Sandhya Mukhopadhyay: বাধ্য হয়ে অ্যাম্বুলেন্সেই এল বর সন্ধ্যাকে বিয়ে করতে

২০১০ সালে চলে গেলেন শ্যামল গুপ্ত। এই ফেব্রুয়ারিতেই সুরলোকে পাড়ি দিলেন গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। পড়ে রইল তাঁর গাওয়া অসংখ্য গান আর বহু মানুষের দুর্মূল্য স্মৃতি।

Sandhya Mukhopadhyay: বাধ্য হয়ে অ্যাম্বুলেন্সেই এল বর সন্ধ্যাকে বিয়ে করতে
শ্যামল-সন্ধ্যা।

| Edited By: Sneha Sengupta

Feb 16, 2022 | 5:56 PM

নন্দন পাল: গীতিকার শ্যামল গুপ্তের ‘মিষ্টি আলোর ঝর্ণা’ কলমকে বারে বারে তাঁর কণ্ঠের জাদুতে প্রাণবন্ত করেছেন ‘গীতশ্রী’ সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। শ্যামলের সঙ্গে সন্ধ্যার প্রথম পরিচয় গীতিকার হিসেবে। তারপর সেই গীতিকারই হয়ে ওঠেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের স্বামী। কণ্ঠের মতই তাঁর বিয়ের গল্পও দারুণ রোম্যান্টিক। যেদিন সন্ধ্যা আর শ্যামলের বিয়ের দিন স্থির হয়, সেই দিন হঠাৎই রাজ্যজুড়ে ধর্মঘট ডাকে একটি রাজনৈতিক দল। অচল হয়ে পড়ে শহর কলকাতা। আটকে পড়ে বরের গাড়ি। চিন্তায় পড়েন দুই বাড়ির লোকজন। মুশকিল আসান হয়ে উপায় বের করেন স্বয়ং পাত্র। অ্যাম্বুলেন্সে চেপেই গুটিকতক বরযাত্রীকে সঙ্গে নিয়ে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে বিয়ে করতে আসেন গীতিকার শ্যামল গুপ্ত। ভি বালসারার সহায়ক রবীন সরকার সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের মেজ দাদা হিরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের কাছে শুনেছিলেন সেই ঘটনার বিবরণ। (১৯৫৯ থেকে বালসারার জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত রবীনবাবু ছিলেন তাঁর সঙ্গে। তাঁর সূত্রেই আলাপ হয় স্বর্ণ যুগের বাংলা গানের দিকপালদের সঙ্গে। সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও শ্যামল গুপ্তর কাছের মানুষ ছিলেন রবীন সরকার। রবীনবাবু শোনালেন। সন্ধ্যার বিয়ের এক অদ্ভুত ঘটনা।)

রামচন্দ্র পালের ছবিতে প্রথম ছায়াছবির গানের জন্য কথা লেখেন শ্যামল গুপ্ত। গুপ্ত পরিবারের ছিল রাসায়নিকের ব্যবসা। শ্যামল গুপ্ত ছিলেন একজন কেমিস্ট। তার পাশাপাশি লেখালেখির শখ ছিল তাঁর। তখনও সন্ধ্যা-শ্যামলের মুখোমুখি আলাপ হয়নি। আলাপ হয় সতীনাথ মুখোপাধ্যায়ের হাত ধরে। গ্রামাফোনের কর্তারা চেয়েছিলেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে সুরকার হিসেবে তাঁরা প্রকাশ করবেন একটি বেসিক বাংলা গানের অ্যালবামে। যে অ্যালবামের গান গাইবেন গীতশ্রী স্বয়ং। আড়ষ্ট সন্ধ্যা ইতস্তত করেন। যদি দিকপাল সুরকারদের সঙ্গে কাজ করে তাঁদের প্রভাব এসে পড়ে তাঁর সুরে! সন্ধ্যাকে আশ্বস্ত করেন সতীনাথ মুখোপাধ্যায়। তিনি শ্যামল গুপ্তকে সঙ্গে নিয়ে আসেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের ঢাকুরিয়ার বাড়িতে। সেই প্রথম দেখা, সন্ধ্যা আর শ্যামলের! গ্রামাফোনের সেই ৭৬ আরপিএমের রেকর্ডের জন্য চারটি বেসিক বাংলা গান লেখেন শ্যামল গুপ্ত। সেই প্রথম সুরকার-গীতিকার হিসেবে পথ চলা শুরু সন্ধ্যা-শ্যামলের। যে পথচলা জীবনের বন্ধনহীন গ্রন্থিকেই বোধহয় বেঁধে দিয়েছিল। কী গান ছিল সেই অ্যালবামে? ‘স্বপ্ন ভরা অন্ধকারে মোর গানের এই বীণা তার শেষ রাগিনী সুরে সুরে এল ভেসে নয়ন ধারে।’ ছিল ‘চন্দন পালঙ্কে শুয়ে একা একা কী হবে?’ আর ‘ঝরা পাতা ঝড়কে ডাকে। ২০১০ সালে চলে গেলেন শ্যামল গুপ্ত। এই ফেব্রুয়ারিতেই সুরলোকে পাড়ি দিলেন গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। পড়ে রইল তাঁর গাওয়া অসংখ্য গান আর বহু মানুষের দুর্মূল্য স্মৃতি।

আরও পড়ুন: Sandhya Mukhopadhyay Obituary: তীর বেঁধা পাখি আর গাইবে না গান

আরও পড়ুন:Sandhya Mukhopadhyay Death: চলে গেলেন ‘গীতশ্রী’ সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়, সঙ্গীতজগৎ আজ ‘মাতৃহারা’

আরও পড়ুন: Sandhya Mukhopadhyay Death: গুরু ভাইবোন ছিলাম, বিরিয়ানি খেতে ভালবাসতেন সন্ধ্যাদি: স্মৃতিচারণায় পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী