দেরাদুন: বঙ্গে বিধানসভা উপনির্বাচনে কার্যত ভরাডুবি হয়েছে বিজেপির। মাস খানেক আগে রাজ্যে গেরুয়া বিধায়কের সংখ্যা ৩ থেকে বেড়ে ৭৭ হয়েছিল, কিন্তু উপনির্বাচনে আবারও কুপোকাত। তবে বাংলাকে নিয়ে এখনও আশা রাখছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। উত্তরাখণ্ডের নির্বাচনী প্রচারেও এবার বঙ্গ রাজনীতির প্রসঙ্গ উস্কে দিলেন জে পি নাড্ডা। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা আজ বঙ্গের রাজনীতি প্রসঙ্গে বলেন, “তৃণমূলের শাসনকালে বাংলা এক অত্যন্ত খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। আজ বাংলা দুর্নীতি, খুনোখুনি এবং অরাজকতার সমার্থক শব্দে পরিণত হয়েছে তৃণমূলের শাসনে।”
সামনেই উত্তরাখণ্ডে বিধানসভা নির্বাচন। হাতে আর কয়েক মাস বাকি। আর এবার উত্তরাখণ্ড ফের একবার নিজেদের দখলে রাখতে চাইছে বিজেপি। দেবভূমি উত্তরাখণ্ডে বসবাসকারী বাঙালির সংখ্যাটা নেহাৎ কম নয়। এমন অনেক বাঙালি রয়েছেন, যাঁরা পাকাপাকিভাবে উত্তরাখণ্ডের বাসিন্দা, সেখানকার ভোটার। আর সেই কথা মাথায় রেখে, ফের একবার বঙ্গ রাজনীতির সাম্প্রতিক পরিস্থিতির কথা উস্কে দিলেন নাড্ডা। তাঁর নিশানা ছিল বাঙালি ভাবাবেগ। বুঝিয়ে দিলেন, পরাজয়ের পরেও বাংলাকে ভোলেনি বিজেপি। একসঙ্গে বাংলায় যে লড়াই এখনও জারি রয়েছে, সেই বার্তাও দিলেন তিনি।
আজ উত্তরাখণ্ডের উধম সিং নগর জেলার রুদ্রপুরে বসবাসকারী বাঙালিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “একটা সময় ছিল যখন বাংলা গোটা দেশকে পথ দেখাত। কিন্তু আজ বাংলা এক কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে।” তাঁর কথায়, একসময় বাংলার নাম উঠলে মাথায় আসত একের পর এক মণীষিদের নাম। কত সমাজ সংস্কারক, দার্শনিক, কবি, সাহিত্যিক, দেশপ্রেমীর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বাংলার নাম। আর সেই বাংলাই আজ তৃণমূলের শাসনে দুর্নীতি, খুনোখুনি আর নৈরাজ্যের কেন্দ্র হয়ে উঠেছে।
বাংলার এ কাল ও সে কালের ফারাক তুলে ধরতে রাজা রামমোহন রায়, ঋষি অরবিন্দ, স্বামী বিবেকানন্দ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বঙ্কিম চন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, সুভাষ চন্দ্র বসু এবং জন সংঘের প্রতিষ্ঠাতা শ্যামা প্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গও তুলে ধরেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা।
নাড্ডা বলেন, “আজ পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল নেতারা প্রত্যেক প্রকল্পের সঙ্গে দুর্নীতিতে জড়িয়ে রয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনা নিয়েও দুর্নীতি চলছে সেখানে। পশ্চিমবঙ্গে খুন, ধর্ষণ, মহিলাদের উপর অত্যাচার, পাচার এবং মহিলাদের যৌন হেনস্থা দিন দিন বাড়ছে।”
বিজেপি নেতার দাবি, পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর থেকে সেখানে ১২৩ টি যৌন হেনস্থার ঘটনা ঘটেছে। খুন হয়েছেন ৫৩ জন। মানুষ ভয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছে। বিজেপি এমন ১৯১ জন শরনার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে বলে দাবি করেন নাড্ডা।
উত্তরাখণ্ডের বাঙালিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, প্রথমে উত্তরাখণ্ডের নির্বাচনে আবারও বিজেপিকে জেতানোর জন্য। তারপর পশ্চিমবঙ্গেও বিজেপিকে জেতানোর অনুরোধ করেন, যাতে বঙ্গের এই ‘করুণ’ পরিস্থিতির বদল হয়।