আবারও এক খারাপ খবর। আবারও এক মৃত্যু। কী বলি কিছুই বুঝতে পারছি না। লতা মঙ্গেশকর চলে গিয়েছেন কিছুদিন হল না। সেই শোক কাটতে না কাটতেই আরও এক মৃত্যু। আমি তো শুনেছিলাম সন্ধ্যাদি সুস্থ হচ্ছিলেন ধীরে। মনটা কেমন খুশি হয়ে যাচ্ছিল। তারপর আজ এই খবর। কোথা থেকে কী যে হয়ে গেল।
অনেক সুখস্মৃতি আছে তাঁকে নিয়ে। আজ যেন সব মনে পড়ছে এক এক করে। এত ভাল শাস্ত্রীয় সঙ্গীতও গাইতেন। বড়ে গুলাম আলি খাঁ সাবে কাছে গান শিখেছেন। কোন রাগটা কীরকম হবে, কেমন হওয়ার দরকার সব যেন ছিল নখদর্পণে। এক এক দিন আট ঘণ্টা ধরে গান গেয়ে যেতেন। আমি ফোন ধরে আছি। উনি গেয়েই যাচ্ছেন। এত ভাল লাগত। এত বড় একজন শিল্পী। অথচ সবসময় নিজের ভুল ত্রুটি নিয়ে ভাবতেন। আমি বলতাম, দিদি কী বলছেন, খুব ভাল। একবার বললে আশাবরী রাগটা কী তুই কোমল রে দিয়ে গাস? অনুজর কাছ থেকেও শেখার ইচ্ছে।
আমার বাবাকে তিনি অসম্ভব শ্রদ্ধা করতেন। একবার আমি রেডিয়োতে নটভৈরব রাগের খেয়াল গাইলাম, উনি আমাকে ফোন করে বললেন এই কী ভাল গেয়েছিস। আমি তো ভয়ে মরে যাচ্ছি। কী জানি হয়তো ভাল লাগল না। ফোন তুলে দেখি কী প্রশংসা। কোনও সময় ছোটদের সমালোচনা করতেন না। সব সময় ভাল বলতেন, উৎসাহ দিতেন।
আমি ওঁর বাড়িতে অনেক বার গিয়েছি। রাজ্য সঙ্গীত অ্যাকাদেমির মিটিংয়ে প্রায়ই আমাদের সঙ্গে দেখা হতো। ওই সময় প্রচুর কথা হত। কত গল্প হতো। অনেকেই বলছেন ওঁকে নাকি দুঃখ নিয়ে চলে যেতে হল। আমার সেটা মনে হয় না। আমার ব্যক্তিগত ভাবে মনে হয় না পদ্মশ্রী তাঁকে এতটা নাড়া দিয়েছিল। সন্ধ্যাদিকে যতটা জানতাম তাতে মনে হয় না উনি এই বিষয় নিয়ে খুব একটা চিন্তা ভাবনা করেছেন বলে। পুরস্কারের নিক্তি ওজনে তো ওঁকে মাপা যায় না। তাঁর সৃষ্টি অবিনশ্বর, তিনি আমার সন্ধ্যাদি।