রবিবারের ভোটবঙ্গে প্রচারে দুই মুখ্যমন্ত্রীর লড়াই। খানাকুলে যোগী বনাম মমতা। খানাকুলের সভায় দাঁড়িয়ে মোদী-শাহকে বিঁধলেন মমতা। সঙ্গে বললেন, “মা বোনেদের সম্মান জানানো সবচেয়ে বড় কাজ। যা রাজা রামমোহন রায়, বিদ্যাসাগর করে গিয়েছেন, সেই কাজটা আমরাও করছি। ” পুরশুড়ার সভা থেকে মমতা তুললেন বিস্ফোরক অভিযোগ। বললেন, “বাংলার পুলিশকে এখন দায়িত্ব দিচ্ছে না। দেখে দেখে বলছে, গুজরাটে কে মোদী রয়েছে? গুজরাটের কে সিং রয়েছে? কে শাহ আছে? তাদের দেখে দেখে পুলিশের দায়িত্ব দিচ্ছে!” পুলিশকে এক হাত নেন মমতা। বারুইপুর পশ্চিমের সভা থেকে বলেন, “বাংলার অনেক পুলিশকে দেখছি রূপ বদলাচ্ছে, কার কত প্রমোশন হল, লক্ষ্য রাখব।” সিআরপিএফ প্রসঙ্গে মমতা বললেন, “একটা কম্যান্ডো, বড় বড় গোঁফ। আমাকে বলল, ‘ইধর সে হটো’, আমি বললাম, ‘ইয়ে কউন হ্যয় রে? কউন কিসকো ভাগায়ে গা, ভাগো ইধর সে…” দেখুন সব লাইভ আপডেট…
আমার একদিকে লাভলি, আরেকদিকে ফিরদৌসি। একই বৃন্তে দু’টি কুসুম হিন্দু-মুসলমান। একজন তার নয়নমণি, হিন্দু তাহার প্রাণ। ফিরদৌসি ভাল কাজ করে, লাভলিকে দিয়ে আমি কাজ করিয়ে নেব। চিন্তা করবেন না।
কী একটা ছোট্ট বল নিয়ে এসেছিস ভাই! বড় বলটা আনতে পারিসনি? বড় বল তো চাই, লোকে দেখতে পাবে না তো। এটা কে ডিউজ বল না কি বলে? এটা ক্রিকেটের বল? এটা তো ডিউজ বল। মাথা ফাটবে ভাই। কার মাথা ফাটবে, তখন আমায় ধরবে, তা হবে না। একজন সামনে এসো, হাতে দিয়ে দিই। আমি বলটল চিনি। কে লুফবে? চলে আয়, আবার আমার নামে কেস হয়ে যাবে তা হলে।
যদি মনে কর কয়েকটা মীরজাফর গদ্দারকে নিয়ে, তাদের বাঙালি পরিচয়ে তুমি বলবে বঙ্গাল কো সুনার বাংলা বানায়েঙ্গে, বাংলাটাও বলতে পারে না। সোনার বাংলাও বলতে পারে না। কিচ্ছু জানে না, ভারতবর্ষের কোথায় কী আছে কিচ্ছু জানে না। কংগ্রেসের মতো একটা অপদার্থ দল পারেনি। জোর করে পুলওয়ামা দেখিয়ে, দেশপ্রেম দেখিয়ে, ভোট এলেই তখন পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধ নিয়ে পড়ে। তখন পুলওয়ামা নিয়ে নিজেই নিজের সেনাবাহিনীকে মেরে ফেলে। এই হচ্ছে অবস্থা। আর আমাদের দেশপ্রেম শেখাচ্ছো? বাংলা দেশপ্রেমের জন্ম দিয়েছে, বাংলা নবজাগরণের জন্ম দিয়েছে, তৃণমূলকে বলো বিদেশি? শত্রু? তুমি তো বড় শত্রু, অসম থেকে ১৪ লক্ষ মানুষের নাম বাদ দিয়েছ।
