কফি ডেটের উপহার কখনওই বাচ্চা কুকুর হতে পারে না: দেবশ্রী রায়
Debashree Roy: আমাদের রাজ্যে, তথা আমাদের শহরে একটি সারমেয়কে নিয়ে তোলপাড় চলছে। একটি ছোট্ট কুকুর ছানার প্রাণ গিয়েছে সম্প্রতি। একটি নিরীহ কুকুর ছানা।
২৬ অগস্ট ছিল হ্যাপি ইন্টারন্যাশনাল ডগ ডে। সারা বিশ্বের সারমেয়প্রেমী মানুষ অন্যান্য দিনের মতো এই দিনটাও তাঁদের প্রিয় সারমেয়দের শুভকামনা করেছেন, তাদের সঙ্গে ভাল সময় কাটিয়েছেন। কিন্তু আমাদের রাজ্যে, তথা আমাদের শহরে একটি সারমেয়কে নিয়ে তোলপাড় চলছে। একটি ছোট্ট কুকুর ছানার প্রাণ গিয়েছে সম্প্রতি। একটি নিরীহ কুকুর ছানা। ঘটনার সঙ্গে নাম জড়িয়েছে পশুপ্রেমী অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্রর। তাতে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন আরও এক পশুপ্রেমী অভিনেত্রী দেবশ্রী রায়। তিনি বলেছেন, “কফি ডেটের উপহার কখনওই বাচ্চা কুকুর হতে পারে না।”
কিছুদিন আগের ঘটনা। একটি ছোট্ট কুকুর ছানাকে দত্তক নিলে সেই ব্যক্তির সঙ্গে কফি ডেটে যাবেন, বলেছিলেন অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র। শশাঙ্ক নামের এক ব্যক্তি সেই কুকুর ছানা দত্তক নেন ও শর্ত মতো শ্রীলেখাও তাঁর সঙ্গে ডেটেও যান। তারপর কিছুদিন কেটে যায়। শ্রীলেখা জুরিক বেড়াতে চলে যান। সোমবার জানা যায়, কুকুর ছানাটি মারা গিয়েছে । তারপর থেকে ঘটনা অন্যদিকে ঘুরে যায়। যে মহিলা কুকুর ছানাটি শশাঙ্ককে দত্তক দিয়েছিলেন, তিনি লাইভে এসে আবেগে ভেঙে পড়েন। লাইভেই শশাঙ্ককে শাসিয়েছেন, যে তিনি তাঁকে ছাড়বেন না।
এই ঘটনায় সাংঘাতিক মর্মাহত হয়ে পড়েন শ্রীলেখা নিজে। ঘটনার পরদিন তাঁর লুসার্নের ট্রিপ বাতিল পর্যন্ত করে দেন। সারাদিন জুরিকের হোটেলের ঘরে নিজেকে বন্দি করে রেখেছিলেন অভিনেত্রী। পরপর চলতে থাকে তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট। এই ঘটনায় তিনি বারবার নিজেকেই দায়ী করেছেন। তিনি মনে করেন, আরও খোঁজ খবর নেওয়া উচিত ছিল তাঁর। এদিকে শশাঙ্কর বাড়ি গিয়ে তাঁকে ঘর থেকে রাস্তায় টেনে আনেন এক স্বঘোষিত পশুপ্রেমী। কুকুরটি মারা (তাঁদের মনে হয়েছে অযত্নে মারা গিয়েছে) যাওয়ার কারণে তাঁকে সকলের সামনে ঠাস ঠাস করে গালে চড় মারেন। প্রকাশ্য রাস্তায় তাতে ওঠবোস করান। এই ঘটনার পর TV9 বাংলা যোগাযোগ করেন পশুপ্রেমী ও অভিনেত্রী দেবশ্রী রায়ের সঙ্গে, যিনি দীর্ঘ কুড়ি বছর সারমেয়দের নিয়ে কাজ করছেন। দেবশ্রী আমাদের বলেন, “দত্তক দেওয়ার একটা নিয়ম আছে। হুট করে কফি খাওয়ার নাম করে হয় না। এর কারণেই কী কী হল দেখুন। ছেলেটিকে মারও খেল। এসবের কোনওটাই ঠিক নয়। আমরা পশুপ্রেমীরা আবেগপ্রবণ হই। তাদের সন্তান হিসেবে দেখি। ফলত, যদি কোনও বাচ্চা এভাবে মারা যায়, তখন খুব ইমোশনাল হয়ে আমরা রিয়্যাক্ট করে ফেলি। হয়তো এই মহিলাও সেরকমভাবেই রিয়্যাক্ট করে ফেলেছেন। সেই দিক থেকে দেখতে গেলে একটি কফি ডেটের উপহার একটি বাচ্চা কুকুর হতে পারে না। একটা বাচ্চাকে সেই মানুষটি নিয়ে যাচ্ছে। দায়িত্বের প্রশ্ন আসে সেখানে। আমরা মানুষ হিসেবে এখনও যথেষ্ট সচেতন নই। যদি সচেতন হতাম, এই ঘটনাগুলো ঘটত না।”
অন্যদিকে জুরিক থেকে একটি ভিডিয়ো বার্তা TV9 বাংলাকে পাঠিয়েছেন শ্রীলেখা মিত্র। বলেছেন, “এই ঘটনার জন্য আমি নিজেকেই সম্পূর্ণ দায়ী করি। সত্যিই আমার আরও খোঁজ খবর নেওয়ার দরকার ছিল। অনেকে অনেক কথা বলছেন। অনেকে মনে করছেন আমি লোক পাঠিয়েছি, গুণ্ডা পাঠিয়েছি ছেলেটিকে মারার জন্য। যা খুশি ভাবতে পারেন। আমার সত্যিই কিছু এসে যায় না তাতে। কারওর নিজের বাড়ির কোনও বাচ্চার জন্য এমন হলে কেউ চুপ করে বসে থাকতে পারত কী?”
আরও পড়ুন: ‘আজ শিল্প নয়, শুধুই অনুভূতি’, কীসের উদ্দেশে বলেন মধুমিতা?
আরও পড়ুন: ভন্সালীর অফিসে সোনম কাপুর; ফের কাজ করছেন একই ছবিতে?