‘তৈমুর’ নাম নিয়ে চরম বিতর্ক, ছেলের নাম পাল্টে ফেলবেন ভেবেছিলেন সইফ! কী বলেছিলেন করিনা?

সইফ জানিয়েছিলেন যে, ছেলের নাম বদলে ফেলবেন এই মর্মে একটা চিঠি লিখেওছিলেন তিনি। সেই চিঠি পড়তে গিয়ে বুঝেছিলেন বিষয়টা কতটা কষ্টের।

'তৈমুর' নাম নিয়ে চরম বিতর্ক, ছেলের নাম পাল্টে ফেলবেন ভেবেছিলেন সইফ! কী বলেছিলেন করিনা?
“কাউকে কখনও বলিনি, তবে ছেলের নাম পাল্টে ফেলব ভেবেছিলাম। বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে এটা নিয়ে ভেবেছি।"
Follow Us:
| Updated on: Feb 23, 2021 | 10:31 AM

দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম দিয়েছেন করিনা কাপুর। দাদা হয়েছে ছোট্ট তৈমুর। দ্বিতীয় ছেলের নাম কী রাখবেন সইফিনা, তা জানতে উৎসুক অনুরাগীরা। তবে শোনা গিয়েছে, এখনই নবজাতকের নাম প্রকাশ্যে আনবেন না তারকা দম্পতি।

এর আগে তৈমুরের নাম নিয়ে প্রবল ট্রোলের শিকার হয়েছিলেন সইফ-করিনা। বেশকিছু অভিজ্ঞতা এতই খারাপ ছিল যে, ছেলের নাম বদলে ফেলবেন বলে ঠিক করেছিলেন সইফ আলি খান। তবে ছোটে নবাবের কথায় আপত্তি জানান বেবো। আসলে তৈমুর একটি পার্সিয়ান শব্দ, যার অর্থ লোহা। অর্থাৎ লোহার মতো দৃঢ় প্রত্যয় যে, তারই নাম তৈমুর। সেই প্রসঙ্গেই, প্রথম সন্তানের নাম তৈমুর রেখেছিলেন করিনা কাপুর।

প্রথম সন্তানের জন্মের পর থেকেই যে ভয়াবহ অভিজ্ঞতার শিকার হয়েছিলেন সইফ-করিনা, সেই কথা বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে বারবার ঘুরেফিরে এসেছে তাঁদের মুখে। এক সাক্ষাৎকারে করিনা বলেছিলেন, ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির এক নামকরা ব্যক্তিত্ব তাঁকে বলেছিলেন যে ছেলের নাম তৈমুর রেখে বড় ভুল করেছেন করিনা।

করিনার চ্যাট শো ‘What Women Want’- এ অতিথি হয়ে এসেছিলেন নেহা ধুপিয়া। তাঁকেও করিনা বলেছিলেন, “তৈমুরকে নিয়ে যা হয়েছে, তারপর দ্বিতীয় সন্তানের নাম কী হবে, এই নিয়ে ভাবনাচিন্তাই করিনি আমি আর সইফ। আগে সন্তান আসুক। তারপর শেষ মুহূর্তেই ভেবে ঠিক করা যাবে কী নাম রাখা হবে।“

২০১৭ সালে টাইমস অফ ইন্ডিয়ার একটি সাক্ষাৎকারে সইফ বলেছিলেন, “কাউকে কখনও বলিনি, তবে ছেলের নাম পাল্টে ফেলব ভেবেছিলাম। বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে এটা নিয়ে ভেবেছি। তবে করিনা এর বিরুদ্ধে ছিল। ও বলেছিল মানুষ তোমায় তোমার মতামতের জন্যই তোমায় সম্মান করে। তুমি এটা করতে পারো না। তারপর আমিও ভেবে দেখেছিলাম এটা ঠিক হবে না।“

সইফ জানিয়েছিলেন যে, ছেলের নাম বদলে ফেলবেন এই মর্মে একটা চিঠি লিখেওছিলেন তিনি। সেই চিঠি পড়তে গিয়ে বুঝেছিলেন বিষয়টা কতটা কষ্টের। তারপরই ঠিক করেন, যাই হোক তৈমুরের নাম বদল করবেন না। তবে ছোটে নবাব এও জানিয়েছিলেন যে, পরে যদি তৈমুর স্কুলে গিয়ে সমস্যায় পড়ে তাহলে হয়তো নাম পাল্টাতেও পারেন তিনি। সইফের বলছিলেন, “হয়তো অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। কিংবা হয়নি। ঠিক জানি না।“ ছেলের নাম নিয়ে এত সমালোচনায় সইফ যে আশাহত হয়েছিলেন তা স্পষ্ট হয়েছিল তাঁর কথায়।

মুম্বই মিররের এক সাক্ষাৎকারে সইফ জানিয়েছিলেন ভারতে যে তুর্কির যোদ্ধা তৈমুর লং হানা দিয়েছিলেন তার নামে ছেলের নাম রাখা হয়নি। পাশাপাশি তিনি এও বলেন যে, প্রথম সন্তানের নামকরণের আগে অনেক নাম বাছার পর এই ‘তৈমুর’ নামটাই পছন্দ হয়েছিল করিনার। সেই সঙ্গে সইফ এও জানিয়েছেন যে, তাঁর বিশ্বাস ভারত এখন ওপেন-মাইন্ডেড এবং লিবারাল। অর্থাৎ উদারমনস্কতার পরিচয় দেন দেশের একটা বড় অংশের জনগণ। তাই সকলের হয়তো এই নাম অপছন্দ হয়নি। আর জীবিত বা মৃত কারও নামের সঙ্গে ছেলের নামের মিল থাকলে তা সম্পূর্ণ কাকতালীয় বলেই জানান সইফ আলি খান।

তবে এত ট্রোলের মধ্যেও ছেলের নামের জন্য শুভেচ্ছাও পেয়েছেন সইফিনা। ইন্ডিয়া টুডে কনক্লেভ (২০১৮)- এ এসে করিনা বলেছিলেন, অনেক সমালোচনা এবং ট্রোলের মাঝে তৈমুরের নামকরণের জন্য শুভেচ্ছাও পেয়েছি। ডেলিভারি হওয়ার আগে যখন হাসপাতালে যাচ্ছিলাম তখন সইফ বলেছিল বাচ্চার নাম ফয়জ রাখতে। কারণ সেটা অনেক বেশি রোম্যান্টিক এবং কাব্যিক। তবে আমি রাজি হইনি। কারণ তৈমুরের অর্থ লোহা। তাই বলেছিলাম, আমি যদি ছেলের জন্ম দিই তাহলে সে হবে একজন যোদ্ধা। আমি একজন আয়রন ম্যান বা লৌহমানবের জন্ম দেব। আর হ্যাঁ সত্যিই তাই হয়েছে। আমি গর্বিত।“

সম্প্রতি আর একটি সাক্ষাৎকারে করিনা বলেছেন, “তৈমুরের জন্মের পর থেকেই বিতর্ক শুরু হয়েছিল। ৮ ঘণ্টাও পেরয়নি তখন, ওর জন্ম দিয়েছি, হাসপাতালে দেখতে এসে একজন জিজ্ঞেস করলেন কেন ওর নাম তৈমুর রেখেছি। কেঁদে ফেলেছিলাম। সেদিনই বুঝেছিলাম লড়াই শুরু। তবে ঠিক করে নিয়েছিলাম, ও আমার ছেলে, কে কী বলল তাতে কিচ্ছু যায় আসে না। যতদিন ও খুশি থাকবে, আমরাও খুশি থাকব।“