নীনা গুপ্তা। এক ছকভাঙা জীবনের নাম। নিজের শর্তে বাঁচেন তিনি। ৬০ বছর বয়সেও নিজেকে মেনটেন করেন। এখনও চুটিয়ে কাজ করছেন তিনি। গত কয়েক বছরেই বরং নীনা অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং এবং অন্য ধারার চরিত্রে অভিনয় করার সুযোগ পেয়েছেন। এ হেন নীনার জীবনে হঠাৎই ‘মিস্টার রোশনলাল’-এর আগমন। কে ইনি?
সোশ্যাল মিডিয়াতেও যথেষ্ট সক্রিয় নীনা। সদ্য ভাইরাল হয়েছে তাঁর একটি পুরনো ভিডিয়ো। নীনা নিজেও সে ভিডিয়ো শেয়ার করেছেন। আর সেখানেই ‘মিস্টার রোশনলাল’-এর উল্লেখ রয়েছে।
নীনার শেয়ার করা ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে কোনও একটি অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে গিয়েছেন তিনি। মঞ্চে পুরস্কার নিচ্ছেন যুবতী নীনা। তারপরই মাইক্রোফোনের সামনে দাঁড়িয়ে একটি ডায়লগ বলেছেন। সেখানে ‘মিস্টার রোশনলাল’-এর উল্লেখ রয়েছে। এই ভিডিয়োর ক্যাপশনে নীনা লিখেছেন, ‘বুনিয়াদ ধারাবাহিকের ডায়লগ এটা। আমি যখন অ্যাওয়ার্ড পেলাম, তখন দর্শক চেয়েছিলেন বলে ওই ডায়লগ বলেছিলাম।’
ঠোঁটকাটা। বলিউড ইন্ডাস্ট্রি এ ভাবেই চেনে নীনা গুপ্তাকে। নিজের শর্তে জীবন বেঁচেছেন। কেরিয়ারের স্ট্রাগল, একা মায়ের লড়াই- কাউকে পাশে পাননি। ফলে মুখের উপর কথা বলতে তাঁর বাধে না। ক্রিকেটার ভিভিয়ান রিচার্ডসের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের কথা কারও অজানা নয়। তাঁরা বিয়ে করেননি।
৮০-র দশকে ভিভ, নীনার প্রেম, সম্পর্ক নিয়ে উত্তাল ছিল ফিল্ম এবং ক্রিকেট মহল। তাঁরা সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন। একে অপরকে ভালবেসেছিলেন। তাঁদের সন্তান মাসাবা। কিন্তু কখনও বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হননি ভিভ-নীনা। ভিভ পরে বিয়ে করেছিলেন মিরিয়মকে। অন্যদিকে পেশায় চাটার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট বিবেক মেহেরাকে বিয়ে করেন নীনা।
মাসাবাকে একা হাতে বড় করেছেন নীনা। পাশে পেয়েছিলেন তাঁর বাবাকে। আজ আর সে সব নিয়ে কোনও অভিযোগ নেই তাঁর। এক সাক্ষাৎকারে নীনা বলেন, “আমি ভিভিয়ানকে ভালবাসতাম। যদি আপনি কাউকে ভালবাসেন, তাকে ওভাবে ঘৃণা করা যায় না। হয়তো একসঙ্গে থাকেন না আর। কিন্তু ঘৃণা করা যায় না। সেটা ধীরে ধীরে বোঝা যায়। আর নিজের মেয়েকে তার বাবার সম্পর্কে খারাপ কথাও বলা যায় না। আমি এটা কখনও করিনি। কেন আমি মেয়ের মন বিষিয়ে তুলব? ভিভের প্রতি শ্রদ্ধা রয়েছে আমার। ভিভও আমাকে সম্মান করে। ফলে মাসাবা আমাদের দু’জনেই সম্মান করে। বিষয়টা খুব সহজ।”
আগাগোড়া মেয়েকে নিজের কাছে রেখে বড় করেছেন নীনা। মাসাবা বড় হয়ে পেশা হিসেবে ফ্যাশন ডিজাইনিংকে বেছে নেন। তাঁর নিজস্ব ব্র্যান্ড রয়েছে। মায়ের কাছে বড় হলেও বাবার সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে মাসাবার। তাঁর বড় হওয়ার নেপথ্যে মায়ের প্রত্যক্ষ প্রভাব ছিল বটে, তবে বাবার পরোক্ষ প্রভাবের কথা কখনও অস্বীকার করেন না তিনি।
কিছুদিন আগেই নিজের আত্মজীবনী ‘সচ কহু তো’ প্রকাশ করেছেন নীনা। সেখানে ব্যক্তিগত জীবন থেকে কেরিয়ারের ওঠা পড়া সবই শেয়ার করেছেন। নাম না করে নিজের কাস্টিং কাউচের অভিজ্ঞতাও শেয়ার করেছেন তিনি।