‘নায়িকাকে যৌনতা নিয়ে কথা বলতে দেখতে মানুষ অভ্যস্ত নন’, কেন বললেন করিনা?
Kareena Kapoor Khan: সদ্য এক সাক্ষাৎকারে এ বিষয়ে করিনা বলেন, “যৌনতা স্বামী স্ত্রীর মধ্যে অত্যন্ত জরুরি বিষয়। এটা নিয়ে কথা বলার জন্য আলাদা সাহসের দরকার হয় নাকি? এটা তো প্রতিদিনের বিষয়।”
যৌনতা নিয়ে সরাসরি কথা বলতে এখনও যেন ভারতীয় সমাজ উপযুক্ত নয়। সদ্য তা নিজের জীবন দিয়ে উপলব্ধি করলেন করিনা কাপুর খান। দ্বিতীয় মাতৃত্ব, যৌন ইচ্ছে চলে যাওয়া, সইফের পাশে থাকা নিয়ে সম্প্রতি মুখ খুলেছিলেন নায়িকা। তারপরই তাঁকে বিরূপ সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয়।
সদ্য এক সাক্ষাৎকারে এ বিষয়ে করিনা বলেন, “যৌনতা স্বামী স্ত্রীর মধ্যে অত্যন্ত জরুরি বিষয়। এটা নিয়ে কথা বলার জন্য আলাদা সাহসের দরকার হয় নাকি? এটা তো প্রতিদিনের বিষয়।”
‘করিনা কাপুর খানস প্রেগন্যান্সি বাইবেল’-এ করিনা লিখেছেন, ‘প্রেগন্যান্সি পিরিয়ডে একজন মহিলা যৌনতার প্রয়োজনীয়তা অনুভব নাও করতে পারেন। ইচ্ছে চলে যেতে পারে। সন্তান জন্মের আগে মহিলাদের এই অভিজ্ঞতা হয়।’ সে অভিজ্ঞতার কথা লেখার পরই করিনাকে ট্রোল করেন এক অংশের মানুষ। তা দেখে করিনার মন্তব্য, “মেনস্ট্রিমের কোনও নায়িকা এটা নিয়ে কথা বলছেন, এটা দেখতে মানুষ অভ্যস্ত নন। অথবা প্রেগন্যান্সি পিরিয়ডে যৌন চাহিদার কথাও হয়তো এ ভাবে বলতে শোনেননি।” জেহ যখন করিনার গর্ভে, তখন নিজেকে নাকি আকর্ষণীয় মনে হত না তাঁর। এ সব কথাই অকপটে লিখেছেন বইতে।
আগামী ১৬ অগস্ট সইফ আলি খানের জন্মদিন। এই বিশেষ দিনের সেলিব্রেশনের জন্য গতকাল অর্থাৎ শনিবার সপরিবার মলদ্বীপ পাড়ি দিয়েছেন অভিনেতা। করিনা এবং দুই ছেলে তৈমুর, জেহকে সঙ্গে নিয়ে পারিবারিক ছুটি কাটাতে গিয়েছেন সইফ। সূত্রের খবর, করোনা পরিস্থিতি এবং জেহর জন্ম, সব মিলিয়ে অনেকদিন বেড়াতে যাননি সইফ–করিনা। তারপর উপর কাজের চাপ। সব মিলিয়ে নাকি হাঁপিয়ে উঠেছিলেন তাঁরা। সে কারণেই এই ব্রেক তাঁদের প্রয়োজন ছিল। মলদ্বীপে নাকি একটি প্রাইভেট আইল্যান্ডে দিন কয়েকের ছুটি কাটাবেন তাঁরা।
করিনা আগেই জানিয়েছেন হাবেভাবে ও দেখতে তৈমুরের থেকে একেবারেই আলাদা তাঁর ভাই জাহাঙ্গীর ওরফে জেহ। তৈমুর দেখতে বাবা সইফ আলি খানের মতো, অন্যদিকে জেহ দেখতে হুবহু মায়ের মতো। তাঁর কথায়, “আমার দুই সন্তানই চারিত্রিক দিক দিয়েও একেবারে আলাদা। তৈমুর আউটগোয়িং। কিন্তু তিন মাস বয়সেই জেহ অনেক বেশি চুপচাপ, শান্ত।”
