সকাল থেকেই শুরু হয়েছিল তোড়জোড়। লাল কাপড়ে মুড়ে গণপতিকে নিয়ে এসেছিলেন নিজের বুটিকে। কথা হচ্ছে সুদীপা চট্টোপাধ্যায়ের। এ বার গণেশ চতুর্থী গতবারের থেকে অনেকটাই আলাদা। মাস কয়েক আগে নিজের শাড়ির ব্যবসা শুরু করেছেন তিনি। সেখানেই প্রথম বার হল গণপতির আরাধনা।
নাকে নথ, কপালে ছোট্ট টিপ, একেবারে খাঁটি মরাঠি মুল্গী সাজেই নিজেকেই সাজিয়েছিলেন সুদীপা। ছেলে আদিদেবের পোশাকেও ছিল সাবেকিয়ানা। মায়ের কোলে বসে দিব্যি পুজোতে অংশ নিল সে। ছবিও তুলল বেশ কয়েকটি। সেই ছবি শেয়ার করেছেন সুদীপা নিজেই। আর শেয়ার করতেই ছোট্ট আদির উপর ভালবাসা উপচে দিয়েছেন নেটিজেন। হাবেভাবে কায়দায় আদি নাকি সাক্ষাৎ ছোট্ট গণেশ- এমনটাই মনে করছেন ওঁরা। একজন লিখেছেন, “দেখে মনে হচ্ছে যেন দেবী পার্বতী ছেলেকে নিয়ে বসে রয়েছেন”। আর একজনের মন্তব্য, “জন্মাষ্টমীতে কৃষ্ণ সাজিয়েছিলেন ওকে… এ বার দেখে মনে হচ্ছে যেন ছোট্ট গণেশ।” নতুন দোকানে প্রথম বার পুজো যে ভালভাবেই সম্পন্ন হয়েছে তা জানান দিচ্ছে মা-ছেলের হাসি।
সুদীপার ছেলে আদিদেভ চট্টোপাধ্যায় জন্মের পর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ার সেনসেশন। আদিদেভকে পছন্দ করেন সোশ্যাল অডিয়েন্সের বড় অংশ। ফেসবুক বা ইনস্টাগ্রামে আদিদেভের নানা কর্মকাণ্ডের ছবি শেয়ার করেন সুদীপাও। বেশ কয়েক মাস আগে ছেলের সঙ্গে নিজের একটি ছবি শেয়ার করে লিখেছিলেন, ‘মা হওয়াটা আমার অস্তিত্বের জন্য এখন যথেষ্ট…অভিভাবক হওয়ার কোনও নির্দিষ্ট নিয়ম নেই। কিন্তু আপনাকে খুব দ্রুত শিখতে হবে। শিখতে হবে প্রথম পদক্ষেপ নেওয়ার আগেই।’ সুদীপার স্বামী অগ্নিদেব চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিয়ের বেশ কয়েক বছর পর আদিদেভের জন্ম। ফলে প্রথম সন্তানের জন্য বেশ সময় নিয়ে পরিকল্পনা করেছিলেন দম্পতি। মা হতে গেলে শরীরে এবং মনে যে প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন, তা পুরোদস্তুর নেওয়ার পরই সন্তানের সিদ্ধান্ত নেন সুদীপা। আদিদেভের জন্মের পর ছেলের প্রতিটি কাজ নিজে হাতে করেছেন। দীর্ঘদিন কর্মবিরতির পর কাজে ফিরেছিলেন সুদীপা। আসলে ছেলের বড় হওয়ার কোনও মুহূর্ত মিস করতে চাননি তিনি। অভিভাবকত্বের পাঠ নিয়েছেন সন্তান আগমনের আগে থেকেই।
টেলিভিশনে বিভিন্ন রকম কাজের সঙ্গে জড়িত তিনি। কখনও রান্নার শো-এর জনপ্রিয় অ্যাঙ্কর। কখনও বা স্ক্রিপ্ট লিখছেন। কখনও আবার তিনি পরিচালকের আসনে। সদ্য নিজের বুটিক শুরু করেছেন। পেশাদার জগতে বিভিন্ন রকম পরিচয় রয়েছে তাঁর। আবার ব্যক্তি জীবনেও কখনও তিনি স্ত্রী, কখনও বা মেয়ে। তবে সব পরিচয় ছাপিয়ে মায়ের পরিচয়টাই যেন এখন তাঁর জীবনের অন্যতম সম্পদ। তাঁর সর্বক্ষণের সঙ্গী ছোট্ট আদিদেব।