগামী। গুরুপূরব পালন করতে লক্ষাধিক মানুষ উত্তর প্রদেশের বারাণসীতে যান। ফলে তাদের পক্ষে নির্বাচনে অংশ নেওয়া সম্ভব নয়।”
আম আদমি পার্টির প্রধান ভগবন্ত মানও টুইট করে নির্বাচন কমিশনের কাছে পঞ্জাব বিধানসভা নির্বাচন এক সপ্তাহ পিছিয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।