চণ্ডীগঢ়: এ বিরোধ শেষ হওয়ার নয়! গত বছর অবধি একই রাজনৈতিক দলে ছিলেন, বিরোধিতা লেগেই ছিল বছরের পর বছর ধরে। বিরোধ চরমে উঠলে মুখ্যমন্ত্রী পদ ছেড়েই বেরিয়ে আসেন একজন। তবে নতুন দল তৈরি করেও মেটেনি ঝগড়া। বিধানসভা নির্বাচন আসতেই একে অপরকে ফের আক্রমণে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন তাঁরা। কথা হচ্ছে অমরিন্দর সিং (Amarinder Singh) ও নভজ্যোত সিং সিধুর (Navjot Singh Sidhu)। নির্বাচনের কয়েক সপ্তাহ আগেই ফের একবার নভজ্যোত সিংকে ‘মস্তিষ্কহীন’ বলে আক্রমণ করলেন পঞ্জাবের (Punjab) প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং। তাঁর দাবি, তিনি পাঁচ বছর আগেই দলনেত্রী সনিয়া গান্ধীকে সতর্ক করেছিলেন এই “অযোগ্য ব্যক্তি”কে দলে না নিতে।
রবিবারই নতুন দল পঞ্জাব লোক কংগ্রেসের প্রথম প্রার্থী তালিকার প্রকাশ করেন দলনেতা তথা পঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং। সেখানেই তিনি কংগ্রেস ও তাদের নেতাদের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ, আক্রমণ করেন। পঞ্জাবের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিং চন্নির বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিং চন্নি সহ বেশ কয়েকজন কংগ্রেস নেতা যে বেআইনি বালি খাদানের সঙ্গে জড়িত, এই সম্পর্কে একাধিকবার খবনর পেলেও আমি কোনও পদক্ষেপ করিনি কেবল দলের প্রতি ওদের আনুগত্যের কথা ভেবে। দলনেত্রী সনিয়া গান্ধীও এই বিষয়টি নিয়ে এগোতে বারণ করেছিলেন। আমি ওর (চরণজিৎ সিং চন্নি) বিরুদ্ধে ‘মিটু’ যৌন হেনস্থার মামলা নিয়েও কোনও কঠোর পদক্ষেপ করিনি।”
বিজেপি ও শিরোমণি আকালি দলের সঙ্গে জোট বেঁধে এই প্রথমবার নিজের নতুন দলকে নিয়ে নির্বাচনের ময়দানে নামছেন অমরিন্দর সিং। এই নির্বাচনে তিনি সিধুর বিরুদ্ধে লড়বেন কিনা, তা জানতে চাওয়া হলে ৭৯ বছর বয়সী অমরিন্দর সিং বলেন, “আমি আগেও বলেছি যে ওকে (নভজ্যোত সিং সিধু) কিছুতেই জিততে দেব না আমরা। কারণ ও সম্পূর্ণরূপে অযোগ্য একজন ব্যক্তি। পাঁচ বছর আগে যখন কংগ্রেস নেত্রী আমায় বলেছিলেন যে সিধু কেমন, তা পরখ করে দেখতে, সেই সময়ই আমি বলেছিলাম যে কংগ্রেসের সদস্য হওয়ার জন্য ও একেবারেই যোগ্য নয়। কিন্তু তারপরও ওনারা সিধুকে দলে আনেন।”
তিনি আরও বলেন, “প্রথম দিন থেকেই আমি বলে এসেছি যে ওই ব্যক্তির কোনও মস্তিষ্ক নেই। ও কেবল সময় নষ্ট করছে। যখন কংগ্রেস সভাপতি আমার কাছে জানতে চেয়েছিলেন যে দলের সঙ্গে সিধু কতটা সামজ্ঞস্য রাখে, তখনই আমি এই সমস্ত বিষয়গুলি জানিয়েছিলাম।”
সিধুকে ব্যক্তিগত স্তরেও আক্রমণ করে অমরিন্দর সিং বলেন, “দিল্লিতে একবার সিধু আমায় বলেছিল যে ও প্রতিদিন ৬ ঘণ্টা ধ্য়ান করে এবং ভগবানের সঙ্গে ১ ঘণ্টা কথা বলে। কৌতুহলবশে আমি যখন জিজ্ঞাসা করেছিলাম যে কী বিষয়ে ভগবানের সঙ্গে কথা বলে, তখন ও বলেছিল যেভাবে আমরা কথা বলছি , সেভাবেই ভগবানের সঙ্গেও কথা বলে। পরে আমি সনিয়া গান্ধীকেও জানিয়েছিলাম যে ও মানসিকভাবে স্থিতিশীল নয়। সিধুই একমাত্র মন্ত্রী, যাকে আমি অযোগ্যতার কারণে পদ থেকে সরিয়েছিলাম। ও নিজের ফাইলটুকুও সামলাতো না।”
দ্বিতীয় দফায় শেষ সাড়ে চার বছরে তিনি নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির ৯২ শতাংশই পূরণ করেছেন বলে দাবি করেন অমরিন্দর সিং। তিনি বলেন, “কী ভুল করেছিলাম আমি বলুন? ওরা যদি আমায় আগে ইস্তফা দিতে বলত, তবে তাই করতাম। ওই দিনও সকালে আমায় কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে ইস্তফা দিতে বলা হয়, আমি বিকেলের মধ্যেই ইস্তফা দিই।”