ঐশ্বর্যর শরীরে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন, চোট নিয়ে ছুটলেন…
Aishwarya Rai Bachchan: অভিষেকের সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের গুজবের মাঝে শরীরে প্রচণ্ড আঘাত পেয়েছেন ঐশ্বর্য রাই বচ্চন। তাঁকে বিমান বন্দরে দেখা গিয়েছে প্লাস্টার করা অবস্থায়। কীভাবে এই শারীরিক আঘাত পেলেন ঐশ্বর্য। তাঁর গায়ে কেউ হাত তোলেনি তো?
সম্প্রতি মুম্বইয়ের বিমানবন্দরে দেখা গিয়েছে ঐশ্বর্য রাই বচ্চনকে। ঐশ্বর্যের চেয়েও আকর্ষণ কেড়ে নিয়েছে তাঁর ডানহাতিটি। হাতে জড়ানো প্লাস্টার! কনুই থেকে কব্জি পর্যন্ত গভীর চোট পেয়েছেন ঐশ্বর্য। তাঁর এই অবস্থা দেখে নানা প্রশ্ন করছেন অনুরাগীরা। আসলে ঠিক কী হয়েছে ঐশ্বর্যর? এই আহত হাত নিয়ে কোথায় যাচ্ছিলেন বচ্চন বধূ? বিমানবন্দরে কি একা ছিলেন ঐশ্বর্য? আসলে ঐশ্বর্য যাচ্ছিলেন কান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে অংশগ্রহণ করতে। প্রত্যেকবারই সেখানে যাওয়ার আমন্ত্রণ থাকে ঐশ্বর্যর। ২০০২ সালে প্রথম কানের রেড কার্পেটে হেঁটেছিলেন ঐশ্বর্য। সেবার তাঁর পরনে ছিল চোখ ধাঁধানো ঐতিহ্যবাহী শাড়ি। ডিজ়াইনার নিতা লুল্লার তৈরি এক আউটফিট পরেছিলেন রাই সুন্দরী। এবার কানের লাল গালিচায় কোন অবতারে ধরা দেবেন ঐশ্বর্য, সেদিকে নজর সকলের।
কয়েক ঘণ্টা আগেই ঐশ্বর্যর বিমান ছেড়ে মুম্বইয়ের মাটি। বরাবরের মতো সেখানেও তাঁর একমাত্র সঙ্গী কন্য়া আরাধ্যা বচ্চন। ঐশ্বর্যর পা যখন এয়ারপোর্টে পড়ে, পাপারাৎজ়িদের ক্যামেরা মুহূর্তেই তাক করে তাঁর এবং আরাধ্যার দিকে। সেই ছবি এবং ভিডিয়ো শেয়ার হতেই অনুরাগীদের মনে নানা প্রশ্ন। এ কী! ঐশ্বর্যর ডান হাতে প্লাস্টার কেন? এর উত্তর কিন্তু মেলেনি এখনও। কীভাবে তিনি চোট পেলেন, চোট কতটা গভীর, তা সম্পর্কে কিছুই জানা যায়নি। তবে মানুষের মনে প্রশ্ন যেন জেগেই চলেছে, “তা হলে কি প্লাস্টার হাতেই কানের রেড কার্পেটে হাঁটবেন ঐশ্বর্য?” হয়তো তাই-ই।
দীর্ঘদিন বিনোদন সংক্রান্ত প্রতিবেদন লেখার দরুণ, ঐশ্বর্যর নানা খবর প্রকাশ করার দরুণ, ব্যক্তি ঐশ্বর্যকে নানাভাবে চিনতে পেরেছি। ১৯৯৪ সালের বিশ্ব সুন্দরী তিনি। কেবল তাই নয়, ভারতের প্রথম মিস ওয়ার্ল্ড। ড্রপ ডেড বিউটি হওয়া সত্ত্বেও, তাঁর রয়েছে এক ক্ষুরধার মস্তিষ্ক। যে মস্তিষ্কের গ্রে ম্যাটারের জোরেই পড়ুয়াবেলায় কোনওদিনও দ্বিতীয় আসনটিতে নামেননি ঐশ্বর্য। ডাক্তারি পড়ার মতো মেধা তাঁর। হতে চেয়েছিলেন ডাক্তারই। নানা কটাক্ষ, কটূক্তিকে নিজস্ব বুদ্ধি দিয়ে ডজ করে বেরিয়ে গিয়েছেন এই নারী। ফলে তাঁকে স্রেফ সৌন্দর্যের মাপকাঠিকে কোনওকালেই আটকে রাখা যায়নি। তিনি যে বুদ্ধিমতী, সেই প্রশংসা করেছেন তাঁর চরম শত্রুও।