দু’ দফা ভোট হয়েছে, বলছে হাম জিত গিয়া। অর্ডার দিচ্ছে প্রাইম মিনিস্টার, অফিসার সব ঠিক করে রাখো, এই এই করতে হবে। এটা মাথায় বুদ্ধি আছে। এরা পাগল না ছাগল। ঘটে কী আছে, ঘটে? ঘটে কিস্যু নাই। না হলে প্রাইম মিনিস্টার কখনও রাজ্য সরকারের অফিসারকে বলতে পারে। আরে আই অ্যাম দ্য চিফ মিনিস্টার। রাজ্যকে কিছু বলতে হলে আমি আছি। সংবিধান সে অধিকার আমাকে দিয়েছে। আপনার কেন্দ্র নিয়ে আপনি কথা বলবেন।
এখান থেকে ট্যাক্স তোলো, আর বলে হাম টাকা দেতা হ্যায়। সাড়ে ৯০০ টাকা গ্যাসের দাম। বিনা পয়সায় চাল, ফোটাবো কি বিজেপিতে? আগামিদিন অনেক ব্যাঙ্ক বন্ধ হয়ে যাবে। চক্রান্ত করছে। টাকা নিয়ে পালাবে। আপনাদের কী হবে। কে লড়াই করবে? মাথায় রাখবেন ইনসিওরেন্স ৭৫ শতাংশ প্রাইভেট করে দিয়েছে। সব বিক্রি করে দিচ্ছে। দেশে বসে দেশটাকে চাবুক মারছে। আর কয়েকজন অফিসারকে নিয়ে ভাবছে, তাদের দোষ নেই, তারা ভাবছে দিল্লির কাছে প্রিয় হই, তাই তাবেদারি করে বেড়াচ্ছে। আমি বলি, তাবেদারি করছ কর, দিল্লি কিন্তু একমাস, তৃণমূল ১২ মাস। এত ভয় কীসের দিল্লিকে? আমি যদি ভয় না পাই। দু’টো চিঠি দেবে, দেবে। কী করবে। বদলি করবে, বদলি করবে।
আমি সবসময় মনে করি আমি আসতে আসতে মিউনিসিপ্যালিটি, পঞ্চায়েতগুলো এমনভাবে করে দেব যাতে অনলাইনে সব কাজ পেয়ে যায়। কোথাও গিয়ে মানুষকে বসে থাকতে হবে না। মানুষ অ্যাপ্লাই করবে জিনিসটা পাবে ঘরের দরজার সামনে। আমি এটা করে দেব। পাড়ায় পাড়ায় সমাধান, দুয়ারে সরকার বছরে চারবার করে করব। এটা আমার লাকি জায়গা।
একদিকে কোটি কোটি টাকা। একদিকে হাজার হাজার, সারা দেশে বিজেপির যত মন্ত্রী কাছে, যত অপদার্থ মন্ত্রী আছে, যত দুর্যোধন, দুঃশাসন, রাবন আছে সব কটা বাংলায় এসে বসে আছে। কেন বাংলা ওদের চাই। কেন? ওরা কখনও কখনও বলে বাঙালির মেরুদণ্ড ভেঙে দেব। আমি বলি অত সহজ না। বাংলার মেরুদণ্ডটা ভাঙতে গেলে তোমাদের মেরুদণ্ডটা কেঁচোর মতো হয়ে যাবে।
আমার কষ্ট হচ্ছে ঠিকই। আপনারা জানেন এখানে এলে আমি একটু ঘরোয়া কথা বলি। আমি রোজ ২৫-৩০ কিলোমিটার হাঁটার লোক। আমি ট্রেড মিল করি ১৫ কিলোমিটার, ১০-১২ কিলোমিটার এমনি হাঁটি। সেই লোকটা যদি হাঁটতে না পারি আমার তো মনে কষ্ট হয়, যে আমি ক্যালোরিটা কমাতে পারছি না। আমি হাঁটতে পারছি না, আমার ওয়েটটা বেড়ে যাবে। আমি ভাবি! আবার ভাবছি, এটা তো সাময়িক। মনের শক্তি ঠিক থাকলে কিছুই কিছু না। তাই আপনাদের জোরে বেরিয়ে পড়লাম বাংলা জয় করতে। আমি পরশু সকালে নন্দীগ্রাম থেকে বেরোলাম। দমদমে এসে বাগডোগরা গেলাম। একইদিনে কোচবিহারে মিটিং করলাম। তারপর দিনহাটা, মাথাভাঙা, আলিপুরদুয়ার সেরে দমদম ফিরলাম। বাড়ি গেলাম। এভাবে মিটিং করছি।
