Uttar Pradesh Assembly Election Result 2022: তিন দশক ধরে উত্তর প্রদেশে ক্রমেই আলগা হচ্ছে কংগ্রেসের জমি! গান্ধী পরিবারের ব্র্যান্ড ভ্যালু নিয়ে উঠছে প্রশ্ন
Uttar Pradesh Congress: প্রিয়ঙ্কা গান্ধী এবারের নির্বাচনের আগে উত্তর প্রদেশে সব মিলিয়ে ২০৯ টি সভা ও রোড শো করেছেন। উত্তর প্রদেশের নির্বাচনী প্রচারে এমন সক্রিয়তা আরও কোনও দলের কোনও প্রথম সারির হেভিওয়েট নেতার মধ্যেই দেখা যায়নি।
লখনউ : এখনও পর্যন্ত মাত্র দুটি আসনে কোনওরকমে ধুঁকছে কংগ্রেস (Congress)। বাকি কোথাও দাঁত ফোঁটাতে পারেনি। প্রিয়ঙ্কা গান্ধীর (Priyanka Gandhi) ঝাঁঝালো প্রচারেও কাজে দিল না শেষ পর্যন্ত। উত্তর প্রদেশের (Uttar Pradesh Assembly Election Result 2022) মাটিতে এমন ভয়ঙ্কর ফল যে হতে, তা হয়ত কোনও দুঃস্বপ্নেও ভাবতে পারেনি কংগ্রেস। ধুলিস্যাৎ হয়ে গিয়েছে গান্ধী পরিবারের ‘ব্র্যান্ড ভ্যালু’। প্রিয়ঙ্কা গান্ধী এবারের নির্বাচনের আগে উত্তর প্রদেশে সব মিলিয়ে ২০৯ টি সভা ও রোড শো করেছেন। উত্তর প্রদেশের নির্বাচনী প্রচারে এমন সক্রিয়তা আরও কোনও দলের কোনও প্রথম সারির হেভিওয়েট নেতার মধ্যেই দেখা যায়নি। উত্তর প্রদেশের বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ২০৩ টি নির্বাচনী কর্মসূচি করেছেন। কিন্তু এত কিছুর পরেও শেষ পর্যন্ত কংগ্রেসের ডুবন্ত তরী আরও ডুবে গেল উত্তর প্রদেশে।
‘ব্যর্থ’ প্রিয়ঙ্কা, প্রশ্নের মুখে গান্ধী পরিবারের ব্র্যান্ড ভ্যালু
উত্তর প্রদেশের নির্বাচনে প্রিয়ঙ্কা গান্ধী যে সক্রিয়তা দেখিয়েছেন, তাতে অনেকেই মনে করেছিলেন পদ্ম শিবিরকে চ্যালেঞ্জ জানাতে তৈরি কংগ্রেস। মহিলা ভোটারদের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুকে হাতিয়ার করেছিলেন, ভিড়ও টেনেছিলেন, কিন্তু সেই ভিড় শেষ পর্যন্ত ইভিএম পর্যন্ত টেনে নিয়ে যেতে পারলেন না প্রিয়ঙ্কা। কংগ্রেসের অন্দরে রাহুল গান্ধীর ভূমিকা নিয়ে এর আগে বিপক্ষ শিবিরের থেকে বিভিন্ন কটাক্ষ উড়ে এসেছে। এবার প্রিয়ঙ্কা গান্ধীর জন্যও তেমন কিছু হবে না তো? এমন প্রশ্ন ইতিমধ্যেই ঘুরপাক খেতে শুরু করেছে। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একটি বড় অংশ মনে করছেন, গান্ধী পরিবারের ব্র্যান্ড ভ্যালু এখন হু হু করে কমতে শুরু করেছে উত্তর প্রদেশের মাটিতে।
উত্তর প্রদেশে বহুদিন ধরেই জমি হারাচ্ছে কংগ্রেস
উত্তর প্রদেশে কংগ্রেসের এই ভরাডুবি আজকের নয়। অতীতের নির্বাচনী পরিসংখ্যান বলছে, দীর্ঘদিন ধরেই উত্তর প্রদেশে কংগ্রেসের পায়ের তলার মাটি আলগা হয়ে গিয়েছে। ১৯৮৫ সালের থেকেই কংগ্রেসের ভোট ব্যাঙ্কে ধস নামতে শুরু করেছিল, এবং সেই সঙ্গে গেরুয়া শিবিরের শক্তি বাড়তে শুরু করেছিল একটু একটু করে। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে কংগ্রেসকে ছাপিয়ে উত্তর প্রদেশের ক্ষমতায় উঠে এসেছিল বিজেপি। মাঝে অবশ্য বহুজন সমাজ পার্টি, সমাজবাদী পার্টির মতো আঞ্চলিক দলগুলিও দাপট দেখিয়েছে, কিন্তু সেখানেও লড়াই ছিল মূলত বিজেপির সঙ্গে। কংগ্রেসের শক্তি ক্রমেই আরও কমেছে সেই থেকে।
সোনিয়া নিজে জিতলেও উত্তর প্রদেশ ধরে রাখতে পারেননি
এছাড়া সোনিয়া গান্ধী যখন দায়িত্ব সামলেছেন, তখনও রায়বেরেলির নিজের আসন ধরে রাখতে পারলেও, দলের উত্তর প্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলে সেভাবে প্রভাব ফেলতে পারেননি তিনি। ২০০২ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ৪০৩ টি আসনের মধ্যে ২৫ আসন দখলে রাখতে পেরেছিল কংগ্রেস। ২০০৭ সালের উত্তর প্রদেশের ভোটে তা আরও কমে ২২ আসন হয়েছিল।
২০১২ সালে ব্যর্থ হয়েছিলেন রাহুলও
উল্লেখ্য, মাঝে রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বেও উত্তর প্রদেশে খুব একটা ভাল ফল করতে পারেনি কংগ্রেস শিবির। ২০১২ সালের বিধানসভা নির্বাচনে উত্তর প্রদেশে কংগ্রেসকে ভোট বৈতরণী পার করানোর দায়িত্বে ছিলেন রাহুল গান্ধী। প্রায় দুই মাস ধরে ২০০ টি সভা করেছিলেন। কিন্তু তারপরও ৩৫৫ টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে মাত্র ২৮ টি আসনে জয়ের মুখ দেখতে পেরেছিল কংগ্রেস। অবস্থা এতটাই খারাপ ছিল, যে আসনের নিরিখে সবার শেষে ছিল কংগ্রেস, চতুর্থ স্থানে।