ঐশ্বর্য জানেন, শরীরটা শো-বিজ়ে গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু সেটাই একমাত্র সম্পদ নয়। তাঁর কাছে শরীরের ঊর্ধ্বে মেধা। এবং সেই মেধা এবং বোধের জোরেই আজও ঐশ্বর্যকে নিয়ে রয়েছে মানুষের অমোঘ আকর্ষণ। এই ৫০ বছর বয়সেও ঐশ্বর্যকে নিয়েই সবচেয়ে বেশি সার্চ গুগলে।
ফলে ঐশ্বর্য কোনওদিনই নিজের শরীরের খামতি লুকোতেন না। দুবাইয়ে গিয়ে চকোলেট ওয়াশ করান তিনি। কিন্তু সঙ্গে এটাও মেনে নেন, সন্তানের জন্মের পর ওজন বাড়বে। কাট-কাট চেহারায় থলথলে ভাব আসবে। লোকে তা নিয়ে দু’চার কথাও শোনাবে। আরাধ্যার জন্মের পর অনেকখানি ওজন বৃদ্ধি হয়েছিল ঐশ্বর্যর। ১২-১৫ কিলোগ্রাম বেড়েছিল তাঁর। ডাবল চিন তৈরি হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তাতে তাঁর রেড কার্পেটে হাঁটা থামেনি। কানে না, মেট গালাতেও না। নিজের শরীরের খামতিকে মেলে ধরেই তিনি হেঁটে গিয়েছেন লাল গালিচার শেষ প্রান্ত পর্যন্ত। মনে-মনে এটাই বলেছেন, “আই অ্যাম দ্য বেস্ট, সো আর ইউ…”।
তাই হাতের চোট নিয়ে লম্বা চওড়া পোস্ট লেখার প্রয়োজনই মনে করেননি এই বিদুষী। মানুষের সহানুভূতি থেকে অনেকটাই দূরে হাঁটেন তিনি। তাঁর কাছে এখন পাখির চোখ কান ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। হাতে প্লাস্টারটি নিয়েই যদি ঐশ্বর্য কানে হাঁটেন, সেটা কেবল তাঁর জয় হবে না, তা হবে এক অনুপ্রেরণার সূত্রপাতও। আড়ষ্ট, কুণ্ঠিত নারীদের কাছে এক নিদর্শন। তৈরি হবে এক স্টাইল স্টেটমেন্ট।
বচ্চন পরিবারের সঙ্গে নাকি সম্পর্ক তলানিতে এসে ঠেকেছে ঐশ্বর্য রাই বচ্চনের। তাঁর সঙ্গে নাকি বিবাহবিচ্ছেদ হতে চলেছে বচ্চন পরিবারের পুত্র অভিনেতা অভিষেক বচ্চনের। ঐশ্বর্য নাকি থাকেন না বচ্চন পরিবারের সঙ্গেও। তাঁর নাকি এখন ঠিকানা মা বৃন্দা রাইয়ের বাড়ি। আরাধ্যাও নাকি ঐশ্বর্যর সঙ্গেই থাকেন। এ সবই হয়তো গুজব। গুজবের আগুন যাতে আর না ছড়ায়, তাই মাঝেমধ্যেই বচ্চনদের সঙ্গে পাবলিক অ্যাপিয়ারেন্সও দিচ্ছেন ঐশ্বর্য। সে আরাধ্যার স্কুলের অ্যানুয়াল ফাংশানই হোক কিংবা আম্বানিদের প্রাক বিয়ের অনুষ্ঠান। অভিষেক, ঐশ্বর্য এবং আরাধ্যা একসঙ্গেই হাজির থাকেন সেখানে। বোঝার উপায় নেই, কী ঘটছে! ঠিক যেমন তাঁর হাতের চোট নিয়েও স্পিক টি নট ঐশ্বর্য।