১০ তারিখে পায়ে চোট পেয়েছি। আমার মনে একটা জেদ আছে। আমি যখন দেখলাম ভোটের প্রচারকে কেন্দ্র করেই আমার পায়ে চোটটা করা হল, তখন আমার মনে এটা হোঁচট খেল, এটা আমার প্রচার আটকাতেই করানো হল না তো? তারপরই ভাবলাম, তা হলে তো আমাকে বেরোতেই হবে।
আমি প্রার্থী, আমি বুথে যেতেই পারি। আমি আইন জানি। একটা কম্যান্ডো, বড় বড় গোঁফ। আমাকে বলল, ‘ইধর সে হটো’, আমি বললাম, ‘ইয়ে কউন হ্যয় রে? কউন কিসকো ভাগায়ে গা, ভাগো ইধর সে…’ নির্বাচনে হেরে যাবে বলে বলছেন শপথগ্রহণে আসবে। আপনাকে আমরা ডাকবো না প্রধানমন্ত্রী। এই যে আইবি ভাল করে রিপোর্ট করুন, প্রমোশন হবে।
আমি গেলাম নন্দীগ্রামে একটা বুথে। তার আগে তিন ঘণ্টা আমি ইচ্ছা করে ওখানে ছিলাম। কারণ পুলিশের ড্রেস পরিয়ে ছাপ্পা দেওয়ার ব্যবস্থা করে রেখেছিল। ৭০ টা বুথে। খবরটা আমার কাছে ছিল। ওটা আটকানোর জন্য আমি তিন ঘণ্টা ওখানে গিয়ে বসে ছিলাম। ভিতরে যাইনি, বাইরে বসে ছিলাম। আমাকে শোকজ লেটার দিলে, ফস্কা পড়বে না গায়ে। যাদের বিচারের বাণী নিভৃতে কাঁদে, তারা আমার কী বিচার করল, যায় আসে না। মানুষ বিচার করবে।
সিআরপিএফ আমাদের অতিথি। ওদের ভাল করে যত্ন করুন, খেতে দিন। কিন্তু সিআরপিএফ অন্যায় করলে কিন্তু পার পাবে না। কেবল নন্দীগ্রামের দিনই ৬৩টি এফআইআর হয়েছে। কেবল সিআরপিএফ, সিআইএসএফের বিরুদ্ধে। আইনের পথে যাব। আপনারা সীমারেখা অতিক্রম করবেন না।
সুন্দরবনের এক প্রিসাইডিং অফিসার আমাকে তাঁর অভিজ্ঞতা বলেছেন। বলছে, আমার কাছে সিআইএসএফ এসে বলছে, আপনি আগে থেকে একটা লিখে দিন, যে গন্ডগোল হয়েছে, তাই আমি ফায়ার করতে অর্ডার দিলাম। এত বড় সাহস কোথা থেকে পায় সিআইএসএফ? অর্ডারটা কে দিয়েছে শুনি? ল অ্যান্ড অর্ডার স্টেট সাবজেক্ট মনে রাখবেন। মোদী আর শাহর আন্ডারে নয়। যদি কেউ মনে করেন, এক মাসের জন্য পুলিশের ডিউটি করছেন বলে বিজেপি আপনাকে এসপি করে দিল, এক মাস পরে বিজেপি তাহলে আপনাকে ইলেকশন কমিশনে পাঠিয়ে দিয়ে ডেপুটি ইলেকশন কমিশনার, হোম মিনিস্ট্রিতে আপনাকে চাকরি দিয়ে দেবে। ভাল চাকরি নিন, আমাদের চাকরি হয়তো ভাল নয়। আমরা গরিব। ভাল চাকরি নিন, দিল্লি চামচাগিরি বেশি করে করুন। বেশি করে দিল্লির দালালি