প্রীতম দে
এক মাস ধরে ধীরে-ধীরে তিনি শেষ করেছেন আঁকা: দিদির মুখের ছবি।
সযত্নে তিনি লালন করেছেন সেই ছবি সন্তানের মতো। কিন্তু সে ছবি কখনও হাতে তুলে দেখতে পারেননি তিনি।
কারণ দিদির ছবি তিনি এঁকেছেন পা দিয়ে।
পা দিয়েই তো সব কাজ করেন হাওড়া ময়দানের রঞ্জন কুর্মী। ছোট থেকেই রঞ্জনের হাত বলতে কিছু নেই। পা দিয়েই খাওয়া থেকে আঁকা… স-অ-অ-অ-ব। ভোটের ফল বেরনোর পর শুরু করেন মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পোর্ট্রেট আঁকা। জল রঙে। কারণ জল রংয়েই রঞ্জনের স্পেশ্যালাইজ়েশন। নিখুঁত পায়ে (যা হাতের চেয়ে কোনও অংশে কম নয়) জলরঙের কাজ। বাঁ-পায়ের বুড়ো আঙুল আর তার পরের আঙুল দিয়ে তুলি ধরেন রঞ্জন। অন্য পা, অর্থাৎ ডান পা দিয়ে সহায়তা। নিপুণ ছবি আঁকেন বিশেষভাবে সক্ষম রঞ্জন। মূলত ল্যান্ডস্কেপ। গ্রামে-গ্রামে গিয়ে প্রকৃতির ছবি আঁকেন তিনি।
হাওড়া ময়দানের একচিলতে ঘরে থাকেন। আঁকা শেখান। তাতেই চলে। লকডাউনের জেরে আঁকার ক্লাস বন্ধ। তার মধ্যে ‘দিদি’কে উপহার দেওয়ার জন্য তাঁর ছবি শুরু করেন রঞ্জন। “এবারের ভোটে পায়ের শক্তি দেখেছে সবাই। আমি তো নিজের জীবন দিয়ে বুঝি পায়ের শক্তি কী জিনিস। ‘দিদি’কে রেসপেক্ট করে এই ছবিটা দিতে চাই,” বললেন রঞ্জন। সঙ্গে তাঁর সংযোজন, “রাজ চক্রবর্তী খবর পাঠিয়েছেন আসবেন। তাঁর সহকারী ফোন করে ডিটেলসও নিয়েছেন এবং বলেছেন রাজদা আপনার কাছে আসতে চান। কবে কখন সেটা পরে জানিয়ে দেওয়া হবে।” তারপর মাস খানেক হয়ে গিয়েছে। যোগাযোগ হয়নি আপাতত।
এ দিকে, ‘দিদি’র ছবি সম্পূর্ন। ছবি নিয়ে একরাশ আশায় বুক বেঁধে অপেক্ষা করছেন রঞ্জন।
আরও পড়ুন: সাবধান করোনা, পুতুল মানুষ আসছে