খানাকুল: হাইভোল্টেজ নন্দীগ্রামে ভোট-পর্ব মিটেছে। তবে এখনও ৬ দফা ভোট বাকি। তাই ২৩৪ আসনে নিজেদের পূর্ণশক্তি দিয়ে লড়তে প্রচারে খামতি রাখতে নারাজ কোনও পক্ষই। একের পর এক বিধানসভা কেন্দ্র চষে ফেলছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ থেকে শুরু করে যোগী, বারবার পশ্চিমবঙ্গে এসে প্রচারে ঝড় তুলছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। তৃতীয় দফার ভোটের আগে খানাকুলে প্রচারে মমতা-যোগী দু’জনই।
প্রচারে এসেই খানাকুলের মাটিতে দাঁড়িয়ে সরাসরি তৃণমূল কংগ্রেসকে আক্রমণ করলেন বিজেপি নেতা। অযোধ্যা থেকে কাশ্মীর সব ইস্যুতেই মোদীর ভূয়সী প্রশংসা করে একহাত নিলেন তৃণমূল সুপ্রিমোকে। খানাকুলে যোগী বলেন, “এর আগে পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্টের সরকার ছিল, তার আগে কংগ্রেসের, মানুষ ১০ বছর দিদিকেও দিয়েছেন। তারা সকলে শোষণ করেছেন।” বিজেপি এলে উন্নয়ন হবে, অত্যাচার নির্যাতন, শোষণ বন্ধ হবে, তাই সকলের কাছে পদ্মফুলে ভোট প্রার্থনা যোগী আদিত্যনাথের।
কার্যত শাসানির সুরে যোগী বলেন, “যারা গরিবের শোষণ করছেন, তাদের আইনের সামনে দাঁড় করাবে তাদের সরকার। বিজেপি যা বলে তাই করে।” যোগী আদিত্যনাথ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন, পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল এখন হোলি খেলতে দেয় না। তিনি বলেন, “আগে উত্তর প্রদেশেও এমন হত। কিন্তু এখন সেখানে দুর্গাপুজোও হয়, হোলিও হয়।”
বাড়িবাড়ি বিদ্যুৎ সংযোগ, শৌচালয়, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা থেকে ৪ লক্ষ সরকারি চাকরির খতিয়ান দেখিয়ে উত্তর প্রদেশে ব্যাপক উন্নয়নের দাবি করেন যোগী আদিত্যনাথ। এ ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী কিসান সম্মান নিধি থেকে পশ্চিমবঙ্গকে বঞ্চিত করার অভিযোগে মমতা নিশানা করেন যোগী। তিনি বলেন, “আরামবাগ কৃষকদের জায়গা, এখানে কৃষকরা আত্মহত্যা করছেন। তবু দিদি কৃষকদের কিসান সম্মান নিধি দিতে চান না।” দিদি সাধারণ মানুষের সঙ্গে নেই গুন্ডাদের সঙ্গে আছেন বলে অভিযোগ যোগী আদিত্যনাথের। তিনি বলেন, “দিদি কেবল গুন্ডাদের সঙ্গে আছেন। গুন্ডারা শুনে নাও দিন শেষ। ২ মে কাউন্টিং হলেই তৃণমূলের গুন্ডাদের বিরুদ্ধে এমন পদক্ষেপ করা হবে যাতে এদের পরবর্তী প্রজন্ম গুন্ডাগিরি ভুলে যাবে।”
অযোধ্যাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রাম মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন। আর তাতে সবচেয়ে বেশি কষ্ট হয়েছে মমতার। এভাবেই মমতার বিরুদ্ধে তোষণের রাজনীতির অভিযোগ করেন যোগী আদিত্য়নাথ। তিনি বলেন, “মন্দির অযোধ্যায় হচ্ছে। কিন্তু মমতা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কষ্ট হচ্ছে বঙ্গে।” কাশ্মীরের অনুচ্ছেদ ৩৭০ বাতিল করা নিয়েও প্রধানমন্ত্রী মোদীর প্রশংসা করে মোদী বলেন, “বিজেপি যা বলে তাই করে।” কাশ্মীর ইস্যুতে যোগীর দাবি, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের ‘এক দেশ, এক প্রতীক, এক আইন’-এর স্বপ্ন পূরণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। এখন খানাকুলের যে কেউ কাশ্মীরে গিয়ে জমি কিনতে পারেন। তাই বিজেপিকে ভোট দেওয়ার আবেদন যোগীর।