করলে, দিল্লি আপনাকে অনেক বড় নেতাকে করে দেবে। লজ্জা করে না। ১২৫ জনকে আইপিএস, আইএএসকে রিপ্যাট্রিয়ট করে দিয়েছিল। আমি জায়গা দিয়েছিলাম। সুমন্ত চৌধুরি নাম। আমি তাঁকে সসম্মানে নিয়ে এলাম। আর করব না। অনেক করেছি। আমার এমনি পুলিশরা খুব ভালো। তাদের কোনও দোষ দিয়ে লাভ নেই। এক এক নেতা অতি বড় নেতা হয়ে গিয়েছে। আর গিয়ে থ্রেট করছে। শুনুন পলিটিক্যাল কেস সবার থাকে। নন্দীগ্রাম, সিঙ্গুর আন্দোলনে সবার কেস রয়েছে। একটা খুন, ডাকাতি আর একটা রাজনৈতিক আন্দোলনের মধ্যে তফাৎ আছে। আপনি কটা বিজেপি, কটা সিপিএমকে গ্রেফতার করতে গিয়েছেন? তৃণমূলকে গ্রেফতার করলেই কি কাছাকাছি যাবেন কারোর? পুলিশ গেলেই মা-বোনেরা ছবি তুলে রাখবেন। আদৌ পুলিশ কিনা, দেখতে হবে।
এটা ইলেকশন না বিজেপির সিলেকশন, এটা তো আমার মনে মনেও সন্দেহ হয়। বাংলার পুলিশ অফিসারদের তারা বিশ্বাস করে না। বাংলাতেও যারা আছেন, তারা একটু অন্য রকম হয়ে গিয়েছে, রূপটুপ দেখতে পাচ্ছি। আমি শুনতে শুনতেই আসছিলাম, যে তারা হঠাৎ পাল্টে গিয়েছে। পাল্টে গিয়েছেন না নিয়মটা উল্টে গেছে? শুনুন যারা মানুষের পার্লস বোঝেন, এই পার্লসটা যারা বুঝতে পারছেন না, তারা নিজেদের মধ্যেই থাকুন। আর কার কার কত প্রমোশন হচ্ছে, আমি সেটাও লক্ষ্য রাখব। আপনাদের প্রমোশন হলে আমি খুশিই থাকব। আমি চাই পুলিশ নিরপেক্ষভাবে কাজ করুক। প্রচার শেষ হওয়ার ৪৮ ঘণ্টা পর নজর রাখতে হবে গোটা বাংলাকে। পুলিশের ড্রেস পরে বহিরাগতরা গ্রামে গ্রামে যাচ্ছেন। গুজরাট থেকে বিহার থেকে বহিরাগত এনেছে। গ্রামে গ্রামে বিজেপির লোক নিয়ে গিয়ে সারা রাত চমকাচ্ছে। আমি চাই এই নির্বাচনে পুলিশের সঙ্গে ছেলেদের কোনও টক্কর হবে না, মহিলাদের এগিয়ে দিন। যখনই পুলিশ আসছে দুম দুম করে, সঙ্গে সঙ্গে উলুধ্বনি দেবেন, শাঁখ বাজাবেন, পাড়াকে অ্যালার্ট করবেন। এই লড়াইটায় মোদী-শাহর বিরুদ্ধে আমার মা-বোনেরা লড়াই করে জিতুক।
মনে রাখবেন আমি রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। আমি বাঘের বাচ্চার মতো লড়াই করি। সব পুলিশ খারাপ নয়। বিজেপি কয়েকজনকে শিখিয়ে পাঠিয়েছে। আমাকে দুজন সাংবাদিক বলেছেন, এয়ারপোর্টে সিকিউরিটি চেক করছে। একজন সিআরপিএফ জওয়ান সাংবাদিককে জিজ্ঞাসা করছে, সে জানে না ও যে সাংবাদিক। ক্যায় আপ মমতাদি কা সাপোর্টার হ্যায়? না মোদীজি কা হ্য়ায়? একজন সিআরপিএফের কি এটা জিজ্ঞাসা করার কথা?
