AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

‘আমার বাবার নাম রবীন্দ্রনাথ…’, রাজের ‘ক্ষুদিরাম’ বিতর্কে কী বলতে চাইলেন রচনা?

টিজারটি প্রকাশ্যে আসতেই নিন্দার ঝড় বয়ে গেছে ফেসবুক, এক্স (টুইটার)-সহ বিভিন্ন সোশাল মিডিয়া মাধ্যমে। জনৈক এক নেটিজেনের কথায়, “বাঙালি কি নিজের শিকড় আর সংস্কৃতিকে এভাবেই অসম্মান করতে শিখছে?” শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়কেও বিঁধতে ছাড়েননি দর্শকরা।

'আমার বাবার নাম রবীন্দ্রনাথ...', রাজের 'ক্ষুদিরাম' বিতর্কে কী বলতে চাইলেন রচনা?
| Edited By: | Updated on: Dec 31, 2025 | 5:59 PM
Share

মুক্তির আগেই বিতর্কের মুখে পড়ল রাজ চক্রবর্তীর নতুন ছবি ‘হোক কলরব’। ছবির টিজারে অভিনেতা শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়ের মুখে একটি বিশেষ সংলাপ ঘিরেই উত্তাল সোশ্যাল মিডিয়া। বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসুর মতো, মণীষীদের নাম নিয়ে তৈরি এক চটুল সংলাপ বাঙালির ভাবাবেগে আঘাত করেছে বলে অভিযোগ তুলেছেন নেটিজেনদের একাংশ। এই বিতর্ক নিয়ে ইতিমধ্য়েই মুখ খুলেছেন পরিচালক রাজ চক্রবর্তী। তাঁর কথায়, এই ছবির মূল চরিত্রের নাম হচ্ছে ক্ষুদিরাম চাকী, একজন পুলিশ অফিসার। সিনেমায় কোন পরিস্থিতিতে এমনটা বলেছেন, তা সিনেমা না দেখলে বোঝা যাবে না। বিজেপি, বিশেষ করে আইটি সেল এটা নিয়ে একটা প্রোপাগান্ডা শুরু করেছে। অন্য়দিকে, রাজের এই বক্তব্যকেও নসাৎ করে কড়া জবাব দিয়েছেন বিজেপি নেতা ও অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ। রুদ্রনীলের কথায়, রাজ এর মধ্যে রাজনীতি টেনে আনছে এবং মানুষের আবেগকে ছোট করছে। এই প্রবণতা থেকে সরে আসা উচিত। আমি তো বলব, বাদ দিয়ে দিন না এই জায়গাটা যদি কোনও বিতর্ক তৈরি করে, প্রচুর মানুষ আপনার সিনেমা দেখুক। মেসি কাণ্ড থেকে যে অন্যদের উপর দোষ দেওয়ার প্রবণতা, সেটা থেকে সরে আসা উচিত।” আর এবার রাজের ক্ষুদিরাম বিতর্ক নিয়ে মুখ খুললেন তৃণমূল সাংসদ ও অভিনেত্রী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়।

কী বললেন রচনা?

রচনা বলেন,”উনি চাইলে অন্য নাম রাখতে পারতেন,সচেতন হওয়ার প্রয়োজন ছিল। তবে এসবের থেকে জীবনে অনেক জিনিস নিয়ে ভাবার আছে। অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আছে। এখন সোশাল মিডিয়ার যুগ, একটু উনিশ বিশ হলেই মানুষ সেটাকে ইস্যু করে নেয়। এরকম নাম হয়তো আগে অনেক ব্যবহার হয়েছে তখন তো সোশ্যাল মিডিয়া এত স্ট্রং ছিল না। তাই বিতর্ক ওতটা তৈরি হয়নি।”

এখানেই শেষ করেননি রচনা। এই প্রসঙ্গে টেনে আনলেন এক ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাও। রচনা বলেন, ”আমার বাবার নাম রবীন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। আমি তার মেয়ে রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। অনেকে বলত, এই রবীন্দ্রনাথ এদিকে আয়। তাহলে যদি বলেন যে তুই তুকারি করা হল! কিন্তু সেটা তো নয়। আমার বাবার নাম সেটা। উনিও হয়তো তাই সেইভাবেই চরিত্রের নামটা রেখেছেন ক্ষুদিরাম চাকী। এখন অনেকে হয়তো ভাবছেন একজন বিশিষ্ট মানুষের নাম এভাবে রাখা হয়েছে। এর থেকেও আমাদের জীবনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আছে যেগুলো নিয়ে আলোচনা করা উচিত, ভাবা উচিত। তাই এসব নিয়ে আলোচনা না করলেই বোধ হয় ভাল হয়। তবে হ্যাঁ, এ বিষয়ে ওর সচেতন হওয়া উচিত। উনি চাইলে অন্য নাম রাখতে পারতেন। কিন্তু মানুষ মাত্রই তো ভুল হয় সেটা হয়তো ওর হয়ে গেছে।”

ছবির টিজারে শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়কে একজন আইপিএস অফিসারের ভূমিকায় দেখা গিয়েছে। ছবিতে তাঁর চরিত্রের নাম ‘ক্ষুদিরাম চাকী’। একটি দৃশ্যে তাঁকে বলতে শোনা যায়, “নমস্কার, আমি ক্ষুদিরাম চাকী। না, আমি ঝুলি না, ঝোলাই!” বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসু এবং প্রফুল্ল চাকীর আত্মবলিদানকে এভাবে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা হয়েছে বলেই মনে করছেন অনেকে। আর এই নিয়েই ক্ষোভ জমেছে নেটিজেনদের একাংশের। দেশের জন্য যাঁরা হাসিমুখে ফাঁসির দড়ি গলায় পরেছিলেন, তাঁদের নিয়ে এমন ‘রগরগে’ সংলাপ বাংলা সিনেমায় কেন? সেই প্রশ্নই এখন বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

টিজারটি প্রকাশ্যে আসতেই নিন্দার ঝড় বয়ে গেছে ফেসবুক, এক্স (টুইটার)-সহ বিভিন্ন সোশাল মিডিয়া মাধ্যমে। জনৈক এক নেটিজেনের কথায়, “বাঙালি কি নিজের শিকড় আর সংস্কৃতিকে এভাবেই অসম্মান করতে শিখছে?” শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়কেও বিঁধতে ছাড়েননি দর্শকরা। কেউ কেউ তাঁর পুরনো ছবি ‘দ্য বেঙ্গল ফাইলস’-এর প্রসঙ্গ টেনে খোঁচা দিয়ে বলেছেন, “উনি কি সংলাপের মর্ম না বুঝেই বারবার এমন কাজ করেন?” পাশাপাশি, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের ‘মৌনতা’ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।