লখনউ: উত্তর প্রদেশে চলছে বিধানসভা নির্বাচন (Uttar Pradesh Assembly Election 2022)। ইতিমধ্যেই তিন দফা ভোট গ্রহণ হয়ে গিয়েছে। বাকি আরও চার দফা নির্বাচন বাকি। রবিবারই রাজ্যে তৃতীয় দফার ভোট গ্রহণ ছিল। এবারের নির্বাচনে কংগ্রেস নারীশক্তির উপরই জোর দেওয়া হয়েছে। তাদের প্রচারের স্লোগান, “লড়কি হু, লড় সকতি হু”। নির্বাচনের দিনই ফের একবার দলিত নির্যাতিতার পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে কংগ্রেসের সেই নারীশক্তির বার্তাই তুলে ধরলেন দলের নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গান্ধী(Priyanka Gandhi)। রবিবার তিনি উন্নাওয়ে (Unnao) দলিত নির্যাতিতা তরুণীর সঙ্গে গিয়ে দেখা করেন। উল্লেখ্য, নির্বাচনের ঠিক আগেই সমাজবাদী পার্টির প্রাক্তন মন্ত্রীর ছেলের রাজোল সিংয়ের জমি থেকে ওই তরুণীর দেহ উদ্ধার করা হয়।
রবিবার প্রিয়ঙ্কা গান্ধী উন্নাওয়ের নির্যাতিতার বাড়িতে গিয়ে দেখা করেন। সেখানে তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, “ওনারা সাহায্য চান না, বরং সুবিচার চান”। নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে কথা বলে ঘটনার পূর্ণ বিবরণ জেনে তিনি বলেন, “পরিবারে তরফে বলা হচ্ছে যে তাদের কাছে যে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে, তা ভুয়ো। দু’বার ময়নাতদন্ত করা হয়েছে, দু’বারের রিপোর্টেই ভিন্ন তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। পরিবারের দাবি, গোটা ঘটনার সঙ্গে কয়েকজন পুলিশকর্মীও জড়িত।”
উল্লেখ্য, এর আগেও প্রিয়ঙ্কা গান্ধী উন্নাওয়ের ওই নির্যাতিতার মায়ের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। সেই সময়ও তিনি পাশে থাকার ও সহযোগিতার কথা বলেছিলেন। সেই সময়ই তিনি বলেছিলেন যে সুযোগ পেলেই ওনার সঙ্গে দেখা করতে যাবেন। সেই প্রতিশ্রুতিই পূরণ করে রবিবার তিনি ওই নির্যাতিতার পরিবারের তিনি দেখা করেন।
কংগ্রেসের নির্বাচনী কমিটির ইনচার্জ পিএল পুনিয়াও সম্প্রতিই নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। সেই সময় তিনি বলেছিলেন, “গোটা ঘটনায় পুলিশও জড়িত রয়েছে। নির্যাতিতার মা বারংবার অভিযোগ জানানোর পরও সঠিক সময়ে অভিযোগ দায়ের করা হয়নি এবং তদন্তও শুরু করা হয়নি।”
চলতি মাসের শুরুতেই সমাজবাদী পার্টির নেতা তথা প্রাক্তন মন্ত্রী ফতেহ বাহাদুর সিংয়ের পুত্র রাজোল সিংয়ের জমি থেকে ২২ বছরের দলিত তরুণীর দেহ উদ্ধার করা হয়। জানা গিয়েছে, দুই মাস আগে অর্থাৎ ডিসেম্বর মাসে ওই তরুণী নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন। মৃতার মায়ের অভিযোগ, প্রয়াত প্রাক্তন মন্ত্রীর ছেলেই জোর করে তাঁর মেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে গিয়েছিল। তিনি গত বছরের ৮ ডিসেম্বর স্থানীয় থানায় এফআইআর-ও দায়ের করেন। এরপর তিনি পুলিশ প্রশাসনের দরজায় ঘুরলেও কোনও সদুত্তর পাননি।
ওই মহিলার আরও দাবি, তিনি আগেই পুলিশকে জানিয়ে ছিলেন যে তাঁর মেয়ের নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার পিছনে রাজোল সিংয়ের ছেলে জড়িত রয়েছে, কিন্তু সেই সময় কেউ তাঁর কথা শোনেননি। গত ২৪ জানুয়ারি তিনি লখনউয়ে অখিলেশ যাদবের গাড়ির সামনে ঝাঁপ দিয়ে পথ আটকানোর চেষ্টা করেছিলেন।
গত ১০ ফেব্রুয়ারি সদর কোতওয়ালি পুলিশের এসডব্লুএটি দল উন্নাওয়ের ওই ঘটনাস্থলে যায় এবং মাটি খুঁড়ে ওই তরুণীর দেহ উদ্ধার করা হয়। জানা গিয়েছে, একটি কম্বলে মুড়িয়ে তাঁর দেহ সেপটিক ট্যাঙ্কে ফেলে দেওয়া হয়েছিল, প্রায় চার মিটার গভীর থেকে উদ্ধাক করা হয়েছিল ওই দেহ। ময়নাতদন্তে জানা গিয়েছে, ওই তরুণীকে গলা টিপে হত্যা করা হয়েছিল। তাঁর ঘাড়ও ভেঙে গিয়েছিল।