আমতায় ১৪ জনের হাত কেটে দিয়েছিল। তখন আমি একটা বই লিখেছিলাম। কেউ সাহায্য করেনি কংগ্রেসের। চার টাকা করে রয়্যালটি পেয়েছিলাম। সেই চার টাকা করে রয়্যালটি দিয়ে আমি সবাইকে বিশ হাজার টাকা করে দিয়ে গেছিলাম। আজ থেকে তিরিশ বছর আগের কথা।
নির্মল মাঝিকে আপনারা ভোটটা দেবেন। ও কিন্তু কাজটা করে। ও কোভিডে অনেক কাজ করেছে। ছেলেটা ভোলেভালা, কিন্তু কাজ করে। যে যেখানে আছেন, ভোটটা দেবেন তো? হাওড়া হচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেসের জন্মদাত্রী মা।
আমরা গুজরাটকে বাংলা চালাতে দেব না। বাংলা বাংলাতেই থাকবে। তুমি যদি জিতবেই, তাহলে পুলিশ কমিশন নিয়ে এত লুকোচুরি খেলছ কেন? অসমে পুলিশ দিয়ে ভোট লুঠ করেছে, এখানে করতে দেবেন না। মেয়েরা শাঁখ বাজাবেন, যাতে গ্রামের লোক বুঝতে পারে ওই পুলিশ গুলো আসছে। আমাদের ভয় দেখাতে আসছে দিল্লির পুলিশগুলো। দিল্লি পুলিশের সঙ্গে বাংলার পুলিশ থাকলে শঙ্খধ্বনি, উলুধ্বনি দেবেন। তাহলে বুঝবেন পুলিশ পাড়ায় রেড করতে এসেছেন।
কয়েক লক্ষ ছেলেমেয়ের চাকরি হবে শুধু হাওড়ায়। আমরা প্রায় সাত-আট লক্ষ ছেলেমেয়ের চাকরি দিচ্ছি এখানে। পাঁচ লক্ষ ছেলেমেয়ের চাকরি হবে বানতলা লেদার ইন্ডাস্ট্রিতে, বাকিটা হাওড়ায়।
আমরা ৪০ কোটি টাকা দিয়ে আরামবাগ মাস্টার প্ল্যান তৈরি করছি। বন্যা নিয়ন্ত্রণ করা হবে। আরামবাগ, গোঘাটে হাসপাতাল করে দেব। ডবল ডবল চাকরি হবে। নির্বাচনে জিততে হবে। একটা করে ভোট দিতে হবে। ভোটটা পচা ফুলকে দেবেন না। ওরা বঙ্গভঙ্গ করার প্ল্যান করছে। গুজরাট বাংলা শাসন করবে না। নির্বাচনের আগের ৪৮ ঘণ্টা গুরুত্বপূর্ণ। তোমরা যারা লিডার আছ, টহল দিয়ে বেড়াবে এলাকায় এলাকায়। এলাকায় যদি কোনও পুলিশ ভয় দেখাতে যায়, মহিলাদের দায়িত্ব দাও। পুলিশের ড্রেস পরে বিজেপি এখন অনেক জায়গায় লোক পাঠাচ্ছে। গদ্দাররা পুলিশের ড্রেস কিনে এনেছে। কেউ না কেউ ছবি তোলুন। ছবি তুলে ফেসবুকে, হোয়াটসঅ্যাপে ছেড়ে দিন। তারপর দেখি কার কত পাখা গজিয়েছে? বাংলার পুলিশকে এখন দায়িত্ব দিচ্ছে না। দেখে দেখে বলছে, গুজরাটে কে মোদী রয়েছে? গুজরাটের কে সিং রয়েছে? কে শাহ আছে? তাদের দেখে দেখে পুলিশের দায়িত্ব দিচ্ছে, যাতে ভোটটা দখল করতে পারে। ওরে ভোট মানুষ দেয়। এক মাস পর দিল্লির পুলিশ পালিয়ে যাবে, আমাদের পুলিশই থাকবে, ভয় পাবেন না।
এরকম বাজে প্রধানমন্ত্রী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দেখেনি, যারা খুন করে। রোজ এসে বলছে, বাংলায় নাকি উন্নয়ন হয়নি, তাই বাংলায় পরিবর্তন দরকার। পরিবর্তন স্লোগানটাই আমার। আমি যতদিন নিজে না যাচ্ছি, আমাকে সরানো ওত সহজ নয়। সিপিএমের হার্মাদরা গেছে, আর আমাদের দু’একটা মীরজ্জাফর গিয়েছে, যারা অতি বিজেপি হয়ে গিয়েছে। বলছে, তৃণমূল কংগ্রেস নাকি দেশপ্রেমী নয়, তুমি হরিদাস, তুমি দেশপ্রেমী?