পাশাপাশি দুই ছেলের নাম নিয়ে যে বিতর্ক চলছে তা নিয়েও মুখ খুলেছেন করিনা। ইতিহাস বলছে, নুরুউদ্দিন মহম্মদ সেলিম বা জাহাঙ্গীর ছিলেন মুঘল সাম্রাজ্যের চতুর্থ সম্রাট। তিনি ১৬০৫ সাল থেকে তার মৃত্যু অবধি ১৬২৭ সাল পর্যন্ত রাজত্ব করেন। এর আগে প্রথম সন্তানের নাম তৈমুর রাখা নিয়ে সমালোচিত হয়েছিল কাপুর ও খান পরিবার। অত্যাচারী শাসক তৈমুরের নামে কী করে ছেলের নামকরণ হতে পারে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন নেটিজেনদের একটা বড় অংশ। জাহাঙ্গীরের বেলাতেও অন্যথা হয়নি। করিনার কথায়, “আর কোনও উপায় নেই। আমায় ধ্যান করতে হবে। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে। একটি মুদ্রায় দুটি পিঠ। পজেটিভ-নেগেটিভ। এই দুই নিষ্পাপ শিশুকে নিয়ে কথা হচ্ছে। তবে হ্যাঁ আমি খুশি থাকব ও একই সঙ্গে পজেটিভ থাকব।”
নিজের লেখা ‘করিনা কাপুর খানস্ প্রেগন্যান্সি বাইবেল’ বইতে শুধু ছেলের নামই ফাঁস করেননি করিনা। জানিয়েছেন সন্তান গর্ভে আসার পর শারীরিক এবং মানসিক পরিবর্তনের নানা কথাও। সেই পরিবর্তন নিজের জীবনে কীভাবে সামলেছেন করিনা, সে সবই এই বইয়ের মাধ্যমে শেয়ার করেছেন তিনি। হবু মায়ের কেমন ডায়েট প্রয়োজন, কতটা ওয়ার্কআউট আসন্ন সন্তানের জন্য ভাল, সে সব সাজেশনও দিয়েছেন তিনি। করিনা আরও জানিয়েছেন, সন্তান জন্ম নেওয়ার পর যে স্ট্রেচ মার্কস হয় তা নয়ে বেশ চিন্তায় ছিলেন তিনি। সমস্যার এখানেই শেষ নয়, সন্তান জন্ম নেওয়ার আগেই বাচ্চার জন্য একগাদা শপিং করা তাঁর যেন অভ্যাসে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল। ভালবাসা জন্মেছিল পিৎজার প্রতিও। বহুবার বহু মানুষ তাঁকে প্রশ্ন করেছেন, “আমি কি তোমার বেবিবাম্প ছুঁয়ে দেখতে পারি?” অস্বস্তিকর অবস্থার মধ্যে দিয়েও যেতে হয়েছে করিনা কাপুর খানকে। করিনা জানিয়েছেন এমন অনেক সময় হয়েছে তিনি হাসছেন, খুব হাসছেন কিন্তু হঠাৎ করেই কান্না পেয়ে গিয়েছে ওই হাসির মুহূর্তের মাঝেই। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় ‘মুড সুইং’ স্বাভাবিক বিষয়, করিনাও তার ব্যক্তিক্রম নন। আবার হাঁচতে গিয়ে প্রস্রাব হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে তাঁর সঙ্গে। এ সবই বইতে বিশদে লিখেছেন করিনা।
আরও পড়ুন, ‘স্বাধীনতা দিবসে পরাধীনতার এক বছর পূর্তি’ মানালি-অভিমন্যুর বিবাহবার্ষিকী