চণ্ডীগঢ়: হাতে মাত্র আর তিনটে দিন। তারপরই শুরু হচ্ছে পঞ্জাব বিধানসভা নির্বাচন (Punjab Assembly Election 2022)। একদিকে যেমন ক্ষমতা ধরে রাখতে মরিয়া কংগ্রেস, অন্যদিকে গদি দখল করতে মরিয়া বিজেপি ও আম আদমি পার্টি। শেষ মুহূর্তের প্রচারে নেমেই নতুন করে বিতর্ক উসকে দিলেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিং চন্নি(Charanjit Singh Channi)। কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গান্ধী(Priyanka Gandhi)-কে পাশে নিয়েই নির্বাচনী প্রচারে নামেন তিনি। সেখানেই তিনি বলেন, “উত্তর প্রদেশ, বিহারের ভাইয়াদের ভাইয়াদের রাজ্যে ঢুকতে দেবেন না।”
মঙ্গলবার নির্বাচনী প্রচারে নেমে মুখ্যমন্ত্রী চন্নি বলেন, “প্রিয়ঙ্কা গান্ধী পঞ্জাবের পুত্রবধূ। পঞ্জাবেরই সদস্য উনি। দিল্লি, উত্তর প্রদেশ, বিহারের ভাইয়ারা এখানে এসে শাসন করতে পারে না। আমরা ইউপির ভাইয়াদের পঞ্জাবে ঢুকে শাসন করতে দিতে পারি না।”
ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর সেই বক্তব্য ভাইরাল হয়েছে। এরপরই উঠেছে সমালোচনার ঝড়। এমনিতেই পঞ্জাবের বিধানসভা নির্বাচনে একটি বড় ইস্যু হল চাকরিতে সংরক্ষণ। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে কংগ্রেসের তরফে দাবি করা হয়েছে যে তারা পুনরায় ক্ষমতায় এলে চাকরিতে পঞ্জাবীদের জন্য ১০০ শতাংশ সংরক্ষণই দেওয়া হবে। অন্যদিকে, বিজেপিও তাদের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে সরকারি চাকরিতে ৭৫ শতাংশ সংরক্ষণ ও বেসরকারি ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ সংরক্ষণের কথা বলা হয়েছে।
যেখানে সংরক্ষণের টোপ দিয়ে ভোট লাভ করতে মরিয়া রাজনৈতিক দলগুলি। সেখানেই রাজ্যের বহিরাগত তত্ত্ব টেনে এনে বিতর্কের সূত্রপাত করেছে কংগ্রেস, এমনটাই দাবি বিরোধী দলগুলির। পঞ্জাবের বিধানসভা নির্বাচনে তুলনামূলক নতুন প্রতিদ্বন্দ্বী আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরীবাল বলেন, “এটা অত্যন্ত লজ্জাজনক মন্তব্য। নির্দিষ্ট কোনও ব্যক্তি বা কোনও গোষ্ঠীকে উদ্দেশ্য করে এই মন্তব্যের আমরা তীব্র সমালোচনা করছি। আমাদের গোটা দেশই এক। উনি (চন্নি) আমায় কালা কালা বলেন। রাহুল গান্ধীও বলেছেন যে আমি নাকি জঙ্গি। চন্নির কথা অনুযায়ী তো প্রিয়ঙ্কা গান্ধীকেই পঞ্জাবে ঢুকতে দেওয়া উচিত নয়।” আপের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী ভগবন্ত সিং মান বলেন, “প্রিয়ঙ্কা গান্ধী পঞ্জাবের নয়, উনি উত্তর প্রদেশের বাসিন্দা।” সঙ্গে সঙ্গে কেজরীবাল বলে ওঠেন, “তার মানে উনিও ভাইয়া।”
অন্যদিকে, বিজেপির সাংসদ তেজস্বী সূর্যও ওই ভিডিয়ো শেয়ার করে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়েছেন। প্রিয়ঙ্কা গান্ধীকে নিশানা করে তিনি বলেন, “প্রিয়ঙ্কা গান্ধী উত্তর প্রদেশে যান, সেখানে গিয়ে নিজেকে উত্তর প্রদেশের মেয়ে বলে দাবি করেন। আর যখন উত্তর প্রদেশ-বিহারের মানুষদের পঞ্জাবে অপমান করা হয়, তখন উনি হাততালি দেন। এটাই ওনার দুমুখি পরিচয়।”
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরী ও বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র গৌরব ভাটিয়াও কংগ্রেস ও আপের বিরুদ্ধে বিভাজনের রাজনীতি করার অভিযোগ এনেছেন। গৌরব ভাটিয়া বলেন, “পঞ্জাবে প্রথম দলিত মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে পরিযায়ী শ্রমিকদের সম্পর্কে কথা বলথেন, তাতেই কংগ্রেসের চরিত্র বোঝা যায়। আরও বিস্ময়কর ঘটনা হল যখন চন্নি উত্তর প্রদেশ ও বিহারের মানুষদের কটাক্ষ করছিলেন, পাশে দাঁড়িয়ে প্রিয়ঙ্কা গান্ধী হাসছিলেন।”