শিশির থেকে শিক্ষা! মোদীর মঞ্চ কেন এড়ালেন দিব্যেন্দু?

প্রশ্ন ওঠা শুরু হয়েছে, যার বাবা ও দুই ভাই ভিতরে ও বাইরে সবুজ ছেড়ে গেরুয়া হয়ে গিয়েছেন, তিনি কেন নিজের রাজনৈতিক প্রতীক বদল করলেন না?

শিশির থেকে শিক্ষা! মোদীর মঞ্চ কেন এড়ালেন দিব্যেন্দু?
ছবি- টুইটার
Follow Us:
| Updated on: Mar 24, 2021 | 4:50 PM

পশ্চিম মেদিনীপুর: প্রেক্ষাপট তৈরি ছিল। প্রস্তুতিও ছিল তুঙ্গে। ২১ মার্চ অমিত শাহের মঞ্চে নিজেকে ‘মনে প্রাণে বিজেপি’ বলেছিলেন শিশির অধিকারী (Sisir Adhikari)। কাঁথিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (Narendra Modi) সভাস্থলে এ দিন অধিকারী পরিবারের আরেক রাজনীতিক সদস্যেরও গৈরিকিকরণ হতে চলেছে, এটা ধরেই নিয়েছিলেন রাজনৈতিক মহলের একটি বড় অংশ। কিন্তু, নির্ধারিত সময় ঘর থেকে বেরিয়েও মোদীর মঞ্চের দিকে ঘুরল না তমলুকের তৃণমূল সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারীর (Dibyendu Adhikari) গাড়ির চাকা। কিছুটা অপ্রত্যাশিত এই ঘটনায় গোটা জল্পনাটাই অন্যদিকে মোড় নিয়েছে। প্রশ্ন ওঠা শুরু হয়েছে, যার বাবা ও দুই ভাই ভিতরে ও বাইরে সবুজ ছেড়ে গেরুয়া হয়ে গিয়েছেন, তিনি কেন নিজের রাজনৈতিক প্রতীক বদল করলেন না?

বুধবার সকাল থেকেই পূর্ব মেদিনীপুরে রাজনৈতিক মহলে উত্তেজনা ছিল চরমে। শিশিরবাবু যে মোদীর উপস্থিত থাকবেন তা আগে থেকেই জানা ছিল। কিন্তু, যাবতীয় আগ্রহ ছিল শুভেন্দুর দাদা দিব্যেন্দুকে ঘিরে। যখন অধিকারী পরিবারের একের পর এক গাড়ির চাকা সভাস্থলের অভিমুখে ঘুরে যায়। তখন দিব্যেন্দু একই সময়েই বাড়ি থেকে বের হন। মোদীর সভায় যাচ্ছেন? প্রশ্ন করলে কিছুটা হেঁয়ালির সুরে জবাব দেন, “দেখুন না কী হয়।” শেষ পর্যন্ত যদিও মোদীর সভায় যাননি দিব্যেন্দু। বাড়ি থেকে বেরিয়ে চলে যান নিজের দফতরে। ফলে কী কারণে তিনি বিজেপির সভা এড়িয়ে গেলেন, তা নিয়ে কৌতূহল চরমে উঠেছে রাজ্য রাজনীতিতে।

অধিকারী পরিবারের ঘনিষ্ঠদের অবশ্য দাবি, তমলুকের সাংসদও স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব এবং গেরুয়া শিবিরের হাইকমান্ডের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছেন। তা সত্ত্বেও সরাসরি বিজেপিতে যোগ না দিয়ে তিনি একপ্রকার কৌশলী অবস্থানই নিতে চেয়েছেন। বিশেষ করে শিশির অধিকারী বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর তৃণমূল যেভাবে কড়া প্রতিক্রিয়া জানায়, তাতে আরও সাবধানী হয়ে ‘শিক্ষা’ নিয়েছেন দিব্যেন্দু। কেননা, দলত্যাগ না করে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার কারণে শিশিরবাবুর সাংসদ পদ বাতিল করার দাবিতে স্পিকারের কাছে চিঠি দেবে বলে জানিয়েছে তৃণমূল।

আরও পড়ুন: ‘পাকিস্তানকে প্রেমপত্র লিখছেন মোদী’, প্রধানমন্ত্রীর চিঠি হাতে নন্দীগ্রামে তোপ অভিষেকের

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, এই মুহূর্তে সরাসরি বিজেপিতে যোগদান এড়িয়ে যাওয়ার একাধিক কারণ রয়েছে দিব্যেন্দুর। প্রথমত, তিনিও শিশিরের মতো বিজেপিতে যোগ দিলে তাঁর প্রার্থীপদ খোয়ানোর সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে। দ্বিতীয়ত, এই সময় বিজেপিতে যোগ দিলেও নতুন করে প্রার্থী হতে পারবেন না দিব্যেন্দু। তৃতীয়ত, গুরুত্বপূর্ণ কোনও পদও পাবেন কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে।

পক্ষান্তরে, শিশিরবাবু নিজের রাজনৈতিক জীবনের সায়াহ্নে রয়েছেন বললে ভুল হবে না। তাঁর বর্তমানে কিছু পাওয়ার বা হারানোর নেই। সেই কারণে এখন ছেলের হাত শক্ত করতে শুভেন্দুর পাশেই থাকছেন তিনি। অন্যদিকে, দিব্যেন্দুর অনেক কিছুই হারানোর রয়েছেন। গেরুয়া শিবিরে গেলে কী পাবেন তা নিয়েও রয়েছে সংশয়। সেই কারণে ২ মে ফলাফল দেখার আগে পর্যন্ত ‘ধরি মাছ না ছুঁই’ পানি করে তৃণমূলেই থেকে যাচ্ছেন দিব্যেন্দু।

আরও পড়ুন: ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ব্ল্যাকমেল করেছেন অনুব্রত’, বন্ধ ঘরের কর্মিসভায় বিস্ফোরক ফিরহাদের ভিডিয়ো ভাইরাল