কনিজ় বালসারা। সম্পর্কে আপন মধুবালার বোন। সম্প্রতি নিউ জ়িল্যান্ডের অকল্যান্ড শহর থেকে ফিরেছেন মুম্বইয়ে। একেবারে একা। সঙ্গে ছিল না টাকা পয়সা। বয়স শুনলে চমকে যাবেন। ৯৬। আরও চমকে যাবেন, যখন জানবেন শেষ বয়সে কী নির্মম অবস্থা হয়েছে তাঁর। বর্ষীয়ান মানুষটিকে অকল্যান্ড থেকে মুম্বইগামী ফ্লাইটে তুলে দিয়েছেন তাঁরই পুত্রবধূ শমিনা। জানুয়ারি মাসের ২৯ তারিখ রাত ৮টায় মুম্বই পৌঁছেছেন কনিজ়। গিয়ে উঠেছেন কন্যা পারভেজের বাড়িতে। কনিজ় যে অতদূর থেকে মুম্বইয়ের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন, সে কথা পারভেজকে জানিয়েছেন তাঁর এক কাজ়িন, বউমা শমিনা নন। এর পরই জানা যায় আসল ঘটনা।
১৭-১৮ বছর আগে স্বামীর সঙ্গে নিউজ়িল্যান্ডে গিয়েছিলেন কনিজ়। পরিবার নিয়ে পুত্র ফারুক সেখানেই থাকেন। ছেলেকে খুবই ভালবাসতেন কনিজ়। তাঁকে ছাড়া একেবারেই চলত না মায়ের। ফারুকও মা বলতে অজ্ঞান। তিনিই নিজের সঙ্গে বাবা-মাকে অকল্যান্ডে নিয়ে গিয়েছিলেন। নিউজ়িল্যান্ডের সরকারী অফিসার ফারুক। সেখানে তাঁর খুব সম্মান। কিন্তু শমিনা কোনওকালেই শ্বশুর-শাশুড়িকে পছন্দ করতেন না। জানিয়েছেন কনিজ়ের মেয়ে পারভেজ।
পারভেজ আরও বেশকিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য জানিয়েছেন। শমিনা নাকি কখনওই শ্বশুর-শাশুড়ির জন্য খাবার তৈরি করতেন না। ফারুককে পাশের রেস্তরাঁ থেকে বৃদ্ধ বাবা-মায়ের জন্য খাবার কিনে আনতে হত। শমিনার মেয়েও নাকি ঠাকুরমার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করতেন। কনিজ়কে যখন নিউজ়িল্যান্ড থেকে বের করে দেওয়া হচ্ছিল, তখন নাকি শমিনার দুই সন্তান সেখানেই ছিলেন। কেউ বাধা দেননি।
বাবা-মা নিউজ়িল্যান্ড চলে যাওয়ার পর নিয়মিত সেখানে যেতেন পারভেজ়। কখনও বছরে দু’বারও যেতেন। মধুবালার কনিষ্ঠ বোন মধুর ভূষণ জানিয়েছেন, তিনি কল্পনাও করতে পারেন না কনিজ়কে নিউজ়িল্যান্ডে এই ভাবে থাকতে হয়েছে। তাঁরা সকলেই সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন কনিজ়ের পুত্রের মৃত্যুর পর নিউজ়িল্যান্ডে তাঁর থাকা দুর্বিষহ হয়ে উঠেছিল।
পুত্রকে কবর দিয়ে ৯৬ বছরের বৃদ্ধা মা একাকী সাত সমুদ্র পেরিয়ে চলে আসেন জন্মস্থানে। হাতে নেই টাকা পয়সা। খাবার কিনে খাওয়ারও টাকা ছিল না বৃদ্ধার কাছে। সব নিয়ে নিয়েছে পুত্রবধূ, এমনকী তাঁর সমস্ত গয়নাও। হপিং ফ্লাইটে একফোঁটাও খেতে পারেননি মধুবালার বোন।
আরও পড়ুন: Deepika-Ananya: বলিপাড়ায় দিদি-বোনের সমীকরণ; অনন্যাকে কেউ বোঝে না, বললেন দীপিকা