বাংলার রঙ্গমঞ্চে নারীদের কী অবদান? ইতিহাসের দলিল রেখে দিল থিয়েলাইট নাট্যোৎসব
'ষোড়শ থিয়েলাইট নাট্যোৎসব' অনুষ্ঠিত হয় তৃপ্তি মিত্র সভাগৃহে। এই বছরের নাট্যোৎসবের অন্তরঙ্গতা। নাট্যোৎসবের প্রথম দিন প্রদীপ প্রজ্জলনের মধ্য দিয়ে উৎসবের সূচনা করেন কোচবিহার মাথাভাঙা গিলটিন নাট্যদলের পরিচালক নারায়ণ সাহা।

নাটকের পথে হাঁটার শুরু সেই ২০০১ সালে। দেখতে দেখতে পার হয়ে গিয়েছে ২৪টা বছর। এই বছর আবার রজত জয়ন্তী বর্ষে পদার্পণ করতে চলেছে থিয়েলাইট। সৎ ভাবে থিয়েটার যাপনের এই চলায় এবং নাট্যভাবনাকে আরও আরও মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্যেই ১৬ বছর ধরে নিয়মিত নাট্যোৎসবের আয়োজন করে আসছে থিয়েলাইট। এই বছরেও তার অন্যথা হয়নি।
‘ষোড়শ থিয়েলাইট নাট্যোৎসব’ অনুষ্ঠিত হয় তৃপ্তি মিত্র সভাগৃহে। এই বছরের নাট্যোৎসবের অন্তরঙ্গতা। নাট্যোৎসবের প্রথম দিন প্রদীপ প্রজ্জলনের মধ্য দিয়ে উৎসবের সূচনা করেন কোচবিহার মাথাভাঙা গিলটিন নাট্যদলের পরিচালক নারায়ণ সাহা।
দুই সন্ধ্যায় থিয়েলাইট পরিবেশনা করে দুটি নাটক। ‘ব্রাহ্মণ ও ব্রাহ্মণী’ এবং ‘অ-মৃতার সন্ধানে’। দুই নাটকের নির্দেশক অতনু সরকার। ছিল মহুয়া বিশ্বাসের একক নৃত্য নাট্য ‘মা তুঝে সালাম’। তবে দু’দিনের এই উৎসবের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল ‘স্টার থেকে বিনোদিনী রঙ্গমঞ্চে নারী’ শীর্ষক থিয়েটার বিষয়ক আলোচনা। বাংলা তথা ভারতের রঙ্গমঞ্চকে যাঁরা আলোকিত করেছেন নিজের কাজের মাধ্যমে। তাঁদের কথা তুলে ধরেন এই যুগের চার কৃতি পরিচালক-অভিনেত্রী। এই দিন আলোচক হিসেবে ছিলেন বর্ষীয়ান নাট্য পরিচালক ও অভিনেত্রী জয়তী বসু, নাট্য পরিচালক অর্পিতা ঘোষ, অভিনেত্রী সেঁজুতি মুখোপাধ্যায় ও সঞ্চালনায় ছিলেন আরেক কৃতি পরিচালক তথা ন্যাশনাল স্কুল অফ ড্রামার প্রাক্তনী অদ্রিজা দাশগুপ্ত।
এই নাট্যোৎসব নিয়ে বলতে বসলে আরও একটা কথা না বললে বিষয়টা অসম্পূর্ণ থেকে যায়। তা হল থিয়েলাইটের সদস্যদের প্রচেষ্টায় সেজে ওঠা তৃপ্তি মিত্র নাট্যগৃহের সেমিনার হল। দেড় শতক আগের আর্চ ওয়ালা খড়খড়ি দেওয়া দরজা, বনেদি বাড়ির পুরনো কাঠের চেয়ার, বক্তাদের জল পানের জন্য কাঁসার গ্লাস-কোস্টার, টেবিলে রাখা গ্রামোফোন সবই বেশ সুচারু ভাবে এঁকে দিচ্ছিল সময়ের প্রতিচ্ছবি। সঙ্গে মধ্যিখানে ধূসর রঙের পরলোকগত অভিনেত্রীদের ছবি। নরম আলোর সঙ্গে সাযুজ্য রেখে বাজছিল সেতারে ভিম-পলেশ্রী।
১৮৭২ থেকে ২০২৫, এই সময়কালে বাংলা থিয়েটারে যে সকল অভিনেত্রী থেকে নাট্যকর্মী তাঁদের উজ্জ্বল উপস্থিতিতে বাংলা থিয়েটারকে সমৃদ্ধ করেছেন এবং করে চলেছেন তাঁদের অবদান এবং বহুজনের যে সামাজিক ও থিয়েটারিক নৈমিত্তিক সংগ্রাম তা উঠে এসেছে চার আলোচকের কথপোকথনে।
পরিপূর্ণ নাট্যগৃহে, শ্রোতা ও বক্তাদের প্রশ্নোত্তরে আলোচনা শুধু জমেই ওঠেনি সাধারণকে ঋদ্ধও করেছে। এই বছর থিয়েলাইটের ২৫ বছর। জুন থেকেই শুরু হবে রজন্ত জয়ন্তী যাপন! থিয়েটারের দর্শকরাও আরও নতুন কিছু পাবে বলে আশা।





