Sardar Udham Filmfare: যাঁর গুণ আছে, কোনও নেপোটিজ়ম বা স্বজনপোষণই তাঁকে আটকে রাখতে পারবে না: অভীক মুখোপাধ্যায়
Avik Mukherjee: এখন তো সকলে মিলে মিশেই কাজ হচ্ছে। ভাল কাজ হচ্ছে, এখন এটা হেলদি কোল্যাবোরেশন। এখন তো আর ওই সীমানার বিষয়টা নেই।

জয়িতা চন্দ্র
ছোট থেকেই ছবির প্রতি, অভীক মুখোপাধ্যায়ের ছিল বিশেষ আকর্ষণ। প্রতি বছর দুর্গাপুজোয় ছবি দেখানো হতো পাড়ায়, আসত বড়-বড় পর্দা। তবে ছবি দেখা নয়, ছবি দেখানোর মেক্যানিজ়মই অভিভূত করত অভীককে। স্বপ্ন বাস্তববায়িত হয়েছিল ১৯৯৯-এ, ঋতুপর্ণ ঘোষের সৌজন্যে তাঁর প্রথম চিত্রগ্রহণ ‘অসুখ’ ছবিতে। সেই শুরু পথচলা। কেটে গিয়েছে ২৩টা বছর, সিনেম্যাটোগ্রাফার হিসেবে কাজ করেছেন ৩০টি ছবিতে। এখন তিনি টলিউড থেকে বলিউড- বিরাজ সর্বত্রই। এবার সর্দার উধম ছবির জন্য, ফিল্মফেয়ার ২০২২-এর মঞ্চে সেরা চিত্রগ্রাহকের অ্যাওয়ার্ড উঠল তাঁর হাতে। TV9 বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কী জানালেন বাঙালি চিত্রগ্রাহক…
১. ‘সর্দার উধম’-এর জন্য ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড, কেমন ছিল সেই জার্নিটা?
ছবিটা বায়োপিক নয়। ফলে সেটা অন্য ধাঁচে গড়া। ছবির চরিত্রের জার্নিটা ভারতবর্ষ থেকে রাশিয়া, লন্ডন ঘুরে আসে। এই সফরের মধ্যে দিয়েই একটা মানুষকে চেনা যায়। তার উদ্দেশ্য কী, তার জীবনের লক্ষ্য কী, সেগুলো চেনায়। সেটাকে ফুটিয়ে তুলতেই বিভিন্ন রকমের ভিজ়ুয়ালের প্রয়োজন হয়েছে। সেই কাজটাই করেছি।
২. আপনার তো দীর্ঘ সফর, মৃণাল সেন থেকে সুজিত সরকার, কাজের ধরনে কতটা ফারাক চোখে পড়ে?
সেটা হয়তো অ্যাপ্লিকেশনের দিক থেকে খুব একটা পাল্টাচ্ছে না। তবে টেকনোলজি বদলাচ্ছে, ছবির উপস্থাপনা পাল্টাচ্ছে—সেই দিক থেকে পরিবর্তন হয়েছে ঠিকই। কিন্তু আমি যাঁদের সঙ্গে কাজ করেছি, তাঁরা যথেষ্ট মনোযোগী। সুজয় বোস, সুজিত সরকার—এরা কাজটা নিয়ে সত্যিই সিরিয়াস।
৩. আপনারা তো টলিউডের স্তম্ভ, বলিউডেও দাপটের সঙ্গে কাজ করছেন, এই কোল্যাবোরেশনটা মাঝে কিছু বছর হারিয়ে গিয়েছিল, বর্তমানের ছবিটা সম্পর্কে আপনার কী মত?
এখন তো সকলে মিলে মিশেই কাজ হচ্ছে। ভাল কাজ হচ্ছে, এখন এটা হেলদি কোল্যাবোরেশন। এখন তো আর ওই সীমানার বিষয়টা নেই। ভারতবর্ষের সব জায়গার মানুষ সব জায়গায় গিয়ে কাজ করছে। কেরলের শিল্পী এসে মুম্বইয়ে কাজ করে, পশ্চিমবঙ্গে এসে কাজ করে। আবার পশ্চিমবঙ্গ থেকে গিয়ে মুম্বইয়ে কাজ করে। সুতরাং সেই নির্দিষ্টি গণ্ডিটা আর নেই। শিল্প এখন গ্লোবাল।
৪. বলিউডকেও দীর্ঘ দিন ধরে দেখছেন আপনি, সত্যি কি অন্দরমহলে জায়গা করে নেওয়াটা বহিরাগতদের জন্য কঠিন?
দেখুন, আমার মতে যাঁর গুণ আছে, তিনি ঠিকই নিজের জায়গা করে নেবেন—নেবেনই। কোনও নেপোটিজ়ম বা স্বজনপোষণ তাঁকে আটকে রাখতে পারবে না। যিনি পারেন, তিনি দাঁড়াবেনই—এটা আমার বিশ্বাস।
৫. ঋতুপর্ণ ঘোষের সম্পূর্ণ জার্নিটারই সাক্ষী আপনি—কেমন ছিল সেই অধ্যায়?
ঋতুপর্ণ ঘোষের জার্নি নিয়ে নতুন করে তেমন কিছুই বলার নেই। সবটাই তো সকলের জানা। ওঁর কাজের সঙ্গে সকলেই ভীষণ পরিচিত। উনি নিজের একটা জগৎ তৈরি করে রেখেছিলেন। সেই জগতে আমরা অনেকেই ছিলাম। আমার মতো অনেকেই ছিলেন, যাঁরা এই জার্নিটায় সামিল ছিলেন। সেটাকে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের একটা বলয়ও বলা যেতে পারে। যে জগতটা এই বন্ধুত্বের ভিতের উপরেই তৈরি। আর একটা কথা বলতে পারি, ঋতুপর্ণ ঘোষের মতো পরিচালক বোধহয় পরবর্তীতে আর কেউ আসেননি। আমি অনেকের সঙ্গেই কাজ করেছি। আমি মৃণালদার (মৃণাল সেন) সঙ্গে কাজ করেছি, অপর্ণা সেনের সঙ্গে কাজ করেছি। তবে ঋতুপর্ণর একটা আলাদা পৃথিবী ছিল। সেই পৃথিবীটা তৈরিতে আমরা সকলেই সহযোগিতা করেছিলাম।
