যত দিন এগিয়ে আসছে, দর্শকের মধ্যে অপেক্ষার পারদ তত চড়ছে। অপেক্ষা জনপ্রিয় ওয়েব সিরিজ ‘মানি হাইস্ট’-এর। পঞ্চম এবং শেষ সিজনের প্রথম পার্ট রিলিজ করবে আগামী ৩ সেপ্টেম্বর। তার আগে নিজের ব্যক্তিগত জীবনের এক ভয়ঙ্কর স্ট্রাগলের কথা প্রকাশ করলেন স্প্যানিশ অভিনেতা আলভারো মোরতে। যাঁকে এই সিরিজে সার্জিও মারকুইনা তথা প্রফেসরের ভূমিকায় দেখেছেন দর্শক।
‘মানি হাইস্ট’-এ প্রফেসর রিয়েল ফাইটার। শুধু রিল লাইফে নয়, রিয়েল লাইফেও আলভারো একজন যোদ্ধা। আসলে অভিনেতা ক্যানসার সারভাইভার। কয়েক বছর আগে এই মারণ রোগকে হারিয়ে ফের স্বমহিমায় কাজে ফিরেছেন।
সূত্রের খবর, ২০১১-এ আলভারোর বাঁ পায়ে একটি টিউমার ধরা পড়ে। যা পরীক্ষার পর জানা যায় তিনি ক্যানসার আক্রান্ত। তাঁর কথায়, “আমার এখনও মনে আছে সাদা কোট পরে গলায় স্টেথোস্কোপ ঝুলিয়ে চিকিৎসক এসে বলেছিলেন, এই হয়েছে। তবে এখনও তোমার হাতে বাঁচার জন্য অনেক সময় রয়েছে। যেমন ফ্লু আক্রান্ত হলে জ্বর হবে, কাঁপুনি দেবে। কিন্তু এগুলো হবে, তুমি জানো। এগুলো নিয়ে কথা বলার কোনও প্রয়োজন নেই। এটা বুঝে নেওয়া ভাল, বাঁচার ক্ষীণ সম্ভবনা রয়েছে।”
কিন্তু ক্যানসার আক্রান্ত কোনও রোগীর পক্ষে এত সহজে গোটা বিষয়টা গ্রহণ করা হয়তো সম্ভব নয়। আলভারোও ব্যতিক্রম নন। তিনি শেয়ার করেছেন, “প্রথমে আমার মনে হয়েছিল, আমি মারা যেতে চলেছি। আমার পা হয়তো কাটা পড়বে। কিন্তু কোনও লাভ হবে না। তারপর মনে হয়েছিল, যদি আগামী তিন মাসের মধ্যে মৃত্যু হয়, সেটা কি শান্ত ভাবে গ্রহণ করতে পারি? যাঁরা আমাকে ভালবাসে তাঁদের কি সম্মান করতে পারি? আমার মতাদর্শের প্রতি কি সৎ থাকতে পারি? এটা ভাবার পরেই মুহূর্তগুলো এনজয় করতে শুরু করি।”
আলভারো পেশায় ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। কিন্তু অভিনয়ের প্রতি ভালবাসা ছিল প্রথম থেকেই। ২০০২-এ অভিনয়ে ডেবিউ করেন তিনি। ‘মানি হাইস্ট’-এর প্রফেসরের চরিত্র তাঁরে বিশ্ব জোড়া খ্যাতি দিয়েছে।
‘মানি হাইস্ট’ পার্ট ফাইভ, ভলিউম ওয়ান আগামী ৩ সেপ্টেম্বর থেকে স্ট্রিমিং শুরু হবে। ভলিউম টু দেখা যাবে ডিসেম্বরে। ‘মানি হাইস্ট’ সিজন-৫ সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে স্রষ্টা অ্যালেক্স পিনা এক বিবৃতিতে বলেছিলেন, “আমরা যখন মহামারীর মাঝে সিজন ৫ লিখতে শুরু করি তখন আমরা অনুভব করেছি যে দশ পর্বের সিজন থেকে প্রত্যাশিতভাবে আমাদের পরিবর্তন করতে হয়েছিল এবং তার জন্য আমরা সব কিছু করেছি। প্রথম পর্বে আমরা আমরা এটাকে আরও সেনসেশন আরও আক্রমণাত্মক করে তুলেছি। দ্বিতীয় পর্বে আমরা চরিত্রগুলোর সংবেদনশীল পরিস্থিতির উপর আরও বেশি ফোকাস করি। এটি তাঁদের সংবেদনশীল মানচিত্রের এক যাত্রা যা আমাদের সরাসরি তাঁদের প্রস্থানের সঙ্গে কানেক্ট করে।”
আদতে এটি স্প্যানিশ ক্রাইম ড্রামা। সাম্প্রতিক অতীতে নেটফ্লিক্সে ইংরেজি ব্যতীত অন্য ভাষায় সবচেয়ে বেশি দেখা ওয়েব সিরিজের রেকর্ড রয়েছে ‘মানি হাইস্ট’-এর ঝুলিতেই। এর চতুর্থ সিজন সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছিল। ৬৫ মিলিয়ন ভিউ হয়েছিল সেই সিজনের। এক বিবৃতিতে নির্মাতা তথা এক্সজিকিউটিভ প্রোডিউসার অ্যালেক্স পিনা বলেন, “আমরা প্রায় এক বছর সময় নিয়ে ভেবেছিলাম, এই টিম কী ভাবে ভাঙব। কীভাবে প্রফেসরকে প্রায় দড়ির উপর বসিয়ে রাখব। কীভাবে বিভিন্ন চরিত্রের পরিবর্তন না করে পরিস্থিতি তৈরি করা যায়। তারই ফলাফল পঞ্চম সিজনে দেখতে পাবেন আপনারা। যুদ্ধ শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে। কিন্তু এটাও বলতে পারি, এই সিজনেই উত্তেজনা সবথেকে বেশি। এই সিজনই সবথেকে মনে রাখার মতো।”
আরও পড়ুন, মালদ্বীপে ছুটি কাটাচ্ছেন শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়, কিন্তু সঙ্গে কে?