AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

মৃত্যুর ঠিক আগে বেড়ানোর পরিকল্পনা করেন ইরফান, প্রয়াণের এক বছরে স্মৃতিচারণ সুতপার

ইরফানের চলে যাওয়ার শোক সামলে উঠতে সময়ই একমাত্র ওষুধ। এ কথা নাকি সুতপাকে তাঁর প্রিয়জনেরা সকলেই বুঝিয়েছিলেন। তিনিও অপেক্ষা করেছিলেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হয়তো সব কিছুই স্বাভাবিক হয়ে যাবে। ইরফানের না থাকাটা তিনি সামলে উঠতে পারবেন। কিন্তু বাস্তবে নাকি তেমনটা হয়নি।

মৃত্যুর ঠিক আগে বেড়ানোর পরিকল্পনা করেন ইরফান, প্রয়াণের এক বছরে স্মৃতিচারণ সুতপার
দম্পতি।
| Updated on: Apr 28, 2021 | 11:39 AM
Share

২৯ এপ্রিল, ২০২০। প্রয়াত হয়েছিলেন অভিনেতা ইরফান খান (Irrfan Khan)। দীর্ঘদিন দিন ক্যানসারের সঙ্গে তাঁর লড়াই থেমে গিয়েছিল। ইরফানকে ছাড়াই এক বছর কাটিয়ে ফেললেন তাঁর স্ত্রী সুতপা শিকদার (Sutapa Sikdar)। ইরফান-সুতপার দাম্পত্য সম্পর্কের থেকেও বন্ধুত্বের সম্পর্কটা অনেক বেশি জোরালো ছিল। তাই ইরফানকে হারিয়ে কার্যত এক বন্ধুকে হারিয়েছেন সুতপা। এক বছর প্রিয় বন্ধুকে ছাড়া কেমন আছেন তিনি? সদ্য এক সাক্ষাৎকারে মুখ খুলেছেন।

“একটা বছর ভাল-মন্দ মিশিয়ে কেটেছে। কখনও সব কিছুই মনে হচ্ছে স্বাভাবিক। আমি স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করছি। কখনও মনে হচ্ছে, ঘটনাটা গতকালই ঘটেছে। ফলে ঠিক কেমন আছি, জানি না”, বলেছেন সুতপা।

ইরফানের চলে যাওয়ার শোক সামলে উঠতে সময়ই একমাত্র ওষুধ। এ কথা নাকি সুতপাকে তাঁর প্রিয়জনেরা সকলেই বুঝিয়েছিলেন। তিনিও অপেক্ষা করেছিলেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হয়তো সব কিছুই স্বাভাবিক হয়ে যাবে। ইরফানের না থাকাটা তিনি সামলে উঠতে পারবেন। কিন্তু বাস্তবে নাকি তেমনটা হয়নি। এক বছর নেহাত কম সময় নয়। কিন্তু এখনও সামলে উঠতে পারেননি সুতপা।

সুতপার কথায়, “আমি কাজের অফার পেয়েছি। লেখার অফার পেয়েছি। কিন্তু লিখতে পারছি না। অনেকেই জানতে চাইছেন, তুমি কি লেখার জন্য প্রস্তুত? কিন্তু হচ্ছে না আমার দ্বারা। তবে কিছু দায়িত্ব আছে আমার। সেগুলো করছি। যদি কোনও কাজই না থাকত, তাহলে খুব মুশকিল হত। কিন্তু কখনও কখনও অসহায়তা ঘিরে ধরে। মানে ধরুন, আমি শুয়ে রয়েছি। কেউ পেটে খুব জোরে মারল। ব্যথাটা ঠিক তেমনই। এই অসহায়তা খুব কষ্টের।”

সুতপা আরও জানান, ইরফানের তুলনায় তিনি অনেক বেশি পজিটিভ। ইরফানের মন খারাপ হত। ডিপ্রেশন হত। তাতে অনেকদিন ডুবে থাকতেন তিনি। কিন্তু সুতপার ব্যক্তিত্ব এমন নয়। কিন্তু এখন পরিস্থিতির কারণে অদ্ভুত মানসিক অবস্থার মধ্যে রয়েছেন তিনি। ঘুমেরও ব্যঘাত ঘটছে তাঁর। ইরফান দিনভর শুটিং নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন। সুতপা থাকতেন নিজের মতো। তাঁদের বন্ধু সংখ্যা খুবই কম। তাঁরা দু’জনেই দু’জনের বন্ধু ছিলেন। ইরফান সারাদিন তাঁর কাছে না থাকলেও, যেটুকু সময় পাওয়া যাবে ইরফানের সঙ্গে কাটাতে পারবেন, এটা জানতেন তিনি। ইরফান শুটিং থেকে ফিরলে একসঙ্গে বসে সিনেমা দেখতেন তাঁরা। সেই সময়গুলোই উপভোগ করার। সেই সময়গুলো মনে পড়লেই মন খারাপ। যা থেকে আজও বেরতে পারেননি তিনি।

আরও পড়ুন, অস্কারের মঞ্চে ইরফান খান এবং ভানু আথাইয়াকে স্মরণ

মৃত্যুর দু’মাস আগে নাকি বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন ইরফান। সুতপা জানিয়েছেন, ইরফানের শারীরিক অবস্থা দেখে চিকিৎসকরা বলেছিলেন, এই অবস্থায় রোগীরা আরও পাঁচ বা ১০ বছর বাঁচতে পারেন। ফলে এই অঘটনের জন্য তাঁরা কেউই তৈরি ছিলেন না। এমনকি নতুন একটি চিত্রনাট্য নিয়েও ইরফান আগ্রহী ছিলেন। সুতপা শেয়ার করেছিলেন, “ওর আর বাবিলের জন্য একটা স্ক্রিপ্ট ও দেখেছিল। একজন কোচের গল্প। যিনি বিশেষ ভাবে সক্ষম শিশুদের ফুটবলের কোচিং করান এবং টুর্নামেন্ট জেতেন। ইরফান বলেছিল, বাবিল যদি এই ধরনের অভিনয় করতে চায়, তাহলে এই ছবিটা ওর করা উচিত। আমি এই ছবিটা ওর জন্য করব।”

ইরফান নাকি বলতেন, সুস্থ হয়ে গেলেও বছরে একটার বেশি ছবি আর তিনি করবেন না। লন্ডনে চিকিৎসার সময় পরিবারের সঙ্গে অনেক কিছু করেছিলেন, যা অনেকদিন ব্যস্ততার কারণে করতে পারেননি। পরিবারকে সময় দেওয়াই তাঁর পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু সেই স্বপ্ন বা পরিকল্পনা অধরাই থেকে গেল।