স্ত্রী মুসলিম, তাই শেষ ইচ্ছা পূরণ করতে মৃত্যুর পর কবর দিয়েছিলেন বলিউডের এই হিন্দু সুপারস্টার
১৯৫৮ সালে নার্গিসকে বিয়ে করেন সুনীল দত্ত। হিন্দু নায়কের মুসলিম নায়িকাকে বিয়ে করা নিয়ে সেই সময় বিতর্কের ঝড় উঠেছিল বলিউডে। তবে সেই বিতর্ককে পাত্তা দেননি নার্গিস ও সুনীল।

সুনীল দত্ত এবং নার্গিস। বলিউডের কিংবদন্তি এই তারকা জুটির প্রেমকাব্য সিনেমার চিত্রনাট্যকে হার মানাতে পারে। যে নার্গিসের সঙ্গে প্রেম গুঞ্জন ছড়িয়ে ছিল রাজ কাপুরের, সেই নার্গিসকেই প্রথম দেখায় মন দিয়েছিলেন সুনীল দত্ত। তবে সাহস করে প্রেমের কথা বলতে না পারায়, এই প্রেম বেশ কিছু বছর ধরে গোপনে ছিল শুধু সুনীলের মনেই। তবে বলে না, রব নে বনাদি জোড়ি! সুনীল ও নার্গিসের জীবনেও এমনটা ঘটল। মাদার ইন্ডিয়া ছবির শুটিং ফ্লোরের এক অগ্নিকাণ্ডই কাছাকাছি এনে দিল সুনীল ও নার্গিসকে। সেই অগ্নিকাণ্ডের পর যেভাবে নার্গিসের যত্ন নিয়েছিলেন সুনীল, তা প্রমাণ করে নার্গিসের প্রতি তাঁর সত্যি ভালবাসাকে।
১৯৫৮ সালে নার্গিসকে বিয়ে করেন সুনীল দত্ত। হিন্দু নায়কের মুসলিম নায়িকাকে বিয়ে করা নিয়ে সেই সময় বিতর্কের ঝড় উঠেছিল বলিউডে। তবে সেই বিতর্ককে পাত্তা দেননি নার্গিস ও সুনীল। বরং তাঁদের সংসার ছিল আনন্দে ভরা। সুনীল ও নার্গিসের রয়েছে তিন সন্তান। সঞ্জয় দত্ত, প্রিয়া দত্ত এবং নম্রতা দত্ত। তিন সন্তান নিয়ে ভালই চলছিল সুনীল ও নার্গিসের জীবন। কিন্তু আটের দশকে হঠাৎই ক্যানসার ধরা পড়ে নার্গিসের। সুনীলের পরিবারে ওঠে ঝড়।
১৯৮১ সাল। ছেলে সঞ্জয় দত্তের প্রথম ছবি রকি মুক্তি পাওয়ার ঠিক তিন দিন আগে শেষ নিশ্বাস ত্য়াগ করেন নার্গিস। মাকে হারিয়ে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিলেন সঞ্জয় দত্ত। আর সুনীল দত্তের চোখের জল সামলানো ছিল কঠিন। ঠিক সেই সময় ফের বিতর্ক ওঠে সুনীল ও নার্গিসকে নিয়ে।
নার্গিস চেয়েছিলেন তাঁর মৃত্যুর পর যেন তাঁকে কবর দেওয়া হয়। সুনীল স্ত্রীয়ের শেষ ইচ্ছা পূরণ করেছিলেন। কিন্তু নিন্দুকরা প্রশ্ন উঠিয়েছিলেন, হিন্দু ঘরের স্ত্রী হয়ে কীভাবে কবর হতে পারে! সুনীলের এই সিদ্ধান্তের জন্য অনেক কটাক্ষও শুনতে হয়েছিল। কিন্তু সুনীল স্পষ্ট বলেছিলেন। নার্গিসের শেষ ইচ্ছাই সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

