অ্যাওয়ার্ড শো’তে ডেকে অপমানিত হওয়ার অভিযোগ আনলেন জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত সঙ্গীতশিল্পী ইমন চক্রবর্তী। উদ্যোক্তাদের উপর সোশ্যাল মিডিয়ায় উগরে দিলেন ক্ষোভ। ইমনের সাফ জবাব, “যদি মনে করেন শিল্পীদের কোনও কাজ নেই, সারাক্ষণ বসে থাকে তবে সে ধারণা ভুল। সময়ের মূল্য সকলেরই রয়েছে।” ঠিক কী হয়েছে?
মঙ্গলবার বিকেলে শহরের এক পাঁচতারা হোটেলে ‘প্রাইড অব নেশন’ নামক এক পুরস্কার বিতরণী সন্ধ্যার আয়োজন করা হয়েছিল। সেই অনুষ্ঠানে পুরস্কার গ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল ইমনকেও। আসার কথা ছিল বিক্রম ঘোষের মতো শিল্পীদেরও। ইমনে বয়ান অনুযায়ী জানা যাচ্ছে। নির্ধারিত সময়ের ১৫ মিনিট আগে বিকেল ৫টা ১৫ নাগাদ তিনি পৌঁছে যান সেখানে। যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে বলা হয় ‘চিফ গেস্ট’রা না আসা পর্যন্ত তাঁকে অপেক্ষা করতে হবে। ইমনের কথায়, “… অভ্যেসবসত পাঁচটা পনেরো নাগাদ গেলাম। গিয়ে দেখলাম সেখানে কোনও লোক নেই। এমনকি উদ্যোক্তরাও নেই। পুরো ফাঁকা একটা হল। আমাকে বলা হল চিফ গেস্টরা না এলে আমরা তো শুরু করতে পারব না। তাই আমাদের দেরি হচ্ছে।”
ইমনের কথা থেকেই জানা গিয়েছে, ওই দিন সন্ধেতেই বোলপুর যাওয়ার কথা ছিল তাঁর, বুধবার সেখানে অনুষ্ঠান রয়েছে। সেই মতোই তিনি বেরিয়ে আসার উপক্রম করতেই উদ্যোক্তাদের তরফে হোটেলের এক ঘরের চাবি ধরিয়ে তাঁকে সেখানে অপেক্ষা করতে বলা হয়। এবং একই সঙ্গে জানানো হয়, ঠিক ছ’টার মধ্যেই অনুষ্ঠান শুরু করবেন তাঁরা। সাড়ে ছ’টা বেজে যাওয়ার পরেও অনুষ্ঠান শুরু না হওয়ায় বাধ্য হয়েই ইমন নিচে নেমে আসেন। তিনি যোগ করেন, “এমনি করেই সাড়ে ছয়টা বেজে গেল। মনে পড়ল আমাকে তো বের হতে হবে এবার। আবার গ্রাউন্ড ফ্লোরে এলাম। আমি নিজেই ছোটাছুটি করছি আর ভাবছি বেরিয়ে গেলে কী ভাববে ওরা।” ইমন জানান, নিচে নেমেও বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করেন তিনি। উদ্যোক্তারা তখন আশেপাশেই ছিলেন। কেউ কফির কাপে চুমুক দিচ্ছিলেন। কেউ নিজেরা সেলফি তুলছিলেন। কিন্তু যে কাজের জন্য ইমন এসেছেন সেটাই হচ্ছিল না।
ইমন আরও জানিয়েছেন, অবশেষে ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় ৬টা ৫০ নাগাদ সেই জায়গা থেকে বের হয়ে যান তিনি। বের হয়েই গাড়িতে উঠে এক লাইভও করেন গায়িকা। সেই লাইভেই চুড়ান্ত অপমানিত ইমনকে বলতে শোনা যায়, “আমি বেরিয়ে আসছি দেখেও ওরা কেউ এগিয়ে আসেনি। দে জাস্ট ডোন্ট কেয়ার। সেলফি তুলেই যাচ্ছে। কফি খাচ্ছে। শিল্পী কেন বেরিয়ে গেল কেউ জানতেও চায়নি”। ক্ষুব্ধ ইমনের উদ্যোক্তাদের প্রতি বক্তব্য, “যদি কেউ মনে করে থাকেন শিল্পী মানেই তাঁর হাতে অনেক সময় তাহলে ভুল। তিনি যদি বাইরে অ্যাওয়ার্ড নিতে নাও জান, সেই সময়টা হয়তো তিনি বসে রেওয়াজ করছেন বা অন্য কিছু।” হাতে অ্যাওয়ার্ড ধরিয়ে দিয়ে ‘প্রাইড অব নেশন’ ঘোষণা করে প্রাপ্য সম্মানটুকু যারা দেননা তাঁদের প্রতি দুঃখ, ক্ষোভ, বিরক্তি উগরে দিয়েছেন গায়িকা। একই সঙ্গে পরবর্তীতে আর কোনও এ ধরনের অনুষ্ঠানে তিনি যেতে পারবেন কিনা, তাঁর মন সায় দেবে কিনা, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। ইমনের ওই ঘটনায় ভক্তরাও বিরক্ত। শিল্পী বলে নয়, যে কোনও মানুষকেই ডেকে এনে এ হেন অপমানের অধিকার যে কারও নেই, সে কথাই মনে করিয়ে দিয়েছেন তাঁরা।