এলাহাবাদ : দেশে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে ওমিক্রন (Omicron Variant)। সংক্রমণ ইতিমধ্যেই দুশো পার করে গিয়েছে। শনিবার থেকে উত্তর প্রদেশে (Uttar Pradesh) ফের শুরু হচ্ছে নৈশকালীন কারফিউ (Night Curfew)। এদিকে ওমিক্রন নিয়ন্ত্রণে আনতে কড়া পদক্ষেপ করার বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে (PM Narendra Modi) জানিয়েছে এলাহাবাদ হাইকোর্ট (Allahabad High Court)। পরিস্থিতির গুরুত্ব বিচার করে মিছিল, জনসভা এবং নির্বাচন যাতে আপাতত বন্ধ রাখা হয়, সেই কথাটিও বিবেচনা করতে বলা হয়েছে।
এলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি শেখর কুমার যাদব,আদালতের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে পরিস্থিতি মোকাবিলায় নিয়ম প্রণয়নের আহ্বান জানিয়ে বলেন, “উত্তর প্রদেশের বিধানসভার নির্বাচন এগিয়ে আসছে। রাজনৈতিক দলগুলি সমাবেশ করছে। জনসভা হচ্ছে এবং লাখো মানুষের সমাগম হচ্ছে। এই ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে কোভিড প্রোটোকল পালন করা সম্ভব নয়। যদি সময়মতো এটি বন্ধ করা না হয়, তবে তার ফলাফল দ্বিতীয় ঢেউয়ের চেয়ে আরও ভয়ঙ্কর হবে।”
এলাহাবাদ হাইকোর্ট বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় সরকার এবং নির্বাচন কমিশনকে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের ক্রমবর্ধমান সংক্রমণের মধ্যে ভোটমুখী রাজ্যগুলিতে রাজনৈতিক সমাবেশ বন্ধ করার বিষয়টি বিবেচনা করার কথা জানিয়েছে। বিচারপতি শেখর কুমার যাদবের একটি বেঞ্চ, এক ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্তের জামিন আবেদন মঞ্জুর করার সময় বলে, “ওমিক্রন সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে এবং তৃতীয় ঢেউয়ের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।” হাইকোর্ট তার পর্যবেক্ষণে জানিয়েছে, কোভিড প্রোটোকল অনুসরণ করে এবং শারীরিক দূরত্ববিধি মেনে নির্বাচনী সমাবেশে কোনওভাবেই সম্ভব নয়। আদালত সেই সঙ্গে আরও স্মরণ করিয়ে দিয়েছে, চিন, নেদারল্যান্ডস এবং জার্মানির মতো দেশগুলি ক্রমবর্ধমান সংক্রমণের কারণে সম্পূর্ণ বা আংশিক লকডাউনের পথে ফিরেছে।
এর পাশাপাশি দেশের করোনা পরিস্থিতির মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এখনও পর্যন্ত যে যে ভূমিকা নিয়েছেন, তারও যথেষ্ট প্রশংসা করেন বিচারপতি শেখর কুমার যাদব। তিনি আরও বলেন, “আমাদের প্রধানমন্ত্রী এত বিশাল জনসংখ্যার দেশে করোনাকে নির্মূল করতে টিকা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। এটি সত্যিই প্রশংসনীয় এবং আদালত এটির প্রশংসা করে। আমরা প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করছি কড়া পদক্ষেপ করার জন্য এবং বর্তমানের ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে রাজনৈতিক সমাবেশ ও নির্বাচন স্থগিত রাখার কথা বিবেচনা করার জন্য বলা হচ্ছে। সবার আগে মানুষের জীবন, তারপর সব।”
আদালত তার পর্যবেক্ষণে বলেছে, উত্তর প্রদেশের গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচন এবং পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচন দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় সংক্রমণের হার আরও বাড়িয়ে দিয়েছিল। করোনা ভাইরাসে লক্ষাধিক লোক সংক্রমিত হয়েছিলেন এবং অনেক মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছিলেন। এই পরিস্থিতিতে হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, “সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলি সমাবেশ এবং সভা করে লক্ষাধিক লোককে একত্রিত করছে। এখানে সামাজিক দূরত্ব সহ অন্যান্য কোভিড প্রোটোকল অনুসরণ করা সম্ভব নয়।”
যদি বর্তমানের উত্তর প্রদেশের নির্বাচনী প্রচার সময়মতো বন্ধ না করা হয়, তাহলে এর পরিণতি অতিমারির দ্বিতীয় ঢেউয়ের থেকেও ভয়াবহ হতে পারে বলে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।