উত্তর প্রদেশ : বিধানসভা নির্বাচন আসন্ন উত্তর প্রদেশে। আর সেই নির্বাচনকে সামনে রেখে দলিত ভোটব্যাঙ্ককে যে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে, বিজেপির প্রার্থী তালিকা থেকে তা স্পষ্ট। শনিবার গেরুয়া শিবিরের তরফে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। আর সেই তালিকায় রয়েছে বেশ কিছু চমক। তালিকায় থাকা মোট প্রার্থীর মধ্যে ৬০ শতাংশ অনগ্রসর শ্রেণির প্রতিনিধি বলে জানানো হয়েছে বিজেপির তরফে।
মোট ১০৭ জনের নাম প্রকাশ করা হয়েছে। তার মধ্যে ৪৪ জন ওবিসি ও ১৯ জন তফশিলি জাতির প্রতিনিধি। এ ছাড়া তালিকায় রয়েছেন ১০ জন মহিলা। যে সব আসন ওবিসি বা তফশিলি জাতির প্রতিনিধিদে জন্য সংরক্ষিত নয়, সেই সব আসনেও ওই প্রতিনিধিদের টিকিট দেওয়া হয়েছে। পুরনো বিধায়কদের পাশাপাশি, ২১টি নতুন নাম রয়েছে সেই তালিকায়।
সদ্য বিজেপি ছেড়েছেন যোগী আদিত্যনাথ সরকারের তিন মন্ত্রী, যাঁরা ওবিসির প্রতিনিধি ছিলেন। এরপরই প্রশ্ন ওঠে, তবে কি পিছিয়ে পড়া শ্রেণির মানুষকে সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ যোগী সরকার, সম্ভবত, সেই ক্ষেত্রে ভাবমূর্তি বজায় রাখতেই প্রার্থী তালিকায় এই চমক দিয়েছে গেরুয়া শিবির।
এ ছাড়া বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ প্রার্থী হচ্ছেন গোরক্ষপুর থেকে। এর আগে কানাঘুষো শোনা গিয়েছিল, মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্য়নাথ অযোধ্যা বা মথুরা থেকে বিজেপি প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে লড়তে পারেন। বাকি রাজনৈতিক দলগুলিও সেই মতো নিজেদের প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ শুরু করে দিয়েছিল। তবে সকলকে চমকে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর জন্য গোরক্ষপুর কেন্দ্রই বেছে নেওয়া হল পদ্ম শিবিরের তরফে। ১৯৯৮ সাল থেকে টানা ৫ বার এই গোরক্ষপুর কেন্দ্র থেকেই তিনি প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়েছেন এবং প্রতিবারই বিপুল ভোটে জয়ীও হয়েছেন। সুতরাং গোরক্ষপুরকে তাঁর ঘরের ময়দান বলাই চলে।
শনিবার বিজেপির তরফে উত্তর প্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনের প্রথম দুটি দফার প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হয়। প্রথম দফায় যে ৫৮টি কেন্দ্রে নির্বাচন হওয়ার কথা, তারমধ্যে ৫৭টি কেন্দ্রেই প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে বিজেপি। অন্যদিকে, দ্বিতীয় দফায় ৫৫টি কেন্দ্রের মধ্য়ে ৪৮টি কেন্দ্রের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে।
এ দিকে, বিগত কয়েক দিন ধরে উত্তর প্রদেশের রাজনীতিতে তোলপাড়। শুরু হয়েছে দল বদলের হিড়িক। মঙ্গলবার থেকেই যোগীরাজ্যে শুরু হয় ইস্তফার পালা। শ্রমমন্ত্রী স্বামী প্রসাদ মৌর্য্যের হাত ধরে শুরু সেই পর্ব। বিজেপি ছাড়ার ঘোষণা করে তিনি জানান, অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টিতে যোগদান করবেন। এরপর বিজেপি দল থেকে ইস্তফা দেন আয়ুষ মন্ত্রী ধর্মসিং সাইনি ও দারা সিং চৌহান। বিজেপি বিধায়ক অবতার সিং ভাদানাও বিজেপি ছেড়ে রাষ্ট্রীয় লোক দলে যোগদান করার কথা জানান। স্বামী প্রসাদ মৌর্য্যকে সমর্থন দেখিয়ে আরও তিন বিধায়কও দল ছেড়েছেন, তারাও সমাজবাদী পার্টিতেই যোগদান করতে পারেন। বিনয় শাক্য, মুকেশ ভর্মা ও বালা অবস্তিও বিজেপি ছেড়েছেন।