যখন বন্যা হয়, তখন কি দেখেন হিন্দুর ঘরে জল ঢুকছে না মুসলমানের ঘরে? কীসের হিন্দু মুসলমান? হিন্দু মুসলমান একসঙ্গে থাকুন, বাঁচুন, কোনও ভাগাভাগি করবেন না। নন্দীগ্রামে মানুষ কাঁদছে, বলছে একই উঠোনে বসে চা খেতাম, কোনওদিন আমাদের গ্রামে এসব ঢোকেনি। বিজেপির গদ্দাররা এসে আমাদের গ্রামে এসব ঢুকিয়ে দিয়ে গেছে।
যদি চার বার মেশিন খারাপ হয়, পাঁচ বারের বার গিয়ে ভোটটা দিয়ে আসবেন। এটা ওদের চালাকি, মেশিন খারাপ করে দেবে। এজেন্টরা কেউ বিক্রি হওয়ার চেষ্টা করবেন না। আমি হাতেনাতে ধরে ফেলব। যতক্ষণ বাক্স সিল না হচ্ছে, কেউ বেরোবেন না। বিজেপি মারছে, এই ন্যাকা কান্না আমি সহ্য করব না। যার যার সাহস নেই, বুথে এজেন্ট হয়ে বসবেন না। তার থেকে আমি আমার এক কন্যাশ্রীকে বুথে বসাব। তারা অনেক স্ট্রং। ভোটকেন্দ্রের মধ্যে তো তোর গায়ে হাত দেওয়ার ক্ষমতা নেই কারোর। পুলিশ আগে বুথে ঢুকে যাচ্ছিল। কমিশন এখন বলে দিয়েছে। বুথের ভিতর সেন্ট্রাল পুলিশও কারোর আইডি প্রুফ চেক করতে পারে না। এটা লিখিত অর্ডার এসেছে। কোনও একটা ওয়ারেন্ট এসেছে, কারোর বাড়িতে তল্লাশিতে যাবেন। যান না। এখানে ওখানে গিয়ে ঘুরে বেড়ান না। ঠিক টাইমে এসে ভোট করাবেন। একটু বুদ্ধি খরচ করতে লাগে। পাড়ার যারা ঝগড়ুটে মহিলা, তাঁদের এজেন্ট করে দাও।
দিদি দিচ্ছে বিনা পয়সায় চাল, আর সাড়ে নশো টাকা গ্যাস। চাল ফোটাবে কি গ্যাস দিয়ে? বল, আমার ক্যাশ চাই না গ্যাস চাই। বিনা পয়সায় গ্যাস দাও, তারপর ভোট চাও। সব বেসরকারি করে দিচ্ছে।
ভোটের ৪৮ ঘণ্টা আগে খুব গুরুত্বপূর্ণ। প্রচার শেষ করে ঘুমিয়ে পড়বেন না। ওই ৪৮ ঘণ্টা ভয় দেখায়। পুলিশ নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। বলে ভোট দিতে বেরোবে না। যখন পুলিশ নিয়ে বাড়ি যাবেন, ভাল করে ছবিগুলো তুলে রাখবেন। আর কিচ্ছু বলবেন না। আর পরের দিন একটা করে ভোট তৃণমূলকে দেবেন, বিজেপিকে খালি করবেন।
সব প্রেসকে বলে দিচ্ছে, তুমি সার্ভে করে দেখাবে, বিজেপি জিতছে। আরে কোথা থেকে জিতবে এজেন্ট নেই। ধার নিচ্ছে। বিজেপির কথা শুনে কমিশন নতুন নিয়ম করে দিল, বিধানসভার যে কোনও জায়গা থেকেই এজেন্ট করা যেতে পারে। বিজেপি নেতারা ফোনে আলোচনা করেছে, সেগুলো বেরিয়েছে। ওরা বলছে, আমাদের তো ওত এজেন্ট নেই. বাইরে থেকে বসাতে হবে।
আমার রাজ্য সরকারের অফিসারদের নির্দেশ দিচ্ছে! লজ্জা করে না। তুমি কে নির্দেশ দেওয়ার? যাও আগে নিজের অফিসারদের সামলাও। আপনাদের লজ্জা করে না আমি জানি। ১২৫ জনের ওপর অফিসারদের আপনারা রিপ্যাট্রিয়ট করে দিয়েছেন। পুরো হেরে যাবে। কত সিটের জামানতজব্দ হবে ঠিক নেই, আমার নির্দেশ দিয়ে যাচ্ছে। রোজ পুলিশ অফিসারকে চেঞ্জ করছে। পুলিশ অফিসার চেঞ্জ করলে কী হবে, তোমার বিজেপি দালাল দেখে দেখে নিচ্ছ। পুলিশ নিরপেক্ষ কাজ করবে। আর দালালি যারা করবে, তারা আগামী দিনে তোমার সঙ্গে কাজ করবে, আমার আপত্তি নেই। একটা অফিসার চেঞ্জ করেছিল গতবার, কোচবিহারের দিয়েছিল, কোচবিহারটা দখল করেছে। কেন অফিসার চেঞ্জ করবে? যারা আছে তারা কী দেখতে খারাপ? শুধু বিজেপি করলেই, না করলেই তাড়িয়ে দাও। তোমাদের সরকার আসবে এখানে, ৫০টা সিট আগে উতরাও: মমতা
