প্রথমবার ঋষি-হীন দিওয়ালি কপূর পরিবারে, কান্না জড়ান পোস্ট মেয়ে রিধিমার
তখন ভরা লকডাউন। আচমকাই খবর আসে ঋষি কপূর আবারও অসুস্থ। মারণরোগ নাকি ক্রমশ ছড়াচ্ছে গোটা শরীরে। ৩০ এপ্রিল, ২০২০। দাদা রণধীর কপূর জানালেন, ভাই আর নেই। চমকে উঠল বলিউড!
গত বছরও এই সময়টা বাবা (Rishi Kapoor) ছিলেন তাঁর সঙ্গে। এ বছরও দিওয়ালি (Diwali) আসছে। বাহারি আলো আর রঙ্গোলিতে ক্রমে সেজে উঠছে মুম্বই নগরী। শুধু বাবা নেই… তাই ঋষি কপূরের একমাত্র মেয়ে রিধিমা কপূরের মন আজ বিষাদগ্রস্ত। বারেবারেই মনে পড়ে যাচ্ছে বাবার কথা। মনে পড়ছে গতবারেও গোলাপি রঙের সিল্কের শেরওয়ানিতে সেজে মেয়ে রিধিমা (riddhima kapoor) এবং স্ত্রী নিতুর সঙ্গে জমিয়ে দিওয়ালি সেলিব্রেশন করেছিলেন ৬৭-র তরুণ বাবা। বিদেশে চিকিৎসা শেষে সদ্য ফিরেছিলেন মুম্বই। সেই মুম্বইয়ে আজ তিনি নেই। ক্যানসার কেড়ে নিয়েছে তাঁকে এ বছরেরই এপ্রিলে।
তখন ভরা লকডাউন। আচমকাই খবর আসে ঋষি কপূর আবারও অসুস্থ। মারণরোগ নাকি ক্রমশ ছড়াচ্ছে গোটা শরীরে। ৩০ এপ্রিল, ২০২০। দাদা রণধীর কপূর জানালেন, ভাই আর নেই। চমকে উঠল বলিউড! ঠিক আগের দিনই সে হারিয়েছে আর এক নক্ষত্র ইরফান খানকে। ২০২০ রাতারাতি হয়ে গেল ‘বিষাক্ত বছর’। বাবাকে শেষবার দেখতে দিল্লি থেকে রওনা দিলেন রিধিমা। কিন্তু হায় লকডাউন! চলছিল না বিমান, চার্টার্ড প্লেনে মুম্বই যাওয়ার অনুমতি চাইলেও তা মিলল না। অগত্যা ভরসা গাড়ি।
কিলোমিটার জানান দিচ্ছিল, দিল্লি থেকে মুম্বইয়ের দূরত্ব ১৪০০। আসতে সময় লাগে প্রায় ১৮ ঘণ্টা। রিধিমা এলেন। তবে বাবার সঙ্গে দেখা হল না। হবু পুত্রবধূ আলিয়া ভট্টের বুকে কান্নায় আছড়ে পড়েছিলেন স্ত্রী নিতু। মুখে রুমাল চেপে কান্না আটকে ছিলেন আলিয়া। উশকোখুসকো চুল, অসহায় চাহনি…বলিউডের হ্যান্ডসাম হাঙ্ক বলে পরিচিত রণবীর কপূরকে এর আগে কোনওদিনও এত অসহায় দেখায় নি।
ঋষি চলে গেলেন। রয়ে গেল কপূর পরিবারের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে থাকা তাঁর স্মৃতি। উৎসবের দিনগুলোয় যে স্মৃতির কথা আরও বেশি করে মনে পড়ে রিধিমা-নিতুর। সময় থেমে থাকে না। লকডাউন উঠেছে, জীবন স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে ক্রমশ। রিধিমা ব্যস্ত তাঁর জুয়েলারির ব্যবসা নিয়ে। রণবীর ব্যস্ত আলিয়া আর নতুন ছবির শুট নিয়ে। নিতুও শুটে ফিরেছেন। সিনেমার নাম ‘যুগ যুগ জিও’। সহ-অভিনেতা অনীল কপূর, কিয়ারা আডবাণী এবং বরুণ ধওয়ান। তবে এ সবের মধ্যেই নিতুর বড় মনে পড়ছে তাঁর চিন্টুজিকে। ৪০টা বসন্ত একসঙ্গে কেটেছে তাঁদের। কাজ করতে করতেই প্রেম। তিন বছর চুটিয়ে ঘোরা। তার পর হঠাৎই এক দিন ডেটে ঋষি বললেন, “বিয়ের ব্যাপারে কী ভাবছ?” নিতুও কম যান না। উল্টে বলেছিলেন, “বিয়ে করার জন্য তো একজন পাত্রের প্রয়োজন।” হকচকিয়ে গিয়েছিলেন ঋষি। বলেছিলেন, “পাত্র! তা হলে আমি কে?” ব্যস, আর কী? হয়ে গিয়েছিল বিয়ে।
সেই সব রঙিন দিনের স্মৃতি সম্বল করেই শক্ত হয়েছেন নিতু। তবু কাজের ফাঁকে, নতুন কাজ শুরু করার আগে পুরনো দিন ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে ওঠে। নিতুর কথায়, “কপূর সাব, হাত ধরার জন্য তুমি আজ নেই। তবু আমি জানি, তুমি আছ। আমার সঙ্গেই আছ…থাকবে সারাজীবন।” এ বছর তাই না-থেকেও ‘কপূর এন্ড সন্স’-এর সঙ্গে দিওয়ালি সেলিব্রেট করবেন চিন্টুজি।