কাস্টিং কাউচ কোনও নতুন শব্দ নয়। সব ইন্ডাস্ট্রিতেই এর প্রভাব রয়েছে। তবে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির ঘটনা অনেক বেশি প্রকাশ্যে আসে। দর্শকের কৌতূহলও বেশি এই ইন্ডাস্ট্রি নিয়েই। বহু অভিনেত্রী কাস্টিং কাউচের অভিজ্ঞতা নিয়ে অতীতে মুখ খুলেছেন। এ বার এ নিয়ে কথা বললেন বলিউড অভিনেত্রী মল্লিকা শেরাওয়াত।
মল্লিকা জানিয়েছেন, দীর্ঘ কেরিয়ারে নিজের আদর্শ থেকে কখনও সরে যাননি তিনি। এমনকি যাঁরা কাস্টিং কাউচের শিকার, তাঁরা নিজেরাই অনেক ক্ষেত্রে এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী বলে মনে করেন মল্লিকা।
মল্লিকার কথায়, “আমি নিজে খুব বেশি এ সব সামলাইনি। তবে হ্যাঁ, অল্প হলেও এই পরিস্থিতিতে আমিও পরেছিলাম। তবে আমাকে সকলেই ভয় পেত। তাই কোনও প্রস্তাব দেওয়ার আগে নার্ভাস হয়ে যেত বলে মনে হয়। আমার এই ভয় না পাওয়া ইমেজ আমাকে সাহায্য করেছে।”
তবে নিজের স্বল্প অভিজ্ঞতার পরেও মল্লিকা মনে করেন, যদি কোনও মহিলা নিজেই সুযোগ করে দেন, তা হলে তাঁর সঙ্গে এ সব ঘটনা ঘটবে, এটাই স্বাভাবিক। মল্লিকা বলেন, “নিজেকে ওই পরিস্থিতিতে নিয়ে গেলে তো এ সব হবেই। আমি বলিউডের কোনও পার্টিতে যাই না। কোনও পরিচালক বা প্রযোজকের সঙ্গে রাতে হোটেলের ঘরে দেখা করি না বা কফি খেতে যাই না। আমি নিজেকে দূরে রাখি। আমি মনে করি, ভাগ্যে থাকলে সব হবে, তার জন্য আমাকে এ সব করতে হবে না।”
২০০৩ সালে ‘খোয়াইশ’ ছবির হাত ধরে হিন্দি ছবির জগতে প্রবেশ করেছিলেন অভিনেত্রী মল্লিকা শেরাওয়াত। তার পরের বছর মুক্তি পায় ‘মার্ডার’। ইন্ডাস্ট্রির বোল্ড অভিনেত্রী হিসেবে পরিচিত তিনি। সাহসী চরিত্রে অভিনয় করেছেন জড়তাহীন ভাবে। কিন্তু তাঁর অভিনয় জগতে প্রবেশ সহজ বিষয় ছিল না। অনেক লড়াই করে নিজের জায়গা তৈরি করেছেন তিনি। মল্লিকার পরিবার কোনওদিনই চাননি তিনি অভিনয় জগতে আসুন।
মল্লিকা বলেছেন, “পরিবারের থেকে সারাজীবন অনেক বাধা পেয়েছি। পিতৃতান্ত্রিক সমাজের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি ছোট থেকে। আমার বাবা অত্যন্ত রক্ষণশীল মানুষ। মা-ও তাই, দাদাও তাই। কেউ আমার পাশে ছিলেন না। আমাকে কেউ সাপোর্ট করেননি কোনওদিন। একটা সময় আমি খুবই সরল ও সাদাসিধে মনের মানুষ ছিলাম।” তবে ছোট থেকেই অভিনেত্রী হতে চেয়েছিলেন মল্লিকা। অভিভাবকদের অমত আছে জেনে বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছিলেন। সোজা মুম্বইয়ে চলে এসেছিলেন নিজের স্বপ্নকে সত্যি করবেন বলে। জানিয়েছেন, তিনি যদি সেদিন বাড়ি থেকে না পালিয়ে আসতেন, তাঁর বিয়ে হয়ে যেত। বলেছেন, “আমার ভাগ্য ভাল ছিল, যে এই ইন্ডাস্ট্রি আমাকে ফিরিয়ে দেয়নি। আমি আমার স্বপ্নকে শেষমেশ সত্যি করতে পেরেছি।”
বাড়ির মেয়ে পালিয়েছে, এটা মেনে নেওয়া বোধহয় কোনও বাবা-মায়ের পক্ষেই সহজ বিষয় নয়। সহজ হয়নি মল্লিকার বাবা-মায়ের ক্ষেত্রেও। তিনি বলেন, “আমার কাছে চিরকালই টাকা ছিল। অনেক গয়না ছিল। মুম্বইয়ে পেট চালানোর জন্য সব বিক্রি করে দিয়েছিলাম। কিন্তু পরিবারের থেকে দূরে চলে এসে মানসিকভাবে খুব ভেঙে পড়েছিলাম আমি। বাবা আমাকে ত্যাজ্য করেছিলেন। বলেছিলেন আমার সঙ্গে আর কোনও সম্পর্কই রাখবেন না। এই কথা শুনে আমার মা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন।”
আরও পড়ুন, ‘জুড়ে থাকার সাহস একমাত্র তুই রেখেছিস’, স্বস্তিকাকে ধন্যবাদ দিলেন শোভন