মঙ্গলবারের সন্ধে। ফেসবুক লাইভে আড্ডায় স্বয়ং দেব। অভিনেতা তথা সাংসদকে এ ভাবে সরাসরি পাওয়া দর্শকের কাছে আনন্দের তো বটেই। নিছকই আড্ডা দিতে বসেছিলেন তিনি। সঙ্গী অভিনেতা শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়। লাইভ আড্ডার ক্যাপশনে দেব লিখে দিয়েছিলেন, ‘আমার সাথে হবুচন্দ্রের আড্ডায় সামিল হোন, কথা দিচ্ছি আড্ডা শেষে জুড়িয়ে যাবে মন।’
আসন্ন দুর্গাপুজোয় মুক্তি পেতে চলেছে অনিকেত চট্টোপাধ্যায় পরিচালিত দেব প্রযোজিত ছবি ‘হবুচন্দ্র রাজা গবুচন্দ্র মন্ত্রী’ ছবিটি। শুরুতেই দেব বললেন, “আমার, অনিকেতদার, শাশ্বতদার, খরাজদার, অর্পিতাদির স্বপ্নপূরণের গল্প এটা। অনেকদিন পর রূপকথার গল্প। সবাইকে টানবে। সুমনদা, কবীর সুমন অসাধারণ মিউজিক করেছেন। উনি না থাকলে ছবিটা করা সম্ভব হত না। টাইটেল ট্র্যাকটা যে ভাবে বাচ্চাদের দিয়ে গাওয়ানো হয়েছে, অসাধারণ। বাংলা খেয়াল নিয়ে বাংলা ছবিতে খুব কম কাজ হয়েছে। কবীরদা লেজেন্ড। ধন্যবাদ ওঁকে।”
শাশ্বত আড্ডার শুরুতে দেবকে বলেন, “আমার কাছে ঠাকুরমার ঝুলির রেকর্ড আছে। এই সব গল্পের নাট্যরূপ রয়েছে সেখানে। তাছাড়াও ঠাকুমা, দিদিমা, দাদামশায়ের কাছে এ সব গল্প শুনে ঘুমোতে যেতাম। একটা ইচ্ছে তো ছিলই। সেটা এতদিন পরে তোর আর অনিকেতদার হাত ধরে পূরণ হল। কবীরদাকে সত্যিই ধন্যবাদ এই ছবির সঙ্গে যুক্ত থাকার জন্য।”
প্রথমে এই ছবিতে অভিনয় করার কথা ছিল দেবের। সঙ্গে ছিলেন রুক্মিণী মৈত্রও। কিন্তু পরে রাজা-রানির ভূমিকায় শাশ্বত চট্টোপাধ্যায় এবং অর্পিতাকে কাস্ট করা হয়। নিজে অভিনয় না করার সিদ্ধান্ত কেন নিয়েছিলেন? দেব বললেন, “আমার মনে হয়েছিল রাজা চরিত্রে একজন দুর্দান্ত অভিনেতা লাগবে। যে রাজাকে রাজার মতো প্রেজেন্ট করতে পারবে। অপুদা ছাড়া এই রাজাটা সম্ভব হত না। যখন অপুদা চলে আসছে, তখন মন্ত্রী আর একজন অসাধারণ অভিনেতাকে নিতে হবে। সে ভাবে খরাজদার কথা ভাবা। অর্পিতাদিও খুব সুন্দর ভাবে রানির চরিত্র করেছে, তিনজনের কেমিস্ট্রি…। আর শুভাশিসদা। আমি মনে করি আমরা টাইপকাস্ট হয়ে যাই। এই ছবিতে যা পারফর্ম করেছে শুভাশিসদা, যা মানিয়েছে এটা অকল্পনীয়। এ জন্য আমার ডিরেক্টর, কস্টিউম ডিপার্টমেন্ট, মেকআপ ডিপার্টমেন্টকে ধন্যবাদ দিতে চাই।”
অর্পিতার সঙ্গে বহু বছর পরে কাজ করলেন শাশ্বত। সে প্রসঙ্গে তিনি বললেন, “অর্পিতার প্রথম ছবি, ‘তুমি এলে তাই’, প্রভাত রায়ের পরিচালনায়, সেখানে ওর অপোজিটে লাভ ইন্টারেস্ট আমি ছিলাম। আবার এত বছর বাদে কাজ করলাম। আমাদের দেখাশোনা হতেই থাকে, এইটুকু তো ইন্ডাস্ট্রি। অর্পিতার অসম্ভব প্যাশন। সে কারণেই আবার থিয়েটারে ব্যাক করল।”
এই ছবি কি রাজনৈতিক? প্রযোজক দেব উত্তর দিলেন, “এটা পুরোপুরি পলিটিক্যাল ছবি নয়। যেমন হীরক রাজার দেশে, গুপী গাইন ছিল, বাচ্চাদের ছবি, ফেয়ারিটেল। কিন্তু হালকা পলিটিক্যাল স্যাটায়ার থাকতেই পারে। কিন্তু সেটা কাউকে ছোট বা বড় করার জন্য নয়। এটা পুরো মজার জন্য। বড়রা যারা রিলেট করতে পারেন, তাঁরাও যেন আসেন, তার জন্য। অন্যরাও যেন রূপকথা নিয়ে গল্প তৈরির সাহস পায়।”
প্রযোজক দেবের সঙ্গে কাজ করে কেমন লাগল শাশ্বতর? অভিনেতা হেসে বললেন, “দেব প্রোডাকশন বয় হিসেবে ছিল। প্রোডিউসার হিসেবে ছিল না। সারাদিন শুটিংয়ে বসে থাকছে। নিজেই চেয়ার, টেবিল সরিয়ে দিচ্ছে। প্রপস ঠিক করে দিচ্ছে। এতটাই প্যাশনেট ছিল।”
এই ছবিতে প্রয়াত অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের কণ্ঠ ব্যবহৃত হয়েছে। তিনি ছবিটা দেখে যেতে পারলেন না, সে আফসোসের কথা জানালেন দেব এবং শাশ্বত। তবে এই ছবির সঙ্গে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের পারফরম্যান্স জড়িয়ে থাকল, এতে আপ্লুত তাঁরা। একদিকে তাঁর প্রযোজনায় এই ছবিটি, অন্যদিকে দেবের অভিনীত ‘গোলন্দাজ’ ছবি মুক্তি পাচ্ছে একই দিনে। কিন্তু প্রযোজক এবং অভিনেতা সত্ত্বার কোনও বিরোধ নেই। বাংলা ছবির দর্শকের কাছে দেবের অনুরোধ, যে ছবি ভাল লাগে সেটাই দেখুন। কিন্তু সিনেমা হলে গিয়ে সিনেমা দেখুন।
আরও পড়ুন, Kajol and Ajay Devgn: অজয় এবং কাজলের কত কোটি টাকার সম্পত্তি রয়েছে জানেন?