মঞ্চে কুমার শানু এবং সোনু নিগম। দুই শিল্পীর প্রতিভা বা জনপ্রিয়তা নিয়ে নতুন করে কোনও আলোচনার প্রয়োজন নেই। কিন্তু কুমার শানু যখন সোনু নিগমকে পারফরম্যান্সের পর জড়িয়ে ধরনে, কপালে চুমু খান, বদলে যায় সঙ্গীতের দিনলিপি। ‘সুপার সিঙ্গার সিজন ৩’-এর মঞ্চে এমন মুহূর্ত তৈরি হল। আর সেই মুহূর্তের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় অনুরাগীদের সঙ্গে ভাগ করে নিলেন সোনু।
সোনু লিখেছেন, ‘শেষ পর্যন্ত একজন শিল্পীর এটাই পাওনা হয়।’ তা দেখে খুশি ভক্তরাও। এই ছবি শানুও শেয়ার করেন। দিন কয়েক আগেই শুরু হয়েছে এই রিয়ালিটি শো। বিচারকের আসনে শানু, সোনু ছাড়াও রয়েছেন কৌশিকী চক্রবর্তী। শানুকে অত্যন্ত শ্রদ্ধা করেন সোনু। তাঁর কাছ থেকে সকলের সামনে এই ব্যবহার পেয়ে আপ্লুত তিনি। আসলে পেশাদার মঞ্চে যতই প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাক অফস্ক্রিন একে অপরকে শ্রদ্ধা করেন, ভালবাসার। তাঁদের মধ্যে যে সহজ বন্ধুত্ব রয়েছে, তা স্পষ্ট এই আচরণে।
গানের রিয়ালিটি শো’র বিচারক হয়ে ফের ফিরছেন সোনু। অথচ সারেগামাপা ও ইন্ডিয়ান আইডলের পর একটা দীর্ঘ সময় রিয়ালিটি শো থেকে দূরেই ছিলেন তিনি। ইন্ডিয়ান আইডল বিতর্ক নিয়ে মুখও খুলতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। বলেছিলেন, শো’য়ে কীভাবে ব্যবহার করবেন বিচারক তা কখনই প্রযোজক বা চ্যানেল দ্বারা নির্ধারিত হবে না। বাংলার এই রিয়ালিটি শো’র বিচারক হওয়া প্রসঙ্গে সোনু আগেই বলেছিলেন, “আমি স্পষ্ট কথার মানুষ। কেউ আমায় বলে দেবে না আমি কী ভাবে ব্যবহার করব। কারণ, সঙ্গীতের সেই বিশুদ্ধতা আমার মধ্যে রয়েছে। যদি আমাকে ওরকম কিছু করতে হয়, আমি করব। কিন্তু রিয়ালিটি শো’য়ে যা আমি করতে পছন্দ করব না, ব্যক্তিগত জীবনেও কি সেই একই জিনিস আমি করব?”
সোনু বলেছিলেন, “যে সব কাহিনিতে অন্যদের সমবেদনা তৈরি হয়, সে সব কাহিনি নিশ্চয়ই দর্শক ভালবাসেন। যদি তা না হত, রিয়ালিটি শোয়ে এ সব চলত না।” অথচ রিয়ালিটি শো’র বিচারক হিসেবেই মানুষ আবার দেখতে চলেছে তাঁকে। তাহলে? সোনুর জবাব দিয়েছিলেন, “স্টার জলসার ওই শো’য়ে কৌশিকী চক্রবর্তী- কুমার শানু রয়েছেন। এক শুদ্ধ বাতাবরণ রয়েছে সেখানে। পরিবেশ বেশ আরামদায়ক। আশা করছি, বাংলার এই রিয়ালিটি শো আমাকে মেলোড্রামা করতে বলবে না”।
অন্যদিকে কুমার শানুর মিউজিক কেরিয়ারের বিস্তার নিয়ে নতুন কিছু বলার নেই। তবে কেরিয়ারের শুরুতে যে ইন্ডাস্ট্রি দেখেছিলেন শানু, এখন তার বদল ঘটেছে অনেকটাই। কিছুদিন আগে এক সাক্ষাৎকারে শানু বলেছিলেন, “গান গাওয়ার ধরন বদলেছে। আমরা টেকনিক্যালি অনেক উন্নত হয়েছি ঠিকই। কিন্তু গানের যে আত্মা, তা কোথাও মিসিং। ৯০-এর দশকে কত ছবি গানের জন্যই হিট হত। প্রযোজকরাও গানের ভিতরের মনটাতে জোর দিতেন। এখন আর তা নেই।”
কুমার শানু মনে করেন, আগে সঙ্গীতশিল্পীদের সাধারণ মানুষ যত শ্রদ্ধা করতেন, এখন তা আর নেই। এমন নয় যে, তাঁদের সঙ্গে কেউ খারাপ ব্যবহার করেন, কিন্তু আগের মতো সঙ্গীতশিল্পীদের প্রতি সাধারণ শ্রোতা শ্রদ্ধাশীল নন, এটাও মনে হয়েছে তাঁর।
এই মুহূর্তে মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিতে যে ভাবে কাজ হয়, তার ধরন নিয়ে আপত্তি রয়েছে শানু। তিনি শেয়ার করেছিলেন, “এখন একটা গান অনেক শিল্পীকে দিয়ে গাওয়ানো হয়। ফলে শেষ পর্যন্ত তাঁর ভার্সন ব্যবহার করা হবে কি না, সে সম্পর্কে গায়কও নিশ্চিত হতে পারেন না। এটা কোথাও শিল্পীর অসম্মান। পরিচালক বা প্রযোজকের কোনও শিল্পীর প্রতি অনাস্থা এতে প্রকাশ পায়।”
আরও পড়ুন, প্রথম জন্মদিনের আগে ইউভানকে নিয়ে পুরীতে রাজ-শুভশ্রী