প্রত্যেক দিন এসে মিথ্যা কথা বলছে। আর নাটক করতে পারে খুব ভাল। দাঙ্গা করেই চোখ দিয়ে জল পড়বে। বুঝতে পারছেন তো কীরকম নাটক করে? খুন করবে, করেই চোখ দিয়ে জল বেরোবে! ভাল নাট্যকার হতে পারত ভাই। দেখে বলবে, আর যেন লোকে দেখে বলবে দাঁড়িয়ে নিজে বলছে। আর এক লাইন বাংলা বললে, আপনারা ভাবেন কী সুন্দর বাংলা বলছে, সবটা দেখে দেখে বলে। আমি তো গুজরাটি না দেখে বলব: মমতা
আপনি একজন প্রধানমন্ত্রী হয়ে কীভাবে বলতে পারেন যে, “রাজ্য সরকারের অফিসাররা তৈরি থাকুন, ডেটা তৈরি করুন, আমি ক্ষমতায় আসব, কী কী কাজ করব”। ওঁ তো নির্বাচন বিধি ভঙ্গ করছেন। আপনি আগে দিল্লিতে গিয়ে দিল্লিটা সামলান তো। দিল্লির সর্বনাশ করে দিয়েছে। তিন দিনের জন্য বাংলাদেশে গিয়েছিলেন, ওখানে গিয়েও দাঙ্গা লাগিয়ে দিয়েছেন। আমার রাজ্য সরকারকে কোনও নির্দেশ দেওয়ার অধিকার আপনার নেই। এটা অসাংবিধানিক, এটা অনৈতিক। আর ইউ গড, আর ইউ সুপারহিউম্যান? মমতা
নরেন্দ্র মোদী এসে এখানে মিথ্যা কথা বলে যাচ্ছেন। অমিত শাহ এসে রোজ মিথ্যা বলছে। দিল্লিতে ওরা ৬ বছর রয়েছেন। বাংলার জন্য কী কাজ করেছেন? বলেছিল ১৫ হাজার টাকা করে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে দেবে, এক পয়সাও দিয়েছে? কৃষকদের টাকা দেবে বলেছিল, দিয়েছে? আমরা তো দিই। এবার জিতে গেলে কৃষকদের ১০ হাজার টাকা করে দেব। প্রান্তিক চাষিদের দেব ৫ হাজার টাকা। তুমি কর না কিছু মিথ্যা কথা বল।
বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য ৪০ কোটি টাকার মাস্টার প্ল্যান তৈরি করেছি। কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। আরামবাগ, খানাকুল, গোঘাট, উদয়নারায়ণপুরে বন্যা না হয়। ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকার লোয়ার দামোদর ভেসিন প্রজেন্ট হয়েছে। দামোদরের অন্তর্ভুক্ত এলাকাগুলিতে কালর্ভাট তৈরি করব, ভাঙন রুখব। হাওড়া, বর্ধমান, মেদিনীপুরে আর বন্যা হবে না।
এখানে প্রধান সমস্যা হচ্ছে বন্যা। উদয়নারায়ণপুর, আমতা, খানাকুল, পুড়শুড়া বন্যায়ে ভেসে যায়। দামোদর থেকে জল ছাড়ে, আর এখানকার মানুষদের কষ্ট হয়। ঝাড়খণ্ডের জল ঢুকে যায় আপনাদের এলাকায়। আগে না বলে ছেড়ে দিত, সিপিএমের আমলে। কত লোকের ঘরবাড়ি ভেসে যেত, কেউ টাকা পেত না। আমরা মনিটারিং করি। বলেছি, না জানিয়ে তোমরা জল ছাড়বে না। আমরা অনেক জল ধরো জল ভরো পুকুর কেটেছি। প্রতিবার বন্যায় আসি। আমার বেশ মনে আছে। প্রথম প্রথম যখন বন্যায় আসতাম, তখন আমরা পুকুর কাটিনি। তখন জল কতদূর চলে যেত। কিন্তু গতবারের আগেরবার দেখলাম, তিন কিলোমিটার জায়গায় বন্যা হয়নি। আমরা যে পুকুর কেটেছি, সেই জলটা ওখানে গিয়ে পড়ে। : মমতা
মা বোনেদের সম্মান জানানো সবচেয়ে বড় কাজ। যা রাজা রামমোহন রায়, বিদ্যাসাগর করে গিয়েছেন, সেই কাজটা আমরাও করছি। খানাকুল গোপীনাথ মন্দির, রাধাকান্ত মন্দির আছে। সারা বাংলা জুড়ে ৫০০ কোটি টাকা খরচ করে মন্দির তৈরি করেছিলাম। চন্দননগর, মাহেশ, ব্যান্ডেল চার্চে অনেক কাজ করেছে। খানাকুল ২ ব্লকে ৬টা জলপ্রকল্পের কাজ শেষ করেছি। সব বাড়িতে পানীয় জল পৌঁছে যাবে। আমরা তিন-চার বছরের মধ্যে সব বাড়িতে পানীয় জল পৌঁছাব। জল স্বপ্ন প্রজেক্ট হাতে নিয়েছি: মমতা
খানাকুলে উত্তর প্রদেশ মডেল দেখিয়ে বিজেপির হয়ে ভোট চাইলেন যোগী আদিত্যনাথ। ছিল কাশ্মীর প্রসঙ্গও। ‘ভারতীয় জনতা পার্টি যা বলে তাই করে’, উত্তর প্রদেশের মতো বাংলা গড়তে আহ্বান যোগীর।
মনে রাখবেন সুলতান আহমেদ মন খারাপ করে মারা গিয়েছেন। ওর পিছনে সিবিআই লাগিয়ে দিয়েছিল। ইকবারের শরীর তা দেখে আরও খারাপ হয়ে গিয়েছে। দাদাকে ভালোবাসত: মমতা
বিজেপির এক একটা মিটিংয়ে সাড়ে পাঁচ কোটি টাকার স্টেজ হয়। সে একেবারে পাকা বাড়ির মতো। এয়ারকন্ডিশন করা আবার। আমাদের ছোট্ট পার্টির পক্ষে এতটা করা সম্ভব হয় না। তা সত্ত্বেও আপনারা যে এতদূর এসেছেন, আপনাদের পাগুলোকে আমি প্রণাম জানাই: মমতা
দক্ষিণ ২৪ পরগনায় প্রচার করবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ জয়নগর ও সাতগাছিয়ায় সভা করবেন তিনি। এরপর বিষ্ণুপুর বিধানসভার খড়িবেড়িয়া থেকে রথতলা পর্যন্ত রোড শো করবেন তৃণমূল সাংসদ।
আজ হাওড়া, হুগলি ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় পরপর পাঁচটি সভা রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। হুগলির খানাকুল দিয়ে তৃণমূল নেত্রীর এদিনের প্রচার শুরু হচ্ছে। এরপর হুগলিরই পুরশুড়া, হাওড়ার আমতা, দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুর পশ্চিম ও সোনারপুর দক্ষিণে নির্বাচনী সভা করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
দলীয় পতাকা লাগানোকে কেন্দ্র করে তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষ। কোন্নগর বাটা এলাকা ঘটনাটি ঘটেছে। সংঘর্ষে দু’পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। বিজেপির অভিযোগ, তাদের দলীয় কর্মীরা পতাকা লাগাতে গেলে তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা তাঁদের উপর চড়াও হন। তিনজন বিজেপি কর্মী আহত হয়েছেন। তাঁদের উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তৃণমূলের তরফ থেকে পাল্টা বিজেপির বিরুদ্ধে তাদের দলীয় ফেস্টুন ছেড়ার অভিযোগ তোলা হয়েছে।
ভোটের আগে ফের উত্তপ্ত নানুর। বিজেপি কর্মীদের লক্ষ্য করে বোমা ছোড়ার অভিযোগ। মিটিং করে ফেরার পথে তাঁদের ওপর হামলা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়েছে এলাকায়৷ এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় মোট ২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। প্রত্যেকেই তৃণমূল কর্মী বলে এলাকায় পরিচিত।