‘১ কোটি ৩০ লক্ষ টাকার ঋণের ধাক্কা’, মেয়েকে বড় করার গল্প বললেন স্বরলিপি
স্বরলিপি বলছেন, ''১ কোটি ৩০ লক্ষ টাকার একটা ঋণের ধাক্কায় পড়েছিলাম। তারপর করোনা শুরু হয়ে গিয়েছিল। সেই ধাক্কা আজও সামলাচ্ছি। শারীরিকভাবেও অনেক সমস্যা এসেছে। যখন বাচ্চাটাকে দুধ খাওয়াচ্ছি, তখন অনেক কাজের চাপ। বাচ্চাটাকে ছেড়ে যেতে পারছি না। বাচ্চারও খিদে পেেয়েছে। হরমোনের কারণে আমিও তখন ভেসে যাচ্ছি দুধে। সেই সময়টা খুব অসহায় মনে হতো। কিন্তু যত সময় যাচ্ছে, বড় হচ্ছে, ও আমাকে বুঝতে শিখছে। মেয়ে যত বড় হচ্ছে, আমারও মাতৃত্বের বয়স বাড়ছে।''

সদ্য মাদার্স ডে-র সেলিব্রেশনে ভরেছে শহর। টলিউডের অভিনেত্রী স্বরলিপি সিঙ্গল মাদার। অভিনেতা সৌম্য বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল স্বরলিপির। তাঁদের বিয়ে ভেঙে যাওয়ার পর মেয়ে থাকে স্বরলিপির কাছে। অভিনয় থেকে দূরে সরে গিয়ে এখন জনপ্রিয় ক্যাফে ‘আবার বৈঠক’-এর দায়িত্ব সামলাচ্ছেন স্বরলিপি। মা হওয়ার এই জার্নিতে কঠিন মুহূর্ত কি এসেছে? কীভাবে সেসব চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন স্বরলিপি? TV9 বাংলাকে স্বরলিপি জানালেন, ”একজন সন্তানকে মানুষ করা মানে কোনটা ঠিক আর কোনটা ভুল, সেটা তুলে ধরা। আমার যে আদর্শ সেটাও কতটা ঠিক-কতটা ভুল কী করে জানব! নিজের আদর্শে একজন বাচ্চাকে মানুষ করা মানে মাটির পুতুল গড়ে তোলা। কিছুই জানে না সে। ধরো বললাম, পিঁপড়েটাকে মেরো না। কারণ সে একটা প্রাণী। আবার বন্ধুরা যখন খেলতে গিয়ে মারে, তখন একজন মা বলেন, ‘দু’ ঘা দিতে পারলি না!’ নিজের আদর্শে তৈরি করার সময়ে প্রতিটা ক্ষেত্রেই অসহায় মনে হয়। আমার জীবনের কিছু কথা বলি। পথ চলতে গিয়ে অনেক সময়ে মনে হয়, একটা বাচ্চা সঙ্গে আছে বলে, হয়তো পারব না। কাজটা নেব না! আমার ক্যাফে তৈরি করেছিলাম হায়দরাবাদে। তখন বাচ্চাটা খুব ছোট। ওর সাইকোলজিকাল প্রবলেম শুরু হয়। মা কাছে থাকছে না। বাবা কাছে নেই। আমার মেয়ে বলত, আকাশের তারা হয়ে যেতে চায়। তার আগে দিদা মারা গিয়েছিলেন বলে আমরা বলতাম, আকাশের তারা হয়ে গিয়েছে। সেটা শুনে ওরকম বলত। সেই সময় হায়দরাবাদ ছেড়ে আমাকে চলে আসতে হয়। ১ কোটি ৩০ লক্ষ টাকার একটা ঋণের ধাক্কায় পড়েছিলাম। তারপর করোনা শুরু হয়ে গিয়েছিল। সেই ধাক্কা আজও সামলাচ্ছি। শারীরিকভাবেও অনেক সমস্যা এসেছে। যখন বাচ্চাটাকে দুধ খাওয়াচ্ছি, তখন অনেক কাজের চাপ। বাচ্চাটাকে ছেড়ে যেতে পারছি না। বাচ্চারও খিদে পেয়েছে। হরমোনের কারণে আমিও তখন ভেসে যাচ্ছি দুধে। সেই সময়টা খুব অসহায় মনে হতো। কিন্তু যত সময় যাচ্ছে, বড় হচ্ছে, ও আমাকে বুঝতে শিখছে। মেয়ে যত বড় হচ্ছে, আমারও মাতৃত্বের বয়স বাড়ছে। এখন যেমন ঘুম পেলে বলতে পারি, ‘পুটুলি প্লিজ আমাকে ঘুমোতে দে। প্রচুর কাজের চাপ।’ আগে ও বুঝতে পারত না। এখন বুঝতে পারে। আমি ওকে জোর করে বোঝাই যে, মায়ের কী পছন্দ সেটাও ওকে বুঝতে হবে। এভাবেই মাতৃত্বের যে ডিগ্রি সেটা রোজ পড়াশোনা করতে-করতে অর্জন করছি। এভাবেই মেয়েটা বড় হয়ে যাবে। তারপর অবশ্য সমস্যার ধরনগুলো বদলাবে, সেটা জানি।”





