ইন্ডাস্ট্রিতে ২১ বছর, প্রথম দিনের কথা ভাবলে পূর্বজন্ম বলে মনে হয় বিশ্বনাথ বসুর

দীর্ঘ কেরিয়ারে বহু ভাললাগার মুহূর্ত এসেছে। যা বিশ্বনাথের সারা জীবনের সঞ্জয়। তবে একটি দিনের কথা তিনি কখনও ভুলবেন না।

ইন্ডাস্ট্রিতে ২১ বছর, প্রথম দিনের কথা ভাবলে পূর্বজন্ম বলে মনে হয় বিশ্বনাথ বসুর
বিশ্বনাথ বসু। ছবি: ফেসবুক থেকে গৃহীত।
Follow Us:
| Updated on: Jun 02, 2021 | 12:42 PM

বিশ্বনাথ বসু (Biswanath Basu)। গত ২১ বছর ধরে বাংলার দর্শককে বিনোদন দিচ্ছেন। কখনও মঞ্চ, কখনও টেলিভিশন, কখনও বা সিনেমার পর্দায় বিশ্বনাথকে দেখেছেন দর্শক। আশীর্বাদ করেছেন। সেই আশীর্বাদই অভিনেতার এগিয়ে যাওয়ার পাথেয়। ইন্ডাস্ট্রিতে ২১ বছর পূর্ণ করে ফিরে দেখলে দর্শকের আশীর্বাদ, ভালবাসার কাছে মাথা নত হয়ে আসে বিশ্বনাথের।

২১ বছর পরে প্রথম দিনের কথা ভাবলে কী মনে পড়ে? প্রশ্নের উত্তরে TV9 বাংলাকে বিশ্বনাথ বললেন, “হাটে বাজারে দেখছিলাম গতকালই। আমার একটা সব সময় বলা কথা রয়েছে ওখানে। প্রথম দিনের কথা ভাবলে পূর্বজন্মের কথা বলে মনে হয়। কারণ ব্যারাকপুর, আমাদের বাড়ি, ব্ল্যাক অ্যান্ড হোয়াইট টিভি, পাশের বাড়িতে ফোন আসত, আমাদের টেলিফোন ছিল না। আমি, বাবা, মা, ভাই থাকতাম। নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার। মূল্যবোধ ছিল। ভাল সিনেমা, ভাল থিয়েটার করতে হবে সেই ইচ্ছে ছিল।”

সঙ্গীত শিল্পী পল্লব ঘোষের কাছে কৃতজ্ঞতার কথা জানালেন বিশ্বনাথ। তিনিই প্রথম অভিনেতা শুভাশিস মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিশ্বনাথের পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন। “মনে আছে আমার, ‘পিয়ালি প্রোডাকশন’। নিয়মিত যাতায়াত করতাম। কবে শুরু হবে, কবে শুরু হবে, জানতে চাইতাম। সকালে আটটা বা ন’টায় কল টাইম ছিল। তার অনেক আগেই পৌঁছে গিয়েছিলাম। প্রথম দিন ইন্দ্রপুরীর লোহার গেট ধরে শপথ নিয়েছিলাম। এখানে শুধু আমি কাজ করতে এসছি। সেটাই যেন শেষ পর্যন্ত লক্ষ্য থাকে”, বললেন স্মৃতিমেদুর বিশ্বনাথ।

দীর্ঘ কেরিয়ারে বহু ভাললাগার মুহূর্ত এসেছে। যা বিশ্বনাথের সারা জীবনের সঞ্জয়। তবে একটি দিনের কথা তিনি কখনও ভুলবেন না। বিশ্বনাথ শেয়ার করলেন, “বিজয়া রায় ডেকে পাঠিয়েছিলেন। ‘ধ্যাততেরিকা’ সিরিয়ালের সময়। আমি গিয়েছিলাম। উনি তখন শয্যাশায়ী। হেসেছিলেন আমাকে দেখে, খেতে দিতে বলেছিলেন। এর থেকে বড় পাওয়া আর কী হতে পারে।”

ভালবাসার পাশাপাশি খারাপ অভিজ্ঞতাও কম হয়নি অভিনেতার। হয়তো সে সব তাঁকে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিণত করেছে। বিশ্বনাথের কথায়, “আমি একটা দৃশ্য অভিনয় করে দেখাচ্ছি। এক অভিনেতা বলেছেন, ভীষণ অতি নাটকীয় করছি। পরে এক স্বনামধন্য পরিচালক ওই একই দৃশ্যে অভিনয়ের জন্য প্রশংসা করেছিলেন। আমি ধন্দে পরে গিয়েছিলাম। অগ্রজ ঠিক বলছেন, নাকি পরিচালক ঠিক বলছেন। অগ্রজ কি আমাকে অন্য পথে চালনা করার চেষ্টা করছেন? এ সব ধন্দ থেকে বেরিয়ে আসার জন্য নিজের কান তৈরি করা দরকার। ১০০ শতাংশ অভিনয়ের প্রতি সততা প্রয়োজন।”

লকডাউনে আপাতত পরিবারের সঙ্গে বাড়িতেই সময় কাটাচ্ছেন বিশ্বনাথ। সিনেমা দেখা, বই পড়া, দুই ছেলের সঙ্গে গল্প করে সময় কাটছে। বেশ কিছু ছবি মুক্তির অপেক্ষায়। টেলিভিশনের কাজেরও কথা হয়ে রয়েছে বলে জানালেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে শুরু হবে শুটিং।

তরুণ প্রজন্ম, যাঁরা এই ইন্ডাস্ট্রিতে কেরিয়ার তৈরি করার কথা ভাবছেন, অগ্রজ হিসেবে তাঁদের জন্য কী সাজেশন দেবেন? বিশ্বনাথ বললেন, “ইন্ডাস্ট্রির ইতিহাসটা যদি জানা যায়…। তার মানে রমাপ্রসাদ বণিকের ১০টা নাটকের নাম বলতে বলছি না। রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্তের ইতিহাস মুখস্ত করতে হবে তা নয়। আমরা তো পরিবারকে বহন করি। ইন্ডাস্ট্রিও তো পরিবার। পরিবারের প্রতি আস্থাশীল না হলে, ধ্যানধারণা না থাকলে কাজের প্রতি সেটা তুলে ধরতে পারব না। একবার একজনকে বলেছিলাম, তোমাকে অঞ্জনা ভৌমিকের মতো দেখতে, সে বুঝতে পারেনি। কারণ, সে অঞ্জনা ভৌমিককে চেনেই না। এটা সমস্যার।”

আরও পড়ুন, মানালি-অভিমন্যুর নয়া উদ্যোগ, যৌনকর্মীদের জন্য ক্রাউড ফান্ডিং দম্পতির