জীবনের থেকে বড় শিক্ষক তো আর কেউ হতে পারে না। অভিনেত্রী তথা সঞ্চালিকা মন্দিরা বেদীর ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। সদ্য স্বামী রাজ কুশলকে হারিয়েছেন তিনি। রাজের মৃত্যু এক ধাক্কায় যেন পাল্টে দিয়েছে মন্দিরার জীবন। শোক সামলে ফের জীবনে ফিরেছেন তিনি। প্রতিদিনের শিক্ষা, প্রতি মুহূর্তের অনুভূতি সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ভাগ করে নিচ্ছেন তিনি।
বর্তমানে বাঁচার চেষ্টা করছেন মন্দিরা। অতীত ভুলে, ভবিষ্যতের চিন্তা না করে শুধুমাত্র বর্তমান সময়টুকুকে আঁকড়ে ধরতে চাইছেন। তিনি লিখেছেন, ‘… বর্তমান যেমনই হোক, তাতেই থাকার চেষ্টা করছি। বর্তমান মুহূর্ত, বর্তমান মানুষ, বর্তমান পরিস্থিতি…।’
কাজে ফিরতে পেরে জীবনের প্রতি কৃতজ্ঞ বোধ করেছেন তিনি। দিন কয়েক আগে শুটিং সেট থেকে নিজের ছবি শেয়ার করে মন্দিরা লিখেছিলেন, ‘কাজে ফিরতে পেরে আমি কৃতজ্ঞ। আমার জীবনে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদেরকে পেয়ে আমি স্নেহধন্য, কৃতজ্ঞ। সুস্থ এবং জীবিত আছি বলেও কৃতজ্ঞ আমি।’
মাত্র ৪৯ বছর বয়সে আচমকা রাজ কুশলের চলে যাওয়াটা মেনে নেওয়া মন্দিরা বেদীর পক্ষে সহজ ছিল না। রাজের প্রয়াণের এক মাস পর কিছুটা সামলে উঠেছেন ঠিকই। কিন্তু এখনও পরিস্থিতি তাঁর কাছে সহজ নয়। যে মন্দিরার সোশ্যাল ওয়াল ভরে থাকত হাসিখুশি ছবিতে, রাজের প্রয়াণের পর সেখানে বিষাদ নজরে পড়েছে সকলের। কিন্তু জীবনের কথা ভেবেই হাসতে হল মন্দিরাকে। ফিরতে হল পেশাদার জগতে। রাজ চলে যাওয়ার পর এই প্রথম যেন জীবনের দিকে মুখ ফেরালেন।
রাজের প্রয়াণের ঠিক এক মাস পর মুম্বইয়ের বাড়িতে রাজের আত্মার শান্তি কামনায় বিশেষ পুজোর আয়োজন করেছিলেন মন্দিরা। সঙ্গে ছিল দুই সন্তান বীর এবং তারা। আসলে জীবন এতটাই আকস্মিক, রাজের মৃত্যুর পর তা যেন আরও বেশি করে অনুভব করছেন মন্দিরা। একমাত্র ঈশ্বর সব কিছুর নিয়ন্ত্রক। তাই ঈশ্বরের কাছে নিজেকে সম্পূর্ণ নিবেদন করে ভাল থাকার রাস্তা খুঁজছেন তিনি।
মন্দিরার বাবা, মা রয়েছেন। কিন্তু তাঁদের সামনেও সব সময় মন খুলে নিজের কথা বলতে পারছেন না তিনি। কাঁদতে পারছেন না। কারণ মন্দিরা কাঁদলে তাঁরাও কষ্ট পাচ্ছেন। বীর এবং তারা দুই সন্তানের সম্পূর্ণ দায়িত্ব এখন মন্দিরার উপরেই। সন্তানদের সামনেও ভেঙে পড়লে চলবে না। নিজস্ব স্পেস দরকার ছিল তাঁর। একমাত্র ঈশ্বরের কাছেই সেই সমর্পণ সম্ভব।
রাজের আচমকা প্রয়াণ মন্দিরাকে স্তব্ধ করে দিয়েছিল। ২৫ বছরের পরিচিতি এবং ২৩ বছরের দাম্পত্য এক মুহূর্তে শেষ হয়ে গিয়েছে। নিজের ইমোশন লুকিয়ে রাখেননি। কেঁদেছেন। কষ্ট পেয়েছেন। রাজকে মিস করেছেন। কিন্তু নতুন করে সব কিছু শুরু করার অদম্য প্রয়াস জারি রেখেছেন নিরন্তর।
আরও পড়ুন, অঙ্কুশকে প্রকাশ্যে ধন্যবাদ জানালেন দেব, এর নেপথ্যে আসল কারণ কী?