Durga Puja 2021: আমার কাছে অষ্টমী মানে শাড়ি, আর সন্ধের আকর্ষণ ধুনুচি নাচ: শ্বেতা ভট্টাচার্য
Durga Puja 2021: আমাদের অনেকদিন ধরে একটা নিয়ম ছিল। যখন দিদুন বেঁচে ছিল আমরা মামারবাড়ি যেতাম। এখন তো দিদুন নেই। মা, বড়বৌদি, বড়দা, আমি, বড়জেঠি সকলে মিলে একসঙ্গে অঞ্জলি দিই। এ বারও দিলাম।
পুজোর সময় কলকাতা ছেড়ে যাওয়ার প্রশ্নই নেই। আর পুজোর মধ্যেও অষ্টমীর দিনটা সবথেকে বেশি স্পেশ্যাল। আমার কাছে অষ্টমী মানে শুধুই শাড়ি। অষ্টমীর অঞ্জলি শাড়ি ছাড়া অন্য কিছুতে ভাবতেই পারি না। ঘুম থেকে উঠে দেখলাম মা রেডি হয়ে গিয়েছে। স্নান করে রেডি হয়ে তাড়াতাড়ি মন্ডপে গেলাম। এক রঙা স্টিল এবং অ্যাশ মেলানো একটা শাড়ি পরেছি আজ। এমনিতে লাল-সাদা ঘেঁষা রঙের শাড়ি পরি। এ বার একেবারে অন্য রঙের শাড়ি পরেছি। বাড়ির সামনেই পুজো হয়।
আমাদের অনেকদিন ধরে একটা নিয়ম ছিল। যখন দিদুন বেঁচে ছিল আমরা মামারবাড়ি যেতাম। এখন তো দিদুন নেই। মা, বড়বৌদি, বড়দা, আমি, বড়জেঠি সকলে মিলে একসঙ্গে অঞ্জলি দিই। এ বারও দিলাম। এরপর বাড়িতে সকলে এক জায়গায় বসে ভাইরা, বোনরা, দিদিরা মিলে কচুরি খাই। আজকের সন্ধের আকর্ষণ ধুনুচি নাচ। সন্ধিপুজোও আছে। পাড়াতেই থাকব। আমি দমদম ক্যান্টনমেন্টে থাকি।
আমি শুনেছি গেঁয়ো যোগী ভিখ পায় না। কিন্তু আমার ব্যাপারটা একটু অন্য। গত বছর থেকে আরও অন্যরকম হয়েছে। পুজোর মধ্যে যমুনা ঢাকি এফেক্টটা বেশি ইমপ্যাক্ট ফেলেছে হয়তো। সে জন্য হয়তো বেশি কদর। পাড়ার লোকেরা তো ছোট থেকেই দেখছে আমাকে। কিন্তু গত বছর থেকে হয়তো ব্যাপারটা একটু আলাদা। পুজোতে মন্ডপেই থাকি। ভোগ বিতরণ করি। সকলে ছবি তোলেন। নিজের লোকেরাও সেলফি তোলেন, সেটা মজা হয়। পুজোর সময়ই তো সকলের সঙ্গে দেখা হয়। ভাল লাগে।
ঢাক বাজানোর অনুরোধ এখন সব জায়গায় আসে। শো করতে গেলেও সঙ্গে ঢাক ধরিয়ে দেয়। তিনটে শোতে একই জামা পরে গিয়েছিলাম। কারণ ঢাক বাজাতে হয়েছিল। ওই জামাটাই ত্যাগ করে দিয়েছি। জামাটাই আর পরব না। পাড়াতেও হয়তো ঢাক বাজাব।
আমি কমিটেড। এই পাঁচটা দিন আমি সকলকে এত সময় দিই যে, তার জন্য সময় বের করতে পারি না। স্কুল লাইফ থেকে ২৪-২৫ বছরের একটাই বন্ধু আছে আমার। বেস্ট ফ্রেন্ড, দেবযানী। ওর সঙ্গে পুজোতে বেরতেই হয়। মা, দেবযানী, কাকিমা মানে ওর মা, ওর বৌদি সকলে মিলে বেরিয়েছি। বাবা, মায়ের সঙ্গে বেরোই একদিন। আজ বড়মামির বাড়িতে যাব। ওদের পাড়াতে বড় করে পুজো হয়। বছরে একবার ভাই-বোনেরা একসঙ্গে হই। ফলে সময় কেটে যায়।
আগামিকাল নবমীর দিন সকালে আমার আর এক মা আছে, আমার বন্ধুর মা। আমাকে খুব ভালবাসে। ওদের বাড়ি যাব। বিকেলে পাড়াতে আড্ডা। দশমীর দিন দিদি আর ওর মেয়ে আসবে। সকলে মিলে বরণ করতে যাব। আমাদের বাড়ির নিয়ম, মা জলে পড়ছে সেটা দেখতে হবে। সেটা দেখার পর বিজয়া শুরু হয়। বাড়ির সবথেকে বড় যিনি, তাঁর কাছে আগে যাওয়া হয়। ঠাকুমা যখন বেঁচে ছিলেন, তখন তাঁর কাছে যেতাম। ঠাকুমাকে আমি অন্য মা বলে ডাকতাম। তারপর বড় জেঠুর কাছে যেতাম। তিনি মারা গিয়েছেন। এখন জেঠির কাছে যাই। তারপর মেজজেঠি। মামি। সকলের কাছে গিয়ে প্রণাম করে বাড়ি ফিরি।
এর মধ্যে তার জন্য সময় নেই। এমনিতেই তো তার জন্য অঢেল সময়। ফোনে সারাক্ষণই তো আছে। আর পুজোর সময় সেও তার বাড়ির লোকেদের সময় দিচ্ছে। বাকি সারা বছর তো আমাদের